তুমি অন্য কারো সঙ্গে বেঁধো_ঘর (৩৭)
হঠাৎ করেই যেনো শীতের প্রকোপ বেড়ে গেলো। যদিও গ্রামের তুলনায় শহরে শীত কম তারপরেও নবনীর মনে হলো বেশ ভালোই শীত পড়ছে।
আশেপাশের সব গাছের পাতা ঝরে পড়ে গেছে।এক বুক শূন্যতা নিয়েই শীত এসে হানা দিয়েছে প্রকৃতিতে।অথচ এই শীতেই আবার আমাদের দিয়ে যায় নানারকম ফসল।
শুক্রবারের এক কুয়াশাজড়ানো সাতসকাল।নবনী গায়ে একটা বেগুনি রঙের কার্ডিগান আর গলায় মাফলার পেঁচিয়ে বসে আছে চেয়ারে।বাহিরে এখনো কুয়াশা।নবনীর ইচ্ছে হলো এই কুয়াশাজড়ানো সকাল বেলায় প্রিয় মানুষের সাথে ব্যস্ত শহরের এই নিস্তব্ধ পথে,অলিতে-গলিতে একটু হেঁটে বেড়াতে।নবনীর অনেক কিছুই ইচ্ছে করে। কিশোরী মেয়েদের মতো ফুসকা খেতে গিয়ে ভালোবাসার মানুষের সাথে একটু ঢং করতেও মন চায় আজকাল।ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে চা খেতে ইচ্ছে করে। শাড়ি পরে ঘুরতে ইচ্ছে করে।
কি যন্ত্রণা!
এই বয়সে এসব মানায় না নবনী জানে।কিন্তু নবনীর মন তা বুঝতে চায় না।প্রেমের প্রতিটি মুহুর্ত বেহায়ার মতো উপভোগ করতে ইচ্ছে করে নবনীর।
মেঘ যখন রাতে বাসার নিচে এসে কল দিয়ে বলে, “কি সুন্দর চাঁদনী রাত দেখলে,এই রাতে যদি জোছনা বিলাস না করি একেবারে ৩০২ ধারার অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। একটা সাদা রঙের শাড়ী পরে জলদি বের হয়ে আসো।আজ আমি চাঁদের জোছনা দেখবো আর চাঁদকে আমার চাঁদের জোছনা দেখাবো।”
নবনীর তখন হার্টবিট বেড়ে যায়,থরথর করে সারা শরীর কাঁপতে থাকে। বুক ধড়ফড় করে।মনে হয় এর চাইতে মধুর কথা,মধুর অনুভূতি বুঝি আর নেই।
কিন্তু নবনী যায় না।এখন পর্যন্ত মেঘের সাথে আলাদাভাবে কোথাও ঘুরতে যায় নি নবনী। মেঘের অনুরোধ অগ্রাহ্য করে। এসব ব্যাপার নবনী এখনো হজম করতে পারে না। এখনো বড্ড ভীতু রয়ে গেছে সে।
নবনী নিজেকে সামলে রাখে,নিজের মনের নিষিদ্ধ ইচ্ছের লাগাম টানে।
মেঘকে কখনো ঘুণাক্ষরেও টের পেতে দেয় না তার এসব ইচ্ছের কথা।একে তো নাচুনে বুড়ী, তার উপরে নবনী ঢোলের বারি দিয়ে মেঘকে উসকে দিতে চায় না মোটেও।
রাবেয়া বেগম নবনীর জন্য লেবু দিয়ে এক কাপ চা নিয়ে এলেন।
এলোমেলো লম্বা চুলে,গলায় মাফলার পেঁচানো,চোখের নিচে কালি পড়ে যাওয়া মেয়েটাকে দেখে তার মনে হচ্ছে কোনো অচিনপুরের রাজকন্যা বুঝি ভুল করে তার ঘরে চলে এসেছে। গরীব ঘরে রূপ নিয়ে জন্ম নেওয়া কন্যারা বাবা মায়ের দুশ্চিন্তার কারণ হয়।অথচ আল্লাহ তার তিন মেয়েকেই অত্যন্ত রূপ দিয়ে পাঠিয়েছে।
নবনী চা খেতে খেতে বললো, “বাবা কই মা?”
“নামাজ পইড়া তো এখনো আসলো না। কে জানে,হাটতেছে হয়তো একটু।”
ভাইবোন সবাই নিজেদের রুম থেকে বের হয়ে এলো। রাবেয়া বেগম সবার জন্য চা বিস্কিট নিয়ে এলেন।শুক্রবার দিনটা সবার জন্য মিলনমেলার মতো হয়।নবনীকে যেহেতু শুক্রবার ছাড়া ফ্রি পাওয়া যায় না তাই বাকি তিন ভাইবোন অপেক্ষায় থাকে শুক্রবারের। বিশেষ করে সাব্বির বেশি অপেক্ষায় থাকে। বড় বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা একটু বাড়াবাড়ি পর্যায়ের।
ফাল্গুনী বললো, “মা,আজকে আমরা সবাই মিলে বাহিরে খেতে যাবো দুপুরে।রেডি থেকো সময় মতো। “
নবনী ঠোঁট বাঁকিয়ে তাকালো।চৈতালী বললো, “তুমি এভাবে তাকাচ্ছো কেনো?তুমি তো ইজি কাজে বিজি থাকো,ভাইয়া আমাদের নিয়ে যাবে বলছে।মা বাবা আমরা সবাই।তোমার কথা ভাইয়া বলে নি যদিও,তবুও তোমাকে আমরা নিবো।বাসায় বসে বসে তুমি আমাদের খাবারের কথা ভেবে নয়তো কষ্ট পাবে।”
নবনী জিজ্ঞেস করলো, “সাব্বির নিবে?”
ফাল্গুনী বললো, “দূর,সাব্বির ভাইয়া না।ভাইয়া একটা ঢেড়স।আমাদের কোথাও নিতে চায় না।কিছু বললেই বলে, বড় আপাকে আগে জিজ্ঞেস করে অনুমতি নে।আপা বকবে।”
নবনী চোখ রাঙিয়ে বললো, “তোদের মতো না-কি? ও তো আমাকে ভালোবাসে,তোরা দুজন তো বাসিস না।”
দুই বোন হেসে বললো, “আমরা ভাইয়াকে ভালোবাসি,ভাইয়া তোমাকে ভালোবাসে।তো সেই হিসেবে আমরা ও তোমাকে ভালোবাসি।”
রাবেয়া বেগম রান্নাঘর থেকে শুনছেন মেয়েদের কথাবার্তা।আপন মনে হাসছেন তিনি এসব শুনে।হাশেম আলী এলেন দুইটা কাগজের ঠোঙ্গা হাতে নিয়ে। ভিতরে গরম গরম ভাঁপা পিঠা,চিতুই পিঠা,ভর্তা।
ভাইবোন সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লো পিঠার উপর। হাশেম আলী ব্যস্ত হয়ে বললেন,”আরে তোরা থাম,এখনই খাচ্ছিস যে সবাই।মেঘ বাবাজি আসতেছে।ও আসলে সবাই মিলে খাবো আমরা। “
মুহুর্তেই সবাই পিঠা রেখে দিলো নবনী ছাড়া। চৈতালী বললো, “আপা কি ছোঁচা রে,এখনই খেয়ে নিচ্ছে।তর সইছে না আপার।”
নবনী কিছুটা লজ্জা পেলো যেনো। তবুও প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে খেতে লাগলো। মেঘ এসে হাজির ১০ মিনিটের মাথায়। হাতে নিয়ে মিষ্টির প্যাকেট, ফলমূল।
রাবেয়া বেগম টেবিলে পিঠা সাজিয়ে দিয়ে রান্নাঘর থেকে পরোটা,ডিম ভাজা,নুডলস নিয়ে এলেন।
নবনী অবাক হয়ে তাকিয়ে মা’কে জিজ্ঞেস করলো, “তোমরা সবাই জানতে উনি আসবে যে সকালে?এজন্য এসব করে রেখেছ,অথচ আমাকে কেউ বলার প্রয়োজন ও মনে করে নি। “
মেঘ পিঠায় ভর্তা মাখাতে মাখাতে বললো, “তোমাকে কেনো বলবে?তুমি যেনো সংসদের স্পিকার যে কোনো কাজে তোমার সংসদে বিল উপস্থাপন করতে হবে?
আর এমন ভাব করছো যেনো তোমাকে দেখতে আসছি আমি!
আমি এসেছি আমার রসগোল্লার মতো মিষ্টি দুটো বোনের কাছে।ওদের দেখি না কতোদিন। তাই ওদের সাথে সময় কাটাতে এসেছি। এখানে তোমাকে বলতে হবে কেনো?”
নবনীর রাগ হলো মেঘের এরকম নির্লিপ্ত কথা শুনে।ঠোঁট বাঁকিয়ে বললো, “বেশ তো।”
নবনীর ফুলানো নাকের দিকে তাকিয়ে সবাই হেসে ফেললো। নবনী কপট অভিমান করে চলে গেলো নিজের রুমে।
একটু সময় পরে নবনী শুনতে পেলো বাহিরে তুমুল হইচই হচ্ছে,মেঘ,সাব্বির,ফাল্গুনী,চৈতালী সবাই মিলে চিৎকার করছে একটু পর পর।নবনী নিজের কৌতূহল চেপে রাখতে পারলো না আর।দরজা খুলে বের হয়ে এলো। দেখে সবাই মাথা এক করে বসে আছে। এগিয়ে গিয়ে দেখে লুডু খেলছে সবাই মিলে।
নবনীর হঠাৎ করেই ভীষণ ভালো লাগলো। এরকম একজন মানুষ সব মেয়েই কামনা করে জীবন সঙ্গী হিসেবে যে মেয়েটার সাথেসাথে মেয়েটার পরিবারের মানুষদের ও আপন করে নিবে।
নবনীর মনে পড়ে যায় তামিম কখনো ফাল্গুনী চৈতালীর সাথে খুব একটা কথা বলতো না।সাব্বিরের সাথে ও না।একটা আলাদা গাম্ভীর্যের মুখোশ পরে থাকতো ওদের দেখলে।ওরা সবাই তামিমকে দুলাভাই ডাকতো সামনাসামনি। আর পেছনে বলতো আপার বর।
অথচ মেঘকে ওরা শুরু থেকেই ভাইয়া বলে। সম্পর্কের এই ছোট ছোট যত্ন,মানুষকে ভীষণ আনন্দিত করে তোলে।সম্মান বেড়ে যায় বিপরীতে থাকা মানুষটার প্রতি।
রাবেয়া বেগম চেয়ারে বসে স্মৃতিচারণ করছেন।সেই কবে গ্রাম থেকে এসেছেন। গ্রামে থাকা মানুষ শহরে এসে যতই আরামে থাকুক,গ্রামের জন্য মন পোড়েই তার।আহা,এরকম সময়ে তো ছেলেমেয়েদের চুলার পাশে বসিয়ে রাতের বেলা পিঠা বানিয়ে খেতেন সবাই মিলে।সকালে গাছের তাজা রস আনতো হাশেম আলী। ছেলেমেয়েরা কাঁচা রস খাওয়ার জন্য কাড়াকাড়ি করতো।
কি মধুর সেসব দিন ছিলো!
আর কবে যাওয়া হবে গ্রামে?
কে জানে?
লুবনার বিয়ে উপলক্ষ্যে ভীষণ তোড়জোড় চলছে।তাহেরা বেগম ভীষণ আগ্রহ নিয়ে সবাইকে কার্ড পাঠাচ্ছেন।বারবার অনুরোধ করছেন সবাইকে বিয়েতে আসার জন্য। মনের মধ্যে একটা সুপ্ত অহংকার জন্মেছে তাহেরা বেগমের। যেনো সবাইকে দেখাতে চায় মেয়েকে কেমন ভালো জায়গায় বিয়ে দিচ্ছে।দেখুক সবাই,কয় জন পারে এতো বড় ঘরে মেয়ে বিয়ে দিতে!
কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের আয়োজন করা হলো। বিয়েতে পাত্রপক্ষ লুবনাকে বারোভরি ওজনের গহনা দিলো।যারমধ্যে গলার হারের ওজন পাঁচ ভরি।
তাহেরা বেগমের বুক ভরে গেলো গর্বে।আত্মীয় স্বজন সবাইকে ফিসফিস করে বলতে লাগলেন,”দুবাইয়ের সোনা এগুলো। একেবারে ২২ ক্যারেটের খাঁটি সোনা বুঝলেন।মেয়ের আমার রাজকপাল।নয়তো এরকম বড় ঘরে আমাদের আত্মীয় স্বজন কেউ মেয়ে বিয়ে দিতে পেরেছে না-কি?
অহংকার করে বলছি না,তবুও দেখেন না।”
একজন বললো, “জামাইয়ের বয়স একটু বেশি মনে হচ্ছে। মাথায় চুল ও মনে হয় তেমন নেই।”
তাহেরা বেগম ছ্যাৎ করে উঠে বললেন,”না না,বয়স ঠিকই আছে।তাছাড়া চুল ও আছে আমি নিজে দেখেছি। “
বিয়ে হয়ে গেলো কোনো ঝামেলা ছাড়াই।তাহেরা বেগম স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন। এতো দিনে নিশ্চিন্ত হয়েছেন ভেবে স্বস্তি পেলেন। অথচ তিনি যদি জানতেন এর ভেতরে কতো অজানা রহস্য রয়ে গেছে তবে নাকের জল আর চোখের জল এক করে ফেলতেন।
ফয়সাল চেম্বারে বসে রোগী দেখছে। হঠাৎ করেই কল এলো হাসপাতালে একজন পেশেন্ট এসেছে। ইমার্জেন্সি যেতে হবে।এসিস্ট্যান্টকে বাকিদের ফি ফেরত দিয়ে দিতে বলে ফয়সাল উঠে চলে গেলো হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।
নিতু শুয়ে আছে হাসপাতালের বেডে।স্যালাইন দেওয়া হাতে।ফয়সাল একটা ইনজেকশন পুশ করতে করতে বললো, “প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষ যখন বাচ্চাদের মতো কাজ করে তখন তাকে আসলে কিভাবে বুঝানো যায় আমার জানা নেই।আপনি আমার আপন কেউ হলে অন্তত পক্ষে দুটো থাপ্পড় উপহার পেতেন।”
নিতু বাহিরের দিকে তাকিয়ে বললো, ” জীবনে বেঁচে থাকার জন্য, স্বপ্ন দেখার জন্য যখন সব দুয়ার বন্ধ হয়ে যায় ডাক্তার মানুষ তখন কি নিয়ে বাঁচে?
বাঁচতে হলেও ত একটা অবলম্বন চাই।”
ফয়সালের হাসি পেলো শুনে।তবে সে কিভাবে বেঁচে আছে? কেউ কি জানে সেটা?
ফয়সাল হেসে বললো, “নিজের বেঁচে থাকার জন্য নিজেকেই দুয়ার খুঁজে নিতে হয়।আচ্ছা এটা বলুন,কয়টা খেয়েছেন?”
নিতু হেসে ফেললো এই প্রশ্ন শুনে।তারপর বললো, “মরতে তো চাই নি।নিজের কষ্টটা সাময়িক সময়ের জন্য অসহ্য হয়ে গেছিলো। তার থেকে কিছু সময়ের জন্য মুক্তি পেতে চেয়েছি।মাত্র ৩ টি ট্যাবলেট খেয়েছি। “
ফয়সাল হেসে বললো, “আপনার আব্বা আম্মা তো বললেন দুই পাতা খেয়ে নিয়েছেন। “
নিতু বললো, “না না,দুই পাতা থেকে বিশটা ঔষধ বের করেছি ঠিকই। বাকি ১৭ টা ফেলে দিয়েছি।সাহস হয় নি।”
ফয়সাল চেয়ার টেনে বসলো বেডের পাশে। তারপর বললো, “এই সময়ে মানুষ চায় হাজার বছর বাঁচতে। নিজের যতই কষ্ট থাকুক,নতুন যেই অতিথি আসছে তাকে পৃথিবীর আলো দেখাতে,তার মুখ থেকে মা ডাক শুনতে মানুষ হাজার বছর বাঁচার ইচ্ছে পোষণ করে। আপনার বেঁচে থাকার স্বপ্ন তো আপনার মাঝেই আছে।”
নিতুর কপালে ঘাম জমতে শুরু করলো, বিড়বিড় করে বললো, “ও স্বপ্ন নয় ডাক্তার, ও দুঃস্বপ্ন আমার। ওকে আমি এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর নিষ্ঠুরতা দেখাতে চাই না।আমি এতো শক্ত মনের মানুষ হয়েও ভেঙে পড়েছি,ও কিভাবে টিকে থাকবে।আমি চাই ও এসব যন্ত্রণা ভোগ না করুক।
ও যখন জানবে ওর বাবা ওকে নিজের সন্তান বলে স্বীকার করে না তখন ও কিভাবে সহ্য করবে।আমি চাই না।আমি কিছুতে চাই না এরকম কিছু হোক ডাক্তার। আমি সব ভেঙে ফেলবো। খুন করে ফেলবো সবাইকে।”
নিতু হঠাৎ করেই ভীষণ উগ্র হয়ে গেলো। টান দিয়ে স্যালাইনের তার খুলে ফেললো। চিৎকার করে বলতে লাগলো, “ও আমায় ভালোবাসে নি ডাক্তার। ও আমাকে ঠকিয়েছে।আমার ভালোবাসার সাথে প্রতারণা করেছে।আমার বাচ্চাকে ঠকিয়েছে।আমি তাকে ঘৃণা করি ডাক্তার। তবুও কেনো ওকে ভুলতে পারি না।আমি মরে যেতে চাই।মরে যেতে চাই।আমাকে ভালোবাসার কেউ নেই আর।আমার কথা শোনার কেউ নেই ডাক্তার। “
ফয়সাল শক্ত হাতে নিতুর দুই হাত চেপে ধরে রাখলো। জোর করে নিতুকে শুইয়ে দিলো। তারপর নিতুর সাথে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগলো।ভরসা দিয়ে বললো, “আপনি আগে শান্ত হয়ে শুয়ে থাকুন প্লিজ। আপনার সব অভিযোগ আমি শুনবো। আমি আছি আপনার সব কথা শোনার জন্য। “
হাঁপাতে হাঁপাতে নিতু ঘুমিয়ে গেলো ফয়সালের হাতের আঙুল ধরেই।
ফয়সালের মনে হলো এই মেয়েটার মানসিক অবস্থা খুব একটা ভালো নেই। কাউকে প্রচন্ডভাবে ভালোবেসে মেয়েটা ঠকে গেছে। সেই শোক সামলাতে না পেরে এরকম পাগলামি করছে।
বুক পকেট থেকে একটা স্ট্যাম্প সাইজের সাদাকালো ছবি বের করলো ফয়সাল। নির্নিমেষ ছবির সেই যুবতীর দিকে তাকিয়ে বললো, “এতো অদ্ভুত কেনো ভালোবাসা! কাউকে বানিয়ে দেয় এরকম পাগল, আর কাউকে করে দেয় আমার মতো অনুভূতিহীন।”
চলবে……
রাজিয়া রহমান