#পঞ্চদশ_প্রহর
#Yasira_Abisha (#FATHA)
আমার ভালোবাসার মানুষটা ডিভোর্সড। কথাটা তার মুখে শুনে আমি কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। একটা পুরুষ কতটা সুদর্শন হতে পারে সেটা তাকে না দেখলে আসলে কেউ বুঝতে পারবে না। এমন একটা লোকের রূপ দেখেই তো সারাটা জীবন কাটিয়ে দেওয়া যায়। আর যদি তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথায় আসি? সেদিক থেকেও উনি সর্বসেরা। মানুষের কেয়ার করা উনার থেকে শিখা যাবে, যে কারো কষ্টে উনি যেভাবে এগিয়ে আসে, যতটা সাহায্য করে এমন আমি খুব কম মানুষকে দেখেছি। অন্যের সমস্যা শুনে তা কি সুন্দর করে এই মানুষটা সমাধান করে দেয়। সবার প্রতি কতো খেয়াল এই মানুষটার। সবাইকে বুঝে, না বুঝলেও চেষ্টা করে বুঝার। নিজেকে আড়ালে রেখেও সবার মনে একটা স্থান সে নিজেই বানিয়ে ফেলে। নিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দ্বারা, নিজের অসম্ভব সুন্দর রূপ দিয়ে।
আর উনার সাথে নাকি আন্ডারস্ট্যান্ডিং প্রব্লেমের জন্য মেয়েটার সাথে ডিভোর্স হয়ে গেছে। শুনে খুব বেশি অবাক হলাম। আমি মেয়েটাকে হয়তো চিনি না, তার সাইড থেকে জানিনা কি হয়েছিলো কিন্তু এতোটুকু বলতে পারি, যে ভুল করেছিলো। যাই হয়েছিলো তাদের মধ্যে। এইজন্য এইরকম একটা মানুষকে ডিভোর্স দেওয়া ঠিক হয় নি। তার সাথে থাকলে সময়টা এতো উপভোগ করি আমি, মেয়েটার মনে কি এরকম অনুভূতি হয় নি কোনো দিন? সে কিভাবে পারলো এই মানুষটাকে ফেলে থাকতে? আমিতো মাত্র ২দিনেই তার সাথে থেকে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। যখন কাল আমরা হাসবেন্ড ওয়াইফ বলে হোটেলে উঠলাম। সেই সময়ের অনুভূতিটা খুব অন্যরকম ছিলো। আজ তার বন্ধুদের এসে আমাকে ভাবী বলে সম্ভোধন করা। সবটা আমার মনে দাগ কেটে রেখে গেছে। মনে হচ্ছে এইগুলো যদি সত্যি হয়ে যেতো? কেউ যদি আমায় জিজ্ঞেস করতো
“রুহি তুমি এই দুনিয়ার সব সুখ নিবে? নাকি ইরাদকে নিবে? “
আমি চোখ বুঝে সারাটা জীবনের জন্য উনার হাতটা নিজের হাতের সাথে শক্ত করে ধরে রাখতাম। আর বলতাম, আমি দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সুখ আজকে নিজের হাতের সাথে নিয়ে নিয়েছি। এই মানুষটা আমায় সবচেয়ে সুখী করতে পারবে, কারণ আমি যে তার সাথে সবটা মুহুর্ত কাটাতেই ভালোবাসি। তার সাথে আমি জ্বরের তিতা ঔষধটাও হাসি মুখে উপভোগ করতে পারি। সে যে আমার ভালো থাকার ঔষধ। সে যে আমার চোখের প্রশান্তি। সে যে আমার ভালোবাসা বাচিয়ে রাখার অক্সিজেন। তাকে আমি খুব করে চাই।
“ডক্টর ইরাদ আমি তোমায় খুব খুব করে ভালোবাসি। তুমি কোনোদিন বুঝবে কি? আমায় কেনো বুঝো না? তোমায় যদি নিজেকে উজাড় করে ভালোবাসতে চাই সেটা কি আমায় দিবে? “
ইরাদ এখন একা এটা রুহিকে খুশি করে দিয়েছে, আগে বিয়ে হয়েছে এই নিয়ে রুহির কোনো মাথা ব্যাথা নেই। জীবনে কিছু আকাস্মিক দুর্ঘটনা মানুষের ঘটতেই পারে। তাই বলে তো জীবনটা থেমে যায় না। নতুন করে আবার রঙিন করে সাজাতে হয়।
রুহি এসব কিছুই ভাবছিলো ইরাদ স্থিরভাবে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে, মেঘার কথা তুললে ওর খুব খারাপ লাগে। জীবনের এই রকম পরিনতি ইরাদ চায় নি। ও চাইতো একসাথে সুখের একটা সংসার হবে। যেখানে থাকবে অনেক ভালোবাসা আর সম্মান। ছোট একটা দুনিয়া হবে ওর আর মেঘার। কিন্তু ভাগ্যে হয়তো এটা লিখা ছিলো না, তাই তো ইরাদের শাস্তি পেতে হয়েছিলো একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্মগ্রহণ করার। সে মেঘাকে দিতে পারে নি অতটা সুখ, সেই জীবনটা যে জীবন মাহিরা বাবার ফ্যামিলিতে পাড় করে আসছিলো তাই তো ইরাদকে রেখে সে চলে যায়। তারপর থেকেই ক্যারিয়ারটা সব হয়ে যায় ইরাদের জন্য। আজকে ইরাদের কোটি কোটি টাকা আছে। সব কিছুই তো আছে কিন্তু ওই যে একটা শুন্যতা। নিজের ভালোবাসার মানুষকে না পাওয়ার শুন্যতা।, ভেতরের এই চাপা কষ্টটা কিভাবে দূর করবে ও?একটা দুইটা দিন তো না, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সে একা। ছাত্র জীবনে সে মাহিরার কথায়ই তাকে বিয়ে করে, একটা সুন্দর সংসার হওয়ার জায়গায় সে পায় দুঃখ আর দুর্দশা। যা এই মনটাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে। তারপর থেকে কোনোদিন ইরাদ শান্তি পায় নি, ভালোবাসা পায়নি। আজকাল রুহিকে দেখে সে এখন একটা প্রশান্তি পায়, মেয়েটার মায়াবী মুখ তাকে টানে নিজের দিকে। মনের সব ভার মনে হয় নিমিষেই দূর হয়ে যায় কিন্তু যখন পুরোনো কথা গুলো যখন ভাবে তখন খুব এলোমেলো হয়ে যায় ইরাদ। তাই তো কোনো মেয়ে মানুষের সাথে এতো গুলো বছরে সে আর মেশার চেষ্টা করে নি। ইরাদের চোখে শুন্যতা। পরিবেশটা থমথমে হয়ে গেছে। রুহি ধ্যানে চলে গেছে। কিছুক্ষণ পরে ইরাদকে রুহি প্রশ্ন করলো,
– আপনার সাথেও কারো আন্ডারস্ট্যান্ডিং প্রব্লেম হতে পারে?
ইরাদ রুহির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে,
– পারে না কেনো?
রুহি ইরাদের চোখে চোখ রেখে ধীর গলায় বলে,
– এমন স্বামী পাওয়া যে কারো দূর্লভ স্বপ্ন ও হতে পারে, তা হয়তো আপনার জানা নেই।
রুহির কথায় ইরাদ চমকে উঠে,
প্রশ্ন নিয়ে রুহির দিকে তাকায়, তখন রুহি কথা ঘুরিয়ে বলে,
– মানে হ্যান্ডসাম, এস্টাবলিষ্ট ছেলেই তো সবাই চায় তাই বললাম।
– রুহি, আমি খুব সাধারণ একটা পরিবারের ছেলে ছিলাম। যখন বিয়ে করি তখন মাত্র ২ন্ড ইয়ারে পড়তাম, প্রেমের বিয়ে ছিলো আর আমার ফ্যামিলির আর্নিং সোর্স ছিলেন শুধু মাত্র বাবা। সংসার চালিয়ে আমাদের তিন ভাই বোনের পড়াশোনা করিয়ে খুব হিসেব কোষেই চলতে হতো। সে সময়টা আজকের ইরাদ ছিলাম না। আর ফিনানশিয়ালি যদি একজন পুরুষ সক্ষম নাহয় তার সাথে দন্দ হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না।
– ভালোবাসা থাকলে তো গাছতলায় ও থাকা যায়।
– নাহ যায় না।
– আমার এক ফ্রেন্ড জানেন বিয়ে করেছে আরো ৩ বছর আগে এখনো ভাইয়ার সাথেই আছে ওদের প্রেমের বিয়ে, প্রথমে বাসা থেকে মানেনি কারণ ওদের বাবারা বিজনেস পার্টনার ছিলো কিন্তু পরে ঠিকি মেনে নিয়েছিলেন।
– হ্যাঁ মানে আর একসাথে থাকেও বটে কিন্তু সেজন্য হলেও দু’জনের পারিবারিক স্ট্যাটাস সিমিলার হতে হয়। নাহয় যে এডজাস্ট করা বড়ই কঠিন। ভুলটা আমি করেছিলাম।
ইরাদ কথা গুলো বলছে বাইরের দিকেই তাকিয়ে, তার চোখ মুখ কেমন বিষন্নতায় ছেয়ে গেছে। বুঝা যাচ্ছে, ইরাদ কষ্ট পায় এসব বলতে। এতো গুলো বছর সে একাই কাটিয়ে দিয়েছে, এতেই বুঝা যায় সে স্বাভাবিক হতে পারেনি, সব ভুলে আগে বাড়তে পারেনি। তবে ইরাদের মনটা হালকা করা দরকার ওর অনুভুতি গুলো বাইরে নিয়ে আসা দরকার, রুহি জানে এসব প্রশ্ন করলে ইরাদ কষ্ট পাবে তারপরেও ও আবারো ইচ্ছে করে জিজ্ঞেস করলো,
-বিয়ে করেন নি এইজন্যই?
– ইচ্ছে করে নি আর।
– এখনো ভালোবাসেন?
এবার ইরাদ রুহির দিকে তাকিয়ে চোখে চোখ রেখে বললো,
– নাহ, এখন আর ভালোবাসি না। তার জন্য বিয়ে করিনি এমন কিছু ও না, নিজেকে সামলে নিয়েছি অনেক আগেই। তার প্রতি এখন ভালোবাসার মতো কোনো অনুভুতি কাজ করে না। তবে, সে ভালো থাকুক নিজের বিবাহিত জীবনে আর দশটা কাপলের মতো এটাই চাই।
রুহি ইরাদের হাতটা ধরলো, এটা সহানুভূতি প্রদর্শন করে ধরা, একটা ভরসা দিয়ে স্পর্শ করা। এই প্রথম রুহি নিজে থেকে ইরাদকে স্পর্শ করলো।
তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলো, কিছু হয়তো আর বলার নেই এই রকম পরিস্থিতিতে।
আজ পর্যন্ত এই হাতটা ধরে কেউ আস্বস্ত করেনি ইরাদকে, কারণ ইরাদ কোনোদিন কাউকে এতোটা কাছে আসতে দেয়নি। মেঘা যাওয়ার পরে একা একা খুব কাদতো ও, কত শত রাত না ঘুমিয়ে ইরাদ পাড় করেছে। তখন ইচ্ছে করতো মেঘার কে দেখতে, ইরাদ তো মাহিরা কে অসম্ভব পরিমাণে ভালোবাসতো। মেয়েটা ওর জীবনে ছেয়ে গিয়েছিলো, তারপর এক ঝাটকায় ওকে ফেলে চলে গিয়েছিলো। যাকে নিজের পুরো জীবনের সাথী ভেবে নেই আমরা এবং সে একটা ঝাটকার আমাদের হাওয়ার বেগের মতো করে ফেলে চলে যায় তখন নিজেকে সামলে নেওয়া অনেক কষ্টকর। একটা দুইটা না ইরাদের পুরো ৬ বছর লেগেছিলো কিছুটা স্বাভাবিক হতে। মাহিরা যাওয়ার পর থেকেই যেনো রাত জাগার একটা অভ্যাস এসে ঘিরে ধরেছিলো ওকে। এইতো দু’দিন হলো ব্যাস্ততম দিন থেকে ইরাদ ছুটি নিয়েছে তবুও তার রাতে ঘুম নেই। ঘুম এখন খুব কমে গেছে, কাজের ফাকে ঘুমানোর সময়ই বা কোথায় পায় ও? আজ বিকেলে ইরাদ যখন বেড় হয়েছিলো তখন নিচে থেকেই আরিফকে ফোন করে বলে দিলো ডক্টর তাহেরকে যেনো একটু কল দিয়ে বলে সে এই সপ্তাহে ক্লাস নিতে পারবে না কারণ ঢাকার বাইরে আছে। রুহি অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাই ইরাদ ভাবছে ও একটু সুস্থ হলে বাসায় দিয়ে আসবে ২-১ দিন ঘুরে এসে তারপর নাহয় ক্লাস করতে পারবে। আর লাকিলি এই সপ্তাহে ইরাদের কোনো অপারেশন ডেইট নেই। তো সব মিলে ও নিজেও ফ্রী আছে। ঢাকা ফিরে বাসায় একটু বিশ্রাম নিবে ইরাদ।
ইরাদ এখন নিজের আগেই রুহি কে নিয়ে ভাবে। আসলে সবার আগেই রুহিকে নিয়ে ভাবে। এই বাচ্চা মেয়েটা এতো মায়ামাখা। যে রুহির মায়া কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না, তাই তো ইরাদ নিজেও জানে না কিন্তু ধীরে ধীরে তার প্রতি দূর্বলতা বেড়েই চলছে।
নিস্তব্ধতা ছেয়ে আছে পুরো পরিবেশে। পরিবেশটা হালকা করার জন্য রুহি বললো,
– কফি খুব পছন্দ করেন?
– খুব না। তবে অভ্যাস হয়ে গেছে।
– আমার এভারেজ লাগে। জানেন আমি খুব ভালো চা করতে পারি, খাবেন?
ইরাদ মুচকি হেসে বলে,
– আচ্ছা। এখন ভিতরে যাই?
– ঘুমাবেন?
– আপনি ঘুমাবেন
রুহি ঠোঁট ভেটকিয়ে বাচ্চাদের মতো বলে,
– না, খুব ঘুমিয়েছি। আর পারবো না।
– পারতে হবে, শরীর খারাপ হয়ে গেছে, এখন রেস্ট প্রয়োজন। মায়াবতী এই মেয়েটা ইরাদকে খুব করে ব্যাস্ত রাখছে দু’দিন ধরে মোবাইলটা যে কেনো নেটওয়ার্ক ধরছে না তা বুঝতেই পারছেনা ইরাদ। অথচ নিচে ফোন গুলো ঠিক ছিলো, থাক আপাতত হসপিটালের ক্লাসটা চিন্তার বিষয় ছিলো। ডক্টর তাহেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যাস আর ঝামেলা হবে না। রুহি খুব প্রশান্তি নিয়ে একটা ঘুম দিলো।
.
সকাল ৭টার দিকে মেঘার ঘুম ভেঙে গেলো। কিছুক্ষনের ভিতরে সে রেডি হয়ে গেলো, কেনো যেনো খুব অস্থির লাগছে আজকে তাই সে ভাবলো বাচ্চাকে স্কুলে দিতে যাবে নিজেই। এবং বাইরে গেলে হয়তো নিজের ও একটু ভালো লাগবে। হিমাকে স্কুলে দিয়ে একটা সুপারশপে ঢুকলো মেঘা আজ সে নীল একটা লনের ড্রেস পড়েছে। চোখে সানগ্লাস, পাম্প করা চুল খুব স্মার্ট দেখায় মেঘাকে। আগের মতোই আছে তার স্টাইল আছে। দূর থেকে নাদিম তাকে দেখে চিনতে দেরি হলো না। কাল রাতারগুলে ইরাদের সাথে আর সিলেট শহরে এসে আজ মেঘা সাথে দেখা হয়ে গেলো, খুব ভালো লাগলো।একে একে করে আগের বন্ধুদের খোঁজ পাওয়া যাবে এখানে তা তো ভাবতেই পারে নি নাদিম। সাথে ওর স্ত্রী আর সন্তান ও আছে, ছেলের আবদারেই সকাল সকাল ওরা বেড়িয়েছে আর এখানে এস্র মাহিরাকে দেখলো। নাদিম নিজে থেকে এগিয়ে এসে
– মেঘা না?
মেঘা সানগ্লাসটি মাথার ওপরে তুলে একবার মাথা থেকে পা পর্যন্ত নাদিমকে দেখে একটা স্মাইল দিয়ে বললো,
– নাদিম রাইট?
– ইয়েস
-কেমম আছিস? একদম হঠাৎ করেই কলেজ ছেড়ে দিলি। তারপর আর দেখা পাইনাই।
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো, বাংলাদেশে ছিলাম না রে। এরপর বিয়ে বাচ্চা সংসার নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছিলাম।
নাদিমের পাশে আফিয়া মেঘাকে দেখে স্মাইল করছে,
মেঘা- উনি কে? তোর ওয়াইফ?
– হ্যাঁ আর এই আমার দুষ্ট ছেলে।
– কেমন আছেন ভাবী?
– আলহামদুলিল্লাহ, আপনি?
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো। চলুন আপু ফুড কোর্টে বসি আমরা।
নাদিম- হ্যাঁ তোমরা বসো, আমি ছেলেকে একটু শপিং করে আসি
মেঘা আর আফিয়া ওপর তলার ফুড কোর্টে বসে আছে। টুকটাক সংসার নিয়ে কথা হওয়ার মাঝে আফিয়া বললো,
– জানেন আপু কাল আপনাদের আরেক ফ্রেন্ডের সাথেও আমাদের দেখা হলো। ভাইয়া কি যে ভালো।
– তাই? কার সাথে?
– হুম, ইরাদ ভাইয়ার সাথে।
মেঘা কিছুটা চমকে উঠে,
মএঘার চেহারা দেখে আফিয়া ভাবলো ও হয়তো চিনতে পারে নি।
– ডক্টর ইরাদ আপনাদের ক্লাসেই ছিলেন। সুন্দর লম্বা যে ছেলেটা উনিই।
– ওহ আচ্ছা।
মেঘার জানতে ইচ্ছা করছে ইরাদ ওখানে কেনো গিয়েছে তাই সে কৌশলে জিজ্ঞেস করলো,
– কোনো গেট টুগেদার ছিলো?
– না, আমরা ঘুরতে গিয়েছিলাম আর ভাইয়া নিজের ওয়াইফকে নিয়ে এসেছিলেন হানিমুনে। নতুন বিয়ে করেছেন তো। বউটা এতো সুন্দরী মাশাল্লাহ। জানেন আপু অনেকটা আপনার চেহারার সাথে মিল আছে।
মাহিরার মাথাটা একদম চক্কর দিয়ে উঠলো। আফিয়া এক ধ্যানে কথা গুলো বলছে, ভেবেছে মেঘা শুনে খুশি হবে।
– জানেন আপু ভাইয়া এতো ভালো একজন মানুষ। উনার আগে একটা বিয়ে হয়েছিলো, মেয়েটা উনাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো তারপর দীর্ঘদিন সে একা ছিলো শেষমেশ সে বিয়ে করেছে। আর পেয়েছেও একটা হুরের মতো বউ। মেয়েটা দেখতে যেমন ব্যাবহার ও তেমন। কাল নাদিমের মুখেই শুনলাম এসব কথা আর ও বললো, আগের বউটা খুব অহংকারী ছিলো। আমি সব মিলে খুব খুশি হয়েছি ইরাদ ভাইয়ার জন্য।
(চলবে…)