ফুলসজ্জা পর্ব ৩
লেখিকা:- #অনামিকা_ইসলাম “অন্তরা”
আবির নীলিমার থেকে চোখ ফিরিয়ে নিল। তারপর মণির দিকে তাকিয়ে গম্ভীর ভাব নিয়ে বলল_
” মণি! এখনো দাঁড়িয়ে আছ?
যাও…চালু করো।দেখি, সিসি টিভির ফুটেজ কি বলে….???”
মণি যাচ্ছি বলে হাসি চেপে এগিয়ে মিছেমিছি এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। হঠাৎ’ই পিছন থেকে ডাক দেয় নীলিমা। মণি পিছু ফিরে তাকায়। জিজ্ঞেস করে_
“কিছু বলবি?”
নীলিমা এক নিঃশ্বাসে এত্তগুলো কথা বলে ফেলে। নীলিমার ভাষ্যমতে__
” মণি!
আসলে কয়েকদিন যাবৎ লক্ষ্য করছিলাম রুমটা খুব অপরিষ্কার এবং নোংরা। তাই আজ যখন ওনি বাসা থেকে বের হয়ে গেল, ভাবলাম এই সুযোগে রুমটা পরিষ্কার করে নেওয়া যাক। পরিষ্কার করার জন্য রুমের সব জিনিসপত্র একসাথে জরোও করছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে ঘুম চলে আসে চোখে, সেই সাথে ক্লান্তিভাবটাও।তাই ভাবলাম একটু জিরিয়ে নেওয়া যাক।কিন্তু এভাবে ঘুমিয়ে যাব যে বুঝতে পারিনি।
তোরা যখন ডাক দিলি, তখন’ই জাগলাম।”
মণি “থ” হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ইমন মণির দিকে তাকিয়ে বলল_
” ব্যস! হয়ে গেল।
বোন আমার খাসা গল্প শুনিয়ে দিল।এরপর আর কষ্ট করে সিসি টিভির ফুটেজ চালু করার মানেই হয় না। কি বলেন আবির সাহেব?”
আবির-মণি দুজন তখন মুখ টিপে হাসছিল, ইমনের কথা শুনে আবির কোনোরকম হাসিটা চেপে উত্তর দিল__
“হ্যাঁ, সেটাই তো ইমন ভাই…”
ইমন:- তা মিসেস আবির!
আমাদের কি রাতভর এখানে এভাবেই দাঁড়িয়ে রাখবেন? কতদূর থেকে খুশির খবর শুনে এসেছি কয়েকদিন বেড়াবো বলে। বেড়ানোর স্বাদ যে প্রথম দিনেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।”
নীলিমা:- খুশির খবর?
সেটা আবার কি???
মণি:- ঐ যে ইমন মামা হতে চলেছে।
নীলিমা:- কি???
কার মামা???
কিসের মামা????
আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
মণি:- তুই এসব বুঝবি কিভাবে?
তুই তো ভেঁজা মাছটা উল্টে খেতেও জানিস না, থাক।
তোর বুঝে কাজ নেই। আবির ভাইয়া!
একটু এদিকে আসেন তো।
বজ্জাত মাইয়া তো কিছু বলবে না, আপনার থেকেই বরং শুনে নেই আপনাদের কাছে আসার ইতিহাস….!!!!
মণি-আবির-ইমন একসাথে রুমের বাহিরে চলে গেল।
নীলিমা কিছু বলতে যেয়েও পারল না। মণিকে রুমে রেখে তিনজন মিলে প্রায় মিনিট ত্রিশ হবে কিসব ফুসুর ফুসুর করল। তারপর একসঙ্গে রুমে প্রবেশ করল। নীলিমা ততক্ষণে রুমটা ঝাড়ু দিয়ে গুছিয়ে নিয়েছে। ওরা আসার সাথে সাথেই নীলিমা সোফার উপর ঝাড়ু রেখেই মণির কাছে ছুটে গেল। তারপর__
“মণি! শুন না..(…)….”
মণি:- চুপ, একদম চুপ!
আমি তোর কোনো কথায় শুনতে চাই না। যা শুনার শুনে নিয়েছি ভাইয়ার থেকে।
নীলিমা:- আমিও শুনাতে চাই না।
মণি:- তো..!!!
এভাবে ডাকছিস কেন???
নীলিমা:- ওনি তোদের কি বলছেন?
মণি:- সেটা তোকে বলতে যাব কেন?
ওনি আমাদের বিশ্বাস করে বলছে।সবকিছু খুলে বলছে। তা তোকে শুনাবো কেন???
নীলিমা:- সব মানে…???
ইমন:- সব মানে সব….
যা হয়ছে আর কি….(….)…..
নীলিমা:-
আবির:- নীলিমা! ওরা অনেক দুর থেকে জার্নি করে এসেছে। ওদের আগে বসতে তো দাও। আর কি রান্না করছ? খেতে দাও। খুব খিদে পেয়েছে…..
নীলিমা:- ঠিক আছে…..
ভাইয়া-মণি চল….
ইমন মণি নীলিমার পিছু পিছু নীলিমার রুমে ঢুকল।নীলিমা ওদেরকে নিজ রুমে রেস্ট নিতে বলে রান্না করে প্রবেশ করল। চুলোয় ভাত বসিয়ে চটজলদি তরকারী কুটতে লাগল নীলিমা। আবিরের এভাবে ফিরে আসা সাথে ইমন-মণির আগমন, সুখবর কিছুই যেন নীলিমার মাথায় ঢুকছে না। আনমনে ভাবতে ভাবতে ধারালো ছুড়িটা কখন যে আঙ্গুলে বিধে যায় সেটা টের’ই পায়নি নীলিমা। যখন টের পায় তখন আঙ্গুল থেকে অনেকটা রক্ত ঝরে যায়। ব্যথায় কুকিয়ে উঠে নীলিমা। আহ্ করে চিৎকার দেয়।
পাশেই ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে ঢুকছিল আবির।
প্রাণপাখি নীলিমার চাপা কান্না তার বুকে শিলের মত বিধে। ছুটে আসে ওয়াশরুম থেকে রান্নাঘরে।
নীলিমা তখন কাটা আঙ্গুল ধরে কান্না করছিল। আবির নীলিমার কাটা আঙ্গুল দেখে শিউরে উঠে।ছুটে যায় নীলিমার কাছে। চোখের সামনে নীলিমার এমন করুণ অবস্থা সহ্য করতে কষ্ট হচ্ছিল আবিরের। দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে আবির নীলিমার কাটা আঙ্গুলটা ধরে সেটা মুখে পুরে দেয়। শুষে নেয় নীলিমার আঙ্গুলের সবটা রক্ত। নীলিমা অবাক বিস্ময়ে আবিরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর আবির ছেড়ে দেয় নীলিমার হাত।
নীলিমা তখনও আবিরের দিকে সেভাবেই তাকিয়ে আছে।
আবির:- তোমাকে রান্না করতে কে বলছে???(জল ছলছল চোখে)
নীলিমা:- আসলে সকালে ছুটি দিয়ে দিছিলাম কাজের লোকদের। পরে আর রান্না করা হয়নি…
তাই ভাবছিলাম আমি’ই রান্না করি…
আবির:- মানে???
ছুটি দিয়েছ মানে? কিসের ছুটি দিয়েছ ওদের???
নীলিমা:- আপনি তো বিদেশ চলে যাবেন বলছেন, তাই… (…)….
আবির:- তাই আমার সাথে রাগ করে ওদের বিদায় করে দিয়েছ এই তো???
নীলিমা:- না, না…ঠিক তা না…
আমি তো…..(…)….
আবির:- ব্যস, এনাফ!
আর শুনতে চাই না। রুমে যাও….
নীলিমা:- কিন্তু….
আবির:- কোনো কিন্তু নাই।
তুমি রুমে গিয়ে রেস্ট নাও। রান্না’টা আমি দেখছি।
নীলিমা:- আপনি…(….)…..
আবির:- বললাম না রুমে যেতে। এক কথা আর কতবার বলব???(ধমকের স্বরে)
নীলিমা:- যাচ্ছি….(কাপা স্বরে)
নীলিমা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে শাঁড়িটা পাল্টে নিল। তারপর আবারো চলে আসল কিচেনে__
“আমি বলছিলাম কি আপনি তো…(…)….”
আবির:- তুমি আবারো এসেছ এখানে???তোমায় বলছি যে রুমে যাও সেটা কি তোমার কানে ঢুকেনি???
নীলিমা:- ঢুকছে।
আবার বেরও হয়ে গেছে।
আবির:- মানে???
নীলিমা:- মানে ওরা শুধু শুধু বসে আছে। আপনি গিয়ে বরং ওদের একটু সঙ্গ দেন আর মুড়ি-চানাচুর মেখে দিয়ে আসুন। আমি ততক্ষণে নুডলস রান্না করে ফেলি। মণি আবার নুডলস খুব পছন্দ করে।
আবির:- যা করার আমি করছি। তুমি বরং ওদেরকে গিয়ে মুড়ি চানাচুর মেখে দিয়ে আসো।
নীলিমা:- আমার হাত যে কেটে গেছে…..
আবির:- ওহ্…স্যরি। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
তুমি এখানে দাঁড়াও, আমি ওদের দিয়ে আসছি মুড়ি…..
আবির চলে গেলে নীলিমা তাড়াতাড়ি নুডলসটা রান্না করে ফেলে। আবির এসে দেখে নুডলস রান্না কমপ্লিট। নোডলসের বাটিটা নিয়ে যায় আবির রুমে। দিয়ে আসে মণিকে। মণি ততক্ষণে এক তরকারী চুলা থেকে উঠিয়ে আরেক তরকারী বসিয়ে দেয় চুলায়। এদিকে ভাত হয়ে যাওয়াতে ঐ চুলায় চাও বসিয়ে দেয়।
আবির এসে চা চুলায় দেখে বলে__
” বাব্বাহ! চাও বসিয়ে দিয়েছ?”
নীলিমা:- হুম। মণি তো নুডলস খাবে, চা’টা ইমন ভাইয়ার জন্য…..
আবির:- ওহ্, ইমন ভাইয়ার জন্য?
আমি তো ভাবছিলাম আমার জন্য….
নীলিমা:- ওহ্, আপনিও খাবেন?
দাঁড়ান দিচ্ছি….
আবির:- থাক…….
আমি না হয় না’ই বা খেলাম…
নীলিমা:- কেন???
আবির:- এমনি….
দাও। চা দাও। দিয়ে আসি….
নীলিমা চায়ের কাপটা আবিরের হাতে ধরিয়ে দিলে আবির চা’টা দিয়ে আসে ইমনকে। দিয়ে আর একমুহূর্ত দেরী নয়। আবার চলে আসে কিচেনে। আজ কেন যেন একমুহূর্তের জন্যও আবিরের মন চাচ্ছে না নীলিমাকে চোখের আড়াল করতে। চা দিয়ে এসে কিচেনের দরজার সামনে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে প্রাণের নীলিমাকে দেখছে। নীলিমা কি মনে করে যেন পিছু ফিরছিল। আবিরকে ঐভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে “থ” হয়ে যায়। কিছুক্ষণ আবিরের দিকে তাকিয়ে থেকে লজ্জায় চোখ ফিরিয়ে নিল নীলিমা। এলোমেলো শাঁড়ি দিয়ে শরীরটা ভালো করে তাড়াতাড়ি ঢেকে নেয় নীলিমা। তারপর__
” আপনি ওখানে দাঁড়িয়ে কেন? কিছু লাগবে?”
আবির:- হুম…..
নীলিমা:- কি লাগবে?
আবির:- তোমাকে……
নীলিমা:- কি???
আবির:- কিছু না। রান্না কতদুর???
নীলিমা:- এইতো প্রায় শেষের দিকে।
আপনি যান। আমি ৫মিনিটের ভিতর খাবার নিয়ে আসছি…..
আবির:- হেল্প করতে হবে???
নীলিমা :- না, আমি পারব…..
আবির:- ঠিক আছে। আসো তাহলে।আমি রুমে গেলাম…..
আবির রুমে চলে গেলে নীলিমা চুলা থেকে তরকারীর পাতিল উঠিয়ে চটজলদি কিচেন’টা গুছিয়ে নেয়। অতঃপর খাবার থরে বিথরে টেবিলে সাজিয়ে রেখে ইমন-মণিকে ডাকতে যায়। ইমন -মণি কিছুতেই খাবার খাওয়ার জন্য রাজি হচ্ছিল না, তথাপি নীলিমা একরকম জোর করে টেনে আনে ওদের। খাবার টেবিলে ওদের বসিয়ে ইচ্ছে মত নিয়ে খাওয়ার জন্য বলে আবিরকে ডাকার জন্য উপরে যায়। আবির তখন রুমের দরজা ক্ষাণিক’টা মিশিয়ে চেঞ্চ করছিল। নীলিমা ভাবল আবির হয়তো রুমে শুয়ে আছে তাই নক না করেই অকস্মাৎ রুমে প্রবেশ করে। অতঃপর নীলিমা ওর চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে।
আবির ড্রেস চেঞ্জ করে নীলিমার দিকে এগিয়ে আসে। তারপর___
” যা হবার তো হয়েই গেছে।
চোখ খুলুন ডাক্তার আপু……..”
নীলিমা ধীরে ধীরে চোখ খুলে।
লজ্জায় আবিরের দিকে তাকাতে পারছে না, তাই নিচের দিকে তাকিয়েই বলল___
” Sorry…..”
আবির:- কি হবে আর স্যরি বলে?
আমার তো সব শেষ হয়েই গেছে……
নীলিমা:- আমি আসলে বুঝতে পারিনি আপনি রুমে এভাবে…(….)…..
আবির:- বাদ দাও তো।
চলো…..খাবো……
নীলিমা মাথা নিচু করে আবিরের পিছুপিছু রুম থেকে বের হলো। আবির খাবার টেবিলে বসতে বসতে ইমন-মণির দিকে তাকালো।তারপর__
” কি হলো? ভাইয়া বসে আছেন যে?”
ইমন:- বোন-ভগ্নিপতির বাড়ি আসছি। ওদের রেখে খাই কি করে?
আবির বসা থেকে উঠে মণি ইমনের প্লেটে খাবার দিল। তারপর নিজের প্লেটে খাবার নিয়ে বলল__
” নাও মণি!
এবার তোমরা খাওয়া শুরু করো।”
নীলিমা মাথা নিচু করে ডাইনিং টেবিলের বেশ ক্ষাণিক’টা দুরে দাঁড়িয়ে আছে।
মণি:- তোর আবার কি হলো???
এভাবে মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে আছিস কেন???
নীলিমা:-……..
ইমন:- নীলিমা! তুইও বসে পর…
রাত তো প্রায় শেষের দিকে….
আবির:- মণি…
কথা না বলে চুপচাপ খেয়ে নাও। ভাইয়া ও আর কি খাবে???
ও তো খেয়ে নিয়েছে….
মণি:- সে কি?
কখন খেলো????
আবির:- এই তো একটু আগে রুমে।
মণি:- রুমে???
রুমে খাবার এলো কোথা থেকে???
রুমেও খাবার আছে???
আবির:- আছে…
স্পেশাল খাবার…….
মণি:- কিরে?
আমাদের রেখে স্পেশাল খাবার খেয়ে নিলি…???
তা স্পেশাল খাবারটা কি???
নীলিমা লজ্জায় পারছে না মাটির নিচে চলে যেতে।
ইমন:- আবির!
ও কি সত্যি’ই খেয়েছে নাকি তুমি মজা করতেছ???
আবির:- ভাইয়া মজা নয়।
ও খেয়েছে। কিভাবে বলব আপনাদের? ও খেয়েছে।
শুধু খায়নি। অনেক বেশী খেয়েছে। এতটাই বেশী খেয়েছে যে মিনিট দুয়েক চোখ বোজেও ছিল….
কি আমি কি মিথ্যে বলছি নীলিমা?
নীলিমা এতক্ষণে চোখ তুলে তাকায় আবিরের দিকে। আবির মুখ টিপে হাসছে তখন…….
আবির-নীলিমার এমন চোখাচোখি দেখে ইমন মণিকে ধাক্কা দিয়ে সে দৃশ্য দেখায়। মণি কিছুক্ষণ সে দৃশ্য অবলোকন করে একটা বার কয়েক শুকনো কাশি দিয়ে রসিকতার ছলে বলে__
“এখানে আপনারা ছাড়াও আরো জলজ্যান্ত দু’দুটো প্রাণী আছে ভাইয়া।”
আবির-নীলিমা একে অপরের দিক থেকে লজ্জায় চোখ ফিরিয়ে নেয়।
তারপর সবাই চুপচাপ খাওয়া শুরু করে। নীলিমা’কে আবির একটা বারের জন্যও বলেনি খেয়ে নাও কিংবা খেয়েছ???
নীলিমাও তাই খাইনি।
সবার খাওয়া শেষ।
আবির চলে গেলে ইমন-মণিকে নীলিমা ওপরে ওর রুমে পাঠিয়ে দিয়ে বাসনপত্তর পরিষ্কার করার কাজে লেগে যায়।বাসনপত্তর ধোঁয়ার সময় নীলিমা টের পায় ওর আঙ্গুলটা সত্যি’ই অনেকাংশে কেঁটে গেছে।
বা’হাত দিয়ে নীলিমা কোনোরকম ভরা বালতিতে বাসনপত্তর চুবিয়ে উঠিয়ে ফেলে। তারপর ধুয়া বাসনগুলো ধাপে ধাপে সাজিয়ে রেখে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।
-ঠিক সে সময় টান পরে নীলিমার হাতে। মনে হচ্ছে পিছন থেকে কেউ হাতটা টেনে ধরে আছে। নীলিমা পিছু ফিরে তাকালো। আবির নীলিমার হাতটা টেনে দাঁড়িয়ে বলছে__
“চলো খাবে…”
নীলিমা পলকহীনভাবে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে_
হঠাৎ করে আবিরের এতটা চেঞ্জ কিভাবে সম্ভব?
আবির:- কি হলো? খাবে বলছি শুনছ না??? বসো….
আবির নীলিমার দিকে একটা চেয়ার টেনে দেয়। নীলিমা অবুঝ শিশুর মত কোনো কথা না বলে বসে পরে চেয়ারে। আবির প্লেটে ভাত বেড়ে এনে তরকারী দিয়ে এগিয়ে দেয় নীলিমার দিকে।
_ নাও…এবার খেয়ে নাও।
নীলিমা এবারো কোনো কথা না বলে হাত ধূয়ে যেই না ভাত মাখতে যাবে ওমনি উহ্ করে কুকিয়ে উঠল।
কাঁটাস্থানে তরকারীর মরিচ লেগে যাওয়ায় প্রচন্ড জ্বলছে সে স্থান। আবির নীলিমার সামনে থেকে প্লেট’টা নিয়ে যায়। অতঃপর নিজে হাত ধূয়ে ভাত মাখে। আবির ভাত মেখে নীলিমাকে বলে চেয়ারটা সামনে নিয়ে আসতে যাতে ভাত মুখে তুলে দিতে সুবিধে হয় কিন্তু নীলিমা ওর জায়গা থেকে চুল পরিমান নড়েনি।শেষে আবির নিজেই ওর চেয়ার’টা নীলিমার কাছে টেনে নেয়। তারপর চেয়ারে বসে প্লেটটা হাতে নেয়। একমুঠো ভাত হাতে নিয়ে নীলিমাকে হা করতে বলে। পরপর তিনবার বলার পর মুখ খুলে নীলিমা। হা করে সে।
আবির নীলিমার মুখের ভিতর একমুঠো ভাত পুরে দেয়। প্রথমে একটু লজ্জা পেলেও পরে আবিরের ধমক শুনে অনায়াসে আবিরের দেওয়া মুঠোর পর মুঠো ভাত গিলে খেয়ে নেয় নীলিমা। খাওয়া শেষে পানি খাওয়ার জন্য যেই গ্লাসটি আনতে যাবে ওমনি আবির গ্লাসটা ধরে ফেলে। তারপর___
” তুমি না! আমি খাইয়ে দিচ্ছি…!”
নীলিমা অবুঝ বালিকার মত আবিরের কথা শুনে নিয়ে আবিরের হাতেই পানি খেয়ে নিল। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
খাওয়া শেষে আবির নীলিমাকে বসিয়ে প্লেট ধূয়ে রেখে আসে। তারপর___
আবির:- কি হলো? চলো….
নাকি রাত’টা এখানেই কাটাবে ভাবছ???
নীলিমা:- আচ্ছা…..
আবির :- কি আচ্ছা???
নীলিমা:- আপনি উপরে যান আমি আসছি।
আবির:- কোনো কথা নয়…
তুমি এখন যাবে আমার সাথে।
নীলিমা:- ঠিক আছে, চলেন…..
আবির-নীলিমা সিড়ি বেয়ে একসাথে উঠলেও উপরে উঠে সিড়ির ডানদিকে মোড় নেয় নীলিমা।
আবির:- দাঁড়াও….
নীলিমা :- কিছু বলবেন???
আবির:- কোথায় যাচ্ছ?????
নীলিমা:- আমার রুমে….
আবির:- ও রুমে ইমন-মণি শুয়ে পরেছে।
নীলিমা:- তাতে কি হয়েছে? আমি ডাক দেয় গিয়ে…?!
আবির:- মাথা নষ্ট???
ওরা এতদূর থেকে জার্নি করে এসে কেবল শুইল আর তুমি কিনা ওদের…(…..)….???
নীলিমা:- তাহলে আমার কি হবে? আমি কোথায় ঘুমাবো???
আবির :- আমার রুমে চলো….
নীলিমা:- আ…আ…আমি???
আ..আ…আপনার রুমে????
আবির:- ভয় পেয়েছ???
নীলিমা:-……….
আবির:- কি?!!!
ভয় পেয়েছ?????
নীলিমা:- ভয় পাওয়ার কি আছে? আপনি কি বাগ না ভাল্লুক???
আবির:- তার থেকেও বড় কিছু…..
নীলিমা:- ঠিক বুঝলাম না…..
আবির:- আগে রুমে চলো। তারপর বুঝাচ্ছি…..
নীলিমা:-…………
আবির:- কি হলো? চলো…..
নীলিমা আবিরের পিছুপিছ আবিরের রুমে ঢুকে। রুমে ঢুকে’ই ধপাশ করে আবির দরজাটা লাগিয়ে দেয়। দরজা লাগানোর শব্দে নীলিমা কিছুটা ভরকে যায়। তারপরও নিজেকে সামলে নিয়ে___
“দরজা বন্ধ করছেন কেন?”
ঘুমাবো…
খুব ঘুম পাচ্ছে তাই দরজা বন্ধ করলাম।
নীলিমা কাঁপা স্বরে বলল__
” দরজা’টা বন্ধ করে’ই ঘুমোতে হবে?”
আবির:- জি, বন্ধ করেই ঘুমোতে হবে। কেন তোমার কোনো সমস্যা???”
নীলিমা:- আমি আবার রুমের দরজা বন্ধ করলে ঘুমোতে পারি না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।মনে হয় এই বুঝি মরে যাব…..
আবির:- চুপ!
একদম চুপ। আর কখনো যাতে এমন কথা না শুনি। আমি দরজা খুলে দিচ্ছি….
আবির নীলিমার মুখ থেকে হাত সরিয়ে দরজা’টা খুলে দিয়ে আসল।
আবির:- এবার কোনো সমস্যা???
নীলিমা:- না…..
আবির :- এবার তাহলে ঘুমিয়ে পরো।
নীলিমা:-…….
আবির:- কি হলো? আবার গাল ফুলিয়ে বসে আছ যে??? আবার কি সমস্যা???
নীলিমা:- আমি বেড শেয়ার করে শুইতে পারব না।
আবির:- তো…???
নীলিমা:- আমি সোফায় শুইব আর আপনি খাটে শুয়ে থাকুন….
আবির আর কোনো কথা বাড়ালো না।রাগে কটমট করতে করতে বলল___
” ঠিক আছে! তোমার যখন এতই সমস্যা আমার সাথে থাকতে তখন থাকতে হবে না। তবে তোমায় সোফায়ও দিতে পারব না। সোফায় শুইব আমি। তুমি শুইবে খাটে….”
নীলিমা:- ঠিক আছে….
আবির:- হুম, এবার শুয়ে পরো।একটু পর ফজর নামাজের আজান দিবে।
নীলিমাকে খাটে শুইতে বলে আবির সোফায় শুয়ে পরে।
নীলিমা খাটে শুয়ে আছে আর ভাবছে__
” এ আমি কোন সে মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছি? আমি তো কারো মায়ার বন্ধনে আটকা পরতে চাই না। তবে কেন ওনার জন্য এত খারাপ লাগছে?
কেন বুকটা বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগছে???
নীলিমা বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করছে। ঘুমতো ধরা দিচ্ছে’ই না উল্টো কেউ যেন বুকের ভেতর হাতুড়ি দিয়ে পিটাচ্ছে….
নীলিমা একবার কুলবালিশ বুকে জড়িয়ে নিচ্ছে তো আরেকবার কুলবালিশ ছেড়ে এপাশ-ওপাশ করছে…
এ এক অন্যরকম দৃশ্য।
যা সোফায় শুয়ে থেকে আড়চোখে খেয়াল করছে আবির।
কিছুক্ষণ পর___
আবির সোফা থেকে উঠে পরে। শরীরটা টানা দিয়ে বলে_
” সারাদিনে অনেক ধকল গেছে শরীরের উপর দিয়ে। খুব ঘুম পাচ্ছে। এখন ঘুমিয়ে পরলে আবার একটু পরই উঠে পরতে হবে। রান্না বান্নায় হেল্প করতে হবে। আমি বরং কাজের লোকদের ফোন করে জানিয়ে দেই!
আবির কাজের লোকদের ফোন করে বলে সকালে ৭টার ভেতর যাতে বাসায় থাকে। তারপর ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট হাতে নিয়ে বলে__
” এই হলো ঘুমের ট্যাবলেট! আজ একসাথে ৫টা খাবো। তারপর ঘুম দিব। আহা! কি মজার ঘুম…????”
আবির ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট থেকে ৫টা ট্যাবলেট খেয়ে সোফায় শুয়ে পরে। এদিকে খাটে শুয়ে নীলিমা চোখ বন্ধ করে রাখলেও আবিরের কথাগুলো ঠিক শুনতে পেল। আবির এখন ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমের প্রস্ততি নিচ্ছে। না জানি কতক্ষণ ধরে ঘুমায়? ওনি আবার জার্নি করে এসেছেন। যায়…
ওনাকে বরং সোফা থেকে ডেকে আনি। খাটে শুইতে বলি। একটা রাতেরই তো ব্যাপার!!! “
নীলিমা আবিরকে ডেকে তুলে।তারপর___
আবির :- নীলিমা! আমি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছি।খুব ঘুম পাচ্ছে।ডাকো কেন???
নীলিমা:-ইয়ে মানে বলছিলাম কি আপনি খাটে ঘুমাতে পারেন। আমার কোনো সমস্যা হবে না….
আবির:- কিন্তু আমার সমস্যা হবে মিসেস…..
নীলিমা:- কি সমস্যা???
আবির:- আমি ঘুমের সময় একজায়গায় স্থির থাকি না। হাত-পা ছুড়াছুড়ি করি। আর সাথে যদি কেউ থাকে তাহলে তো কোনো কথায় নেই। একেবারে সাথের মানুষটাকে কুলবালিশ বানিয়ে হাত-পা উঠিয়ে দিয়ে শুয়ে থাকি….
নীলিমা:-……
আবির :- হা, হা চুপ হয়ে গেলে???
নীলিমা:- আপনি শুইতে পারেন।আমার কোনো অসুবিধে হবে না। আর আমি কিছু মনেও করব না।
আবির:- Oh,Really?
নীলিমা:- হুম…..
আবির :- দেখো আবার পরে কোনো ঝামেলা যেন না হয়…!!!
নীলিমা:- আমি কোনো ঝামেলা করব না।আপনি নিশ্চিন্তে শুয়ে পরুন।
আবির আর কোনো কথা না বলে একলাফে সোফা থেকে খাটে চলে আসে। তারপর সোজা হয়ে শুয়ে চোখটা বন্ধ করে ফেলে।
একটু পরই আজান দিয়ে দেয়।
নীলিমা আবিরকে ডাকতে গিয়েও ডাকল না যদি ঘুমের ব্যাঘাত হয় সে জন্য।নীলিমা অজু করে নামাজ পরার জন্য উঠে নিচে চলে গেলে আবিরও লাফ দিয়ে বিছানায় উঠে বসে। তারপর চটজলদি অজু করে নামাজটা আদায় করে নেই রুমে।অতঃপর নীলিমা আসার আগেই পূর্বেই ন্যয় ঘুমের ভান করে শুয়ে থাকে।
এদিকে নীলিমা এসে দেখে আবির তখনও বেঘোরে ঘুমুচ্ছে। নীলিমা আবিরের কপালে গিয়ে ছোট্ট একটা চুমু এঁকে দিয়ে সোফায় শুয়ে পরল। যেহেতু এটা শহর এলাকা তাই নামাজ পরে একবার শুইলে সকাল আট’টায় উঠলেও নো প্রবলেম….
নীলিমা একটা ঘুম দেওয়ার জন্য সোফায় গিয়ে শুইল।
কিন্তু আবিরের মুখের দিকে তাকাতেই ভেতরটা কেমন অস্থির অস্থির লাগছে ওর। নীলিমা সোফায় শুতে পারল না। দরজাটা বন্ধ করে ধীর পায়ে আবিরের পাশে গিয়ে শুয়ে পরে। আবিরের পাশে গিয়ে শুয়ার পরও নীলিমার অস্থির অস্থির ভাবটা যেন কাটেনি। নীলিমা মিনিট ত্রিশেক বিছানায় এপাশ ওপাশ করে।এরই মাঝে বার কয়েক আবিরকে ছুঁতে গিয়েও ছুঁইনি।
এদিকে পুরো ব্যাপার চোখ বোজে থেকেও জেনে যায় আবির।
বুঝতে পারে আবির একটা হাত বার বার ওর পিঠের খুব কাছে এসেও সরে গেছে। আবির চোখ বোজেই ওপাশ থেকে নীলিমার মুখী হয়ে শুইলো। নীলিমা আবিরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে জল ছলছল চোখে। একটু পর’ই আবির ইচ্ছেকৃতভাবেই নীলিমার উপর ওর একটা হাত রাখে। নীলিমা হাতটা সরিয়ে দেয়।এবার আবির ঘুমের মধ্যেই নীলিমার অনেকটা কাছে চলে আসে। তারপর আলতো করে নীলিমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমের ভান করেই। আবির জানে নীলিমা ওকে এখনি সরিয়ে দিবে।
কিন্তু অনেকক্ষণ হয়ে গেল নীলিমা কিছুই করছে না। আবির ব্যাপারটা বুঝার জন্য নীলিমার থেকে একটু পিছু সরে যাচ্ছিল ঠিক তখন’ই নীলিমা আবিরকে জড়িয়ে ধরে। আবির আবারো নীলিমা আলতো করে জড়িয়ে ধরে। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
নীলিমা আবিরকে প্রথমে জড়িয়ে ধরে। তারপর শক্ত করে জাপটে ধরে। শক্ত থেকে আরো শক্ত করে নীলিমা আবিরকে জড়িয়ে ধরে আছে। আবির বার কয়েক চেষ্টা করে সারিয়ে নিতে কিন্তু পারেনি। নীলিমা এমন নিবিড়ভাবে ওকে জড়িয়ে ধরে আছে যে আবির সেখান থেকে বেরোতে পারছে না।
আবির আর চেষ্টা করেনি ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য। আবির অবশ্য ঘুমাইনি তবে চোখ বোজে আছে….
একটু পর নীলিমা আবিরকে ছেড়ে দেয়। উঠে চলে যায় আবিরের কাছ থেকে।
অনেকক্ষণ হয়ে গেল।
নীলিমা রুমে আসছে না দেখে আবির শুয়া থেকে উঠে পরে। বেরিয়ে যায় রুম থেকে। বাথরুম ওয়াশরুম খুঁজে ছাদে যায় আবির। দুর থেকেই আবির দেখে নীলিমা ছাদের কর্ণারে চুপটি করে দু’হাটু চেঁপে বসে আছে। আবির একটু কাছে যেতেই টের পায় নীলিমা কাঁদছে। আবির আর একমুহূর্ত সেখানে দাঁড়ালো না। দৌঁড়ে নিচে নেমে যায়। মণির কথামতো ফোন করে আবির আবিরের বাবা-মা, বোন দুলাভাইকে।
আবির ফোন করে জানাই নীলিমা মা হতে চলেছে। ওকে যেন সবাই এসে দেখে যায়….
এদিকে কাজের লোক চলে আসে।
মণি ছাদে যায় নীলিমাকে আনতে।
সন্ধ্যার পর পর’ই আবিরের পুরো ফ্যামিলি এসে উপস্থিত হয় ঢাকায়। সবাই এসেই কি খুশি।
আবিরের মা তো খুশিতে আত্মহারা।
নীলিমাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে চুমো খেতে থাকে। আবিরের বাবা এসে নীলিমার হাতে হরেকরকমের ফলের প্যাক ধরিয়ে দিয়ে বলে__
“এগুলো তোমার জন্য। তুমি খাবে সব।”
আবিরের বোন এসে নীলিমার পাশে বসে বলল__
” শুনো নীলিমা! একদম কাজকর্ম করবে না। সবসময় হাসিখুশি থাকবে আর টেনশন মুক্ত থাকবে।”
আবিরের দুলাভাই___
” নীলিমা! এটা কিন্তু তোমার প্রথম বেবি। সো বি কেয়ারফুল।”
কাজের মেয়ে নীলিমার হাতে একটা বাচ্চার ক্যালেন্ডার ধরিয়ে দিয়ে বলল সেটা যাতে প্রতিদিন দেখে।তাহলে ঐ রকম চাঁদের মত সুন্দর বাচ্চা হবে।
নাহ!
আর পারছে না নীলিমা।
অনেক হয়েছে।
এবার কথা বলতেই হবে আবিরের সাথে….
নীলিমা হুট করে আবিরের রুমে প্রবেশ করে। আবির তখন বসে ল্যাপটপ টিপছিল, নীলিমাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে খুব রেগে আছে। যেকোনো মুহূর্তে একটা কিছু ঘটে যেতে পারে। আবির আগেবাগেই ল্যাপটপটা বন্ধ করে নীলিমার দিকে তাকালো।
নীলিমা অগ্নিদৃষ্টি নিয়ে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলল__
” কেন করলেন এমনটি?”
আবির নীলিমাকে বসতে বললে নীলিমার জবাব__
” আমি বসতে আসিনি। আমি জানতে এসেছি। জেনেই চলে যাব।”
আবির:- নীলিমা!
তুমি শান্ত হয়ে বসো আগে।
নীলিমা:- আমি কিভাবে শান্ত হবো?
আমি এটা কিভাবে করলেন? কেমন করে আপনি ওদের এত বড় মিথ্যেটা বলতে পারলেন???
ওরা সত্যিটা যখন জানতে পারবে, তখন কি অবস্থা হবে বুঝতে পারছেন? বুঝতে পারছেন ওরা কতটা কষ্ট পাবে???
কেন করলেন এমনটা???
সত্যিটা জানার পর ওদের আমি কিভাবে মুখ দেখাব???
আবির:- শান্ত হও নীলিমা।
মাথা ঠান্ডা করো….
নীলিমা:- আমি পারছি না শান্ত হতে।পারছি না মাথা ঠান্ডা করতে।
আবির:- আমি বুঝতে পারিনি এমন হয়ে যাবে। পরিণাম না ভেবেই আমি এমনটা করছি। স্যরি….
নীলিমা:- Sorry, বললে সবকিছুর সমাধান হয়ে যায় না আবির সাহেব।
আপনি ভুল করছেন। অনেক বড় ভুল। যার কোনো সঠিক সমাধান নেই।
নীলিমা চলে যাচ্ছিল।
আবির পিছন থেকে ডেকে বলে__
“কোথায় যাচ্ছ?”
নীলিমা:- মায়ের কাছে যাচ্ছি সব সত্যি বলতে। বলতে যাচ্ছি ওরা যা জানে সব মিথ্যে….
আবির:- নীলিমা প্লিজ এ কাজ করো না। ওরা কষ্ট পাবে জানলে….
নীলিমা:- ওরা যখন পরে সত্যিটা জানবে তখন? ওদের সব ধারণা মিথ্যে এটা শুনলে ওরা কি পাবে না কষ্ট???
আবির:- না….পাবে…..না……
নীলিমা:- মানে????
আবির:- মানে ওরা কষ্ট পাবে না।
নীলিমা:- কিভাবে সম্ভব???
আবির:- চলো না আমরা মিথ্যেটাকে সত্যি করে ফেলি….
নীলিমা:- মানে????
আবির:- অতি সহজ কথা। সেটাও বুঝতে পারছ না???
তুমি না সায়েন্সের স্টুডেন্ট ছিলে?
বায়োলজিতে পড়’নি জীবের বিকাশ সম্পর্ক???
পড়’নি কিভাবে কালক্রমে জীবনের উৎপত্তি আর বিকাশ ঘটে চলেছে???
নীলিমা:- You…..
আবির:- চলো না সেই নিয়মেই একটু সামনের দিকে এগিয়ে যায়। আমাদের বাবা-মা’কে উপহার দেয় ডজনখানেক নাতি-নাতনী…..
নীলিমা:- আ….প….আপনি…
আবির:-
চলবে………