# এক মুঠো রোদ .
# লেখিকাঃ নৌশিন আহমেদ রোদেলা
# পর্বঃ ৪২
রোজাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে শান্ত গলায় বললো মৃন্ময়,
—” আমি জানি আপনার আর আমার লাইফস্টাইল আলাদা। আপনি আমার জাঁকজমকপূর্ণ জীবন পছন্দ করেন না কিন্তু আমার আপনার সিম্পল লাইফটা খুব পছন্দ মিস.রোজা। এই সিম্পল “আপনি” টাকেই ভাবনাতীত পছন্দ আমার। আমার মনে হয় আমাদের মাঝে হাজার অমিল থাকলেও আমাদের একসাথেই থাকা উচিত। কারণ আমার বিশ্বাস আমি আপনাকে ভালো রাখতে পারবো। একজন সিম্পল মানুষের মতো স্বাধীনভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আপনার সাথে বৃষ্টিবিলাস করতে না পারলেও হঠাৎ রাতের আঁধারে আপনার হাত ধরে হাঁটতে পারবো। খুব ইচ্ছে হলে বর্ষায় কোনো অপরিচিত গ্রামের নির্জনতায় আপনাকে নিয়ে ভিজবো। রোজ রোজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুসকা, চটপটি খেতে পারবো না ঠিক তবুও মাঝে মাঝে নিউজ হয়ে যাওয়ার ভয় ঠেলে রাস্তায় অবশ্যই নামবো। আপনাকে ঠিক এমনটাই রাখার হাজারও চেষ্টা চালাবো।”
রোজাকে চুপ করে থাকতে দেখে ঠোঁটে দুষ্টুমিমাখা হাসি ঝুলিয়ে বলে উঠলো মৃন্ময়,
—” এটলিস্ট আমাদের বাচ্চাদের জন্য আপনাকে রাজি হয়ে যাওয়া উচিত মিস.রোজা।”
রোজা চোখ বড়বড় করে একবার তাকিয়েই অন্যদিকে মুখ ফেরালো। লজ্জায় দম আটকে আসছে তার। মৃন্ময় আবারও বললো,
—” ওদিকে কেন? এদিকে তাকান। আমি দেখতে অতোটাও খারাপ নই। এট এনি চান্স, আপনি কি লজ্জা পাচ্ছেন মিস.রোজা? লজ্জা পাওয়ার মতো তো কিছুই বলি নি। আগে রাজি হোন তারপর বলবো। তাছাড়া, আপনার ভাষ্যমতে হিরোরা সবসময় শেইমলেসই হয়। তবে, একটা গুড নিউজ কি জানেন? আমি আর অভিনয় জগতে থাকছি না। এখন থেকে আমায় কেউ হিরো বলে ডাকবে না শুধু আপনি ছাড়া। আমি আপনার পার্সোনাল হিরো হতে চাই মিস.রোজা। আর কারো নয়। আপনিও আমার পার্সোনাল “রোজা” হয়ে যান না প্লিজ।”
দমবন্ধকর এক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছে রোজা। কেউ একজন তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ভাবতেই শরীর কেঁপে উঠছে তার। রোজাকে এই দমবন্ধকর পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতেই হয়তো নীরবতার পর্দা ঠেলে বেজে উঠলো ফোন। রোজা তাড়াহুড়ো করে ফোনটা রিসিভ করেই ইতস্তত গলায় বললো,
—” হ্যাঁ তীর্থ?”
—” ওই? তুই ক্লাসে আসিস নাই কেন? বেদ্দপ মহিলা। ক্লাসে আসবি না বললে তো আমিও আসতাম না। এনিওয়ে, কই আছিস তুই?”
রোজা জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে আড়চোখে মৃন্ময়কে দেখে নিয়ে বললো,
—” আসলে দোস্ত…আমি…”
তীর্থ অধৈর্য গলায় বললো,
—” আমি আমি না করে কই আছোস সেইটা ক। বাসায় আছিস?”
রোজা আমতা আমতা করে বললো,
—” না রে দোস্ত। বাসায় নয়। ও ওইতো নননদীর পাড়ে। যেখানে আড্ডা দিতাম আরকি..”
তীর্থ সন্দেহী গলায় বললো,
—” ওই তোতলাস কেন? আর এই সকালে ওইহানে কি করিস? ওই জায়গা এই টাইমে কতো নীরব থাকে। একা একা গেছিস কেন ডাফার?”
—” মমমন। মানে কাল মন খারাপ ছিলো বললাম না? তাই এসেছিলাম আরকি।”
—” আইচ্ছা ঠিক আছে। আমি রাস্তার মোড়ে আসতাছি তুই মোড়ে এসে দাঁড়া। আমার এই পাঁচ মিনিট লাগবে। ওকে?”
—” আআচ্ছা।”
ফোন কেটে ব্যাগে রেখে। মৃন্ময়কে উদ্দেশ্য করে ছোট্ট করে বললো রোজা,
—” আমার যেতে হবে।”
এটুকু বলেই একরকম দৌড় লাগালো রোজা। মৃন্ময় অবাক চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো,
—” আরে, আরে….কিছুতো বলে যান মিস. রোজা। আমি এভাবে রোজ আসতে পারবো না। মিডিয়ার চোখে পড়লে তাজা নিউজ হয়ে যাবো।”
রোজাকে ফিরে না তাকাতে দেখে এবার চেঁচিয়ে উঠলো মৃন্ময়,
—” ওকে,ফাইন। আই উইল ম্যানেজ। তুমি রাজি না হলে আমি কিন্তু ডিরেক্ট তোমার বাবার কাছে চলে যাবো রোজা।”
মৃন্ময়ের শেষ কথাটায় হৃদপিণ্ড হাজার গতিতে ছুটতে লাগলো রোজার। এই প্রথম রোজাকে “তুমি” বলে সম্বোধন করলো মৃন্ময়। সেই সাথে রোজা। শুধুই রোজা!
৭৮.
আরুকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে রাফিন। পার্কের কোনো নির্জন রাস্তা ধরেই হাঁটছে তারা। পেছন পেছন হাঁটছে আসিফ আর দলের কিছু ছেলে। রাফিন আরুকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে কিন্তু আরুর ভয়টা যেন বেড়েই চলেছে। কাল রাতে রাফিন আর আরুর একান্তে কাটানো সময়টুকু নিয়েই তার ভয়। সেই ঘটনার রেশ ধরেই রাফিনের অপরাধবোধ। ইচ্ছে করে এমনটি করে নি রাফিন। কিভাবে যে হয়ে গেলো নিজেও বুঝতে পারছে না সে। তবে, কিছু অপরাধবোধ মানুষকে ভাবতে শেখায়,বুঝতে শেখায়,খুঁজতে শেখায়। রাফিনের সাথেও ঠিক তাই ঘটছে। রাতের আঁধারে আরুর সাথে জড়িয়েই আরুকে নিয়ে ভাবতে বসেছে সে। আরুকে খুঁজতে চাইছে সে। কিছুটা এগিয়েই মৃদু গলায় বললো রাফিন,
—“বসবে আরু?”
আরু কিছু বললো না। আরুর এই নিস্তব্ধতা বিদীর্ণ করে দিলো রাফিনের বুক। রাফিন আলতো করে আরুর হাতটা ধরে পাশের ব্রেঞ্চে বসলো। আরুকে দূরে সরে বসতে দেখে ইশারায় আসিফদের দূরে গিয়ে দাঁড়াতে বললো রাফিন। তারপর মৃদু গলায় বললো,
—” ভয় পাচ্ছো কেন আরু? আমি তোমার হাজবেন্ড। তাছাড়া.. রাতের জন্য আমি সরি। আমি আসলে… প্লিজ এভাবে ভয় পেয়ো না। কথা বলো আমার সাথে। “
আরু টলমলে চোখে পাশের বট গাছটির দিকে তাকিয়ে আছে। রাফিন দুইহাতে নিজের মাথা চেপে ধরে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইলো। কয়েক মিনিট পর সোজা হয়ে বসে নরম গলায় বললো সে,
—” আমার দিকে তাকাও আরু। আমি কথা বলছি তোমার সাথে। তোমার কি কিছুই বলার নেই? ভালো-মন্দ কিছু তো বলো। এভাবে চুপ করে থেকে কি বাঁচা যায়? আমি তোমার একটা কথা শোনার জন্য ডেস্পারেট হয়ে পড়ছি আরু। কেন এমন হচ্ছে জানি না তবে….নিজেকে পাগল পাগল লাগছে আরু। তুমি কি আদৌও আমার কথা শুনতে পাচ্ছো? আরু প্লিজ! কথা বলো আমার সাথে।
রাফিনের কোনো কথাতেই কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না আরু। রাফিনের সব কথা মেনে নিয়েও রাফিনকে অদ্ভুতভাবে এড়িয়ে চলছে আরু। আর এখানেই রাফিনের হার, আরুর জিত। আরুর কাছ থেকে বারবার প্রত্যাখাত হয়ে রাফিনের মনে বিন্দু বিন্দু শূন্যতা জন্মাচ্ছে। আর সেই শূন্যতাটাই যেন ধীরে ধীরে পুড়িয়ে মারছে তাকে। বারবার আরুকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য করছে।
_______________
বিকেল সাড়ে চারটা। অফিস রুমে বসে একটার পর একটা বোতল খালি করছে রাফিন। মদ খাওয়াটা রাফিনের জন্য রোজকার ব্যাপার হলেও আজকের বিষয়টা আলাদা। ভারি বুক,রাগ, জেদ সবকিছুকে ঠান্ডা করতেই একের পর এক বোতল সাবাড় করছে সে। রাফিন থেকে কিছুটা সামনে একটা কাঠের চেয়ারে বসে আছে ডিরেক্টর। ডিরেক্টরের চোখে মুখে রাগের ছাপ। রাফিন বোতলে চুমুক দিয়ে ডিরেক্টরের দিকে তাকিয়ে হাসলো। টেবিলের দিকে ঝুঁকে এসে বললো,
—” ডিরেক্টর সাহেব কি রেগে আছেন নাকি?”
ডিরেক্টর শক্ত গলায় বললো,
—” রেগে থাকাটা কি স্বাভাবিক নয় মিষ্টার চৌধুরী? আপনাকে আমি মৃন্ময়কে মারতে বলেছিলাম আর আপনি কি করলেন? নিজে তো কিছু করলেনই না উল্টো আমার লোককে তুলে আনলেন। তারওপর ওদের যারা ফলো করছিলো তাদের সব ক’টাকে মেরে দিলেন। এসবের মানে কি? কেন বাঁচালেন ওদের?”
রাফিন হেসে ফেললো। মাতাল গলায় বললো,
—” হাসালেন ডিরেক্টর সাহেব। বড্ড বোকা লোক আপনি। মৃন্ময় তো আপনার আশেপাশেই থাকে এখনও ওকে চিনলেন না? সে যায় হোক, আমি আপনার লোকদের মারি নি। মৃন্ময়ই মেরেছে কিন্তু কিভাবে মারলো সেটা আমিও ভাবছি বাট বুঝতে পারছি না। আর তুলে আনার কথা? হ্যাঁ ওটা আমার লোকই তুলেছিলো। এক্চুয়েলি? রাফিন চৌধুরীর চুলকানি উঠলে তা না মিটিয়ে থামে না সে। বুঝতে পেরেছেন?”
ডিরেক্টর ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। তার চোখে-মুখে দ্বিধা। ডিরেক্টরের মুখভঙ্গি দেখে হেসে উঠলো রাফিন। আসিফের দিকে তাকিয়ে বললো,
—” এই আসিফ? ডিরেক্টর কিছু বুঝে নাই রে। একে কি করে বোঝায় বল তো?”
আসিফ হালকা হেসে বললো,
—” আপনার যেমন ইচ্ছে সেভাবেই বোঝান ভাই। কে আটকাচ্ছে?”
রাফিন উঠে দাঁড়ালো। টেবিলের উপর থেকে চাকুটা নিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে দেখতে ডিরেক্টরের দিকে এগিয়ে গেলো। হুট করেই চাকু দিয়ে ডিরেক্টরের হাতে ফেঁস দিয়ে বললো,
— ” বাহ! দারুন ধাঁরালো তো। আসিফ? এই স্টাইলের আরো কিছু চাকু আনাস তো। আই লাইক ইট।”
ডিরেক্টরের আর্তনাদ যেন কানেই ঢুকলো না রাফিনের। রগগুলোকে পাশ কাটিয়ে আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় গাঢ় দাগ কাটলো রাফিন। ডিরেক্টর আর্তনাদ করে বললেন,
—” কি করছেন মিষ্টার.চৌধুরী?”
রাফিন বাঁকা হেসে বললো,
— “অনেকদিন যাবৎ কাটাছেঁড়া করি না তাই প্র্যাকটিস করছি। চিন্তা করবেন না..এতো সহজে মরবেন টরবেন না। মাফিয়া হই আর যাই হই ডক্টর তো। রগগুলোকে এড়িয়েই ফেশ দিয়েছি। শুধু রক্তই গড়াবে আর কিছুই নয়। ফিল্ম শেষ হওয়ার আগেই ডিরেক্টর মরে গেলে চলবে নাকি?”
ডিরেক্টর ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রাফিনকে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না সে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে ভয়ার্ত গলায় বললো,
—-” আপনি পাগলামো করছেন মিষ্টার.চৌধুরী। এর জন্য আপনি শাস্তি পাবেন।”
ডিরেক্টরের কথায় হুহা করে হেসে উঠলো রাফিন। হাসতে হাসতে বললো,
—” রিয়েলি? চোরের মায়ের বড় গলা। আগে নিজেরটা বুঝে নাও তারপর নাহয় আমার শাস্তির কথা ভাববে। আচ্ছা,ডিরেক্টর সাহেব? একটা সিনেমায় কি কি লাগে? ডিরেক্টর,হিরো,ভিলেন,হিরোইন। আপনি আর আমি তো আছি এবার হিরো আর হিরোইনকে চায়, তাই না? ওকে…ওকে…”
কথাগুলো বলে টেবিলের কাছে এগিয়ে গেলো রাফিন। ফোনটা হাতে নিয়ে আসিফের দিকে তাকালো,
—” আসিফ? তোর ভাবি কি করে?”
—” বই পড়ছে হয়তো।”
—” গুড গার্ল! আচ্ছা? তুই একটা কাজ কর। তোর ভাবিকে এক কাপ কফি দিয়ে আয়। কফির সাথে দুটো স্লিপিং টেবলেট। আর হ্যাঁ,ফেরার সময় বাইরে থেকে দরজাটা লক করে আসবি।”
রাফিনের সবকথায় মেনে নিতে অভ্যস্ত আসিফ। তাই এবারও মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানিয়ে বেরিয়ে গেলো সে। ডিরেক্টরকে ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে মুচকি হাসলো রাফিন। টেবিলের উপর বসে বললো,
—” আমার বউ। খুবই সুইট একটা মেয়ে। কিন্তু সমস্যাটা হলো হার্ট দুর্বল। আমাদের স্ট্রং সিনেমাটা ঠিক মেনে নিতে পারবে না। তাই ঘুম পাড়ানোর ব্যবস্থা করছি।”
ডিরেক্টর থেকে চোখ সরিয়ে কোনো একটা নাম্বারে ডায়াল করলো রাফিন। সাথে সাথেই ওপাশ থেকে গম্ভীর ভরাট গলায় বলে উঠলো কেউ,
—“আসসালামু আলাইকুম, হ্যালো?”
রাফিন বাঁকা হেসে বললো,
—” ওয়ালাইকুম আসসালাম। হাউ আর ইউ ডুয়িং মিষ্টার.আরিয়ান মৃন্ময়?”
মৃন্ময় শান্ত কন্ঠে বললো,
—” ফাইন। কিন্তু আপনি কে?”
—” আআআ….আমি রাফিন চৌধুরী। চিনতে পেরেছেন?”
মৃন্ময় মুচকি হেসে বললো,
—” ব্ল্যাক ওয়ার্ল্ড স্টার। আপনাকে কে না চিনে? তো আমার কাছে কি চায়?”
—” রোজাকে।”
মৃন্ময় শক্ত গলায় বললো,
—” মানে?”
রাফিন হেসে বললো,
—” হা হা… রেগে যাচ্ছেন নাকি? আরে… আমার জন্য বলছিলাম না। রোজাকে আপনি চান কিনা তাই জিগ্যেস করছিলাম। চান নাকি?”
—” কি বলতে চাইছেন আপনি? স্পষ্ট করে বলুন।”
—” স্পষ্ট? হুহ..স্পষ্টই তো বলছিলাম। ওকে! লেট মি এক্সপ্লেইন। আপনার বাবার ডিয়ারিং ফ্রেন্ড….নাহ, ফ্রেন্ড নয় খুনি বলাটাই বেটার হবে। এনিওয়ে, যা বলছিলাম আরকি। আপনার বাবার খুনি বলছিলেন রোজা নাকি অনেক সুইট এন্ড হেব্বি হট।”
মৃন্ময় গম্ভীর কন্ঠে বললো,
—” মিষ্টার.চৌধুরী? আমার মনে হয় মেয়েদের নিয়ে কথা বলার সময় আপনাকে আরো একটু ভদ্র ভাষা ইউজ করা উচিত।”
—” ইয়াহ! অফ কোরস্। সুপারস্টার মৃন্ময়ের প্রেয়সী বলে কথা ভদ্র ভাষা ইউজ তো করতেই হবে। কিন্তু মিষ্টার মৃন্ময় যেখানে কাজগুলোই অভদ্র সেখানে ভদ্রতার দোহাই দিয়ে কি লাভ? সোজাসাপ্টা কথা, আপনার বাবার খুনি আপনাকে মারতে চান তারসাথে আপনার রোজাকেও চান। বৃদ্ধ বয়সে যুবতী মেয়ে দেখে কি মন মানে বলুন?আপনার কাছে পনেরো মিনিট সময় আছে। সেইভ ইউর হিরোইন৷ আর হ্যাঁ…লোকেশন শেয়ার করছি। বি ফাস্ট ওকে?
ফোনটা কেটে হাসিতে ফেঁটে পড়লো রাফিন। রাফিনের যে নেশা হয়ে গেছে তা বেশ বুঝতে পারছে আসিফ। তাই রাফিনের অগোচরেই মদের বোতলগুলো সরিয়ে নিলো সে। রাফিন হাসি থামিয়ে টেবিল থেকে নামলো। ডিরেক্টরের সামনে দাঁড়িয়ে জোড়েসোড়ে চড় বসালো তার গালে। ডিরেক্টর চেয়ারসহ উল্টে পড়লেন। আসিফ তাকে টেনে তুলে আবারও বসিয়ে দিলো চেয়ারে। রাফিন ডিরেক্টরের কলার ধরে রাগী গলায় বললো,
—” তুই সত্যিই রোজাকে চাস? এতো বড় সাহস? ও তোর মেয়ের বয়স্ক। তোর তো চোখ তুলে ফেলা উচিত ডিরেক্টর। রাস্কেল।”
এটুকু বলে সোজা হয়ে দাঁড়ালো রাফিন। চেয়ারে বসেই গা এলিয়ে দিলো। ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি ঝুলিয়ে বললো,
—” আই অলসো লাইক হার। রেসপেক্ট হার। মে বি, আই এম ইন লাভ উইথ হার! কিন্তু মেইন পয়েন্ট কি জানেন? আমার ওয়াইফ আছে। আর আরুর প্রতি আমার রেসপন্সিবিলিটি আছে। আর কাল রাতে ওর অনুমতি না নিয়েই আমি…..। আমি ওকে খুব হার্ট করেছি। খুবব। খুব লক্ষ্মী একটা মেয়ে আরু। আমার ওর খেয়াল রাখা উচিত। আমার আরু হাসে না, কথাও বলে না। ওর মনটা খুব খারাপ। ওর মন কি করে ভালো করা যায় বলুন তো? কিভাবে?
# চলবে….