রোমান্টিক অত্যাচার পর্ব ৫ ও ৬
লেখিকাঃ Israt Jahan
ধারনাঃ Kashnir Mahi
.
আমিঃ না আর এভাবে সহ্য করা যায়না। উনি ওনার লিমিট ক্রস করে ফেলেছে। আজকেই আমি চাকরি ছেরে দিবো।(কান্না করতে করতে)
আশফিঃ কি ব্যাপার ও কি রেজিগলেশন লেটার লিখছে? সেরকমি তো মনে হচ্ছে। কিন্তু ওকে তো এখান থেকে যেতে দেওয়া যাবেনা। কিভাবে ওকে আটকানো যায়? বুঝতে পারছিনা। আচ্ছা আগে আসুক।
আমিঃ দরজায় নক করলাম। যখন ই ওনাকে বলতে যাবো তখন উনি বললো…..
আশফিঃ এখনকার সময় যখন তখন ভালো জব পাওয়া খুবই টাফ। তার ওপর বছরের মাঝামাঝি সময়।(ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে)। By the way তুমি বাসায় তোমার মা কে কি বলবে কি জন্য চাকরি টা ছেরেছো?(মাহির দিকে তাকিয়ে)
আমিঃ সত্যিই তো। যে কোম্পানি তে ২বছর ধরে চাকরি করছি সেটা আজ আমি কেনো ছাড়লাম। প্রশ্ন করলে কি বলবো তখন। আর মিথ্যও বলতে পারবোনা। চাকরিটা ছাড়লে কোনো problem ছিলোনা কারন নানু এমনিতেই আমাদের দায়িত্ব নিতে চাই কিন্তু মা সেটা চাইনা। তাই আমাকে চাকরি করে মাকে নিয়ে আলাদা থাকতে হয়। আর কিছুই করার নেই। চাকরিটা করতেই হবে। ওনাকে কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।
আশফিঃ উহহহ… যাক তাহলে আটকাতে পারলাম।আহারে কাঁদতে কাঁদতে বাচ্চাটা চোখ,মুখ একদম ফুলিয়ে ফেলেছে । ওকে এখন একটু ইজি করতে হলে বাইরে নিয়ে যেতে হবে। আর এমনিতেও বাইরে একটা কাজ আছে সেখানে যেতে হবে ওকে সাথে নিয়ে যাবো।
আমিঃ এখন আমার সত্যি মরে যেতে ইচ্ছে করছে। এরকমটা হবে আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি। ফোন আসলো।
চোখ,মুখ মুছে ফোন পিক করলাম।
-হ্যালো, মাহি স্পিকিং।
– আমার চেম্বারে এসো।(আশফি)
কিছু না বলে ফোনটা রেখে দিলাম। তারপর নিজেকে কিছুটা কনট্রোল করে ওনার রুমে গেলাম।
আশফিঃ বাইরে থেকে দুজন ক্লাইন্ট আসবে একটা হোটেলে মিট করতে যাবো জরুরি মিটিং আছে। সেখানে তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে।
আমিঃ হুম।
আশফিঃ ওখানে একটা ফাইল আছে ওটা নাও। আর আমাকে স্যুটটা পরিয়ে দাও।(উঠে শার্টের হাতা ঠিক করতে করতে বললো)
আমিঃ এবার পায়ের রক্ত মাথায় উঠে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছিনা। রাগে চোখ গরম করে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি।
আশফিঃ কি হলো?( ধমকের সুরে)
আমিঃ কিছু না বলে স্যুটটা পরিয়ে দিলাম। তারপর ওনার সাথে বেরিয়ে পরলাম।
আশফিঃ রহিম তোমাকে এখন ড্রাইভ করতে হবে না আমি নিজেই করবো তুমি থাকো। আমি সিটে গিয়ে বসলাম। মাহি অন্যমনস্ক হয়ে দাড়িয়ে আছে তাই জোরে হর্ণ দিলাম। ও চমকে উঠলো।
আমিঃ গাড়ির হর্ণের আওয়াজ পেয়ে পেছন সিটে বসতে গেলাম হঠাৎ করে উনি গাড়ি টান দিয়ে চলে গেলো। এবার আমর মেজাজ আবারও চরমে উঠে গেলো।
-কি হলো এটা? উনি বারবার এভাবে আমাকে কেনো হ্যারাস করছে।ওনার এসব কার্যকলাপে আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে।বলতে বলতে উনি গাড়ি নিয়ে ব্যাক করে আমার সামনে আসলো। তারপর সামনের দরজা খুলে দিয়ে বললো।
_আমি কোনো ড্রাইভার না যে পেছনের সিটে গিয়ে বসতে হবে। এটা একটা কমনসেন্স।
রাগের কারনে ইচ্ছে করে পেছনে বসতে চেয়েছিলাম। তাই বলে এরকম করবে? রাগে গজ গজ করতে করতে ওনার পাশে গিয়ে বসলাম। গাড়ি চালানোর সময় উনি এমনভাবে ব্রেক করলো যে আর একটু হলে……………
চিল্লায় বললাম,
– এভাবে কেউ গাড়ি চালায়।
আশফিঃ তার জন্য সিট বেল্টটা বাঁধতে হয়।
আমিঃ ওহহো…আমি সিট বেল্ট বাঁধিনি। নিজেই লজ্জা পেলাম। তারপর নামি দামী একটা হোটেলে ঢুকলাম। আগে থেকেই টেবিল বুক করা ছিল সেখানে গিয়ে বসলাম। ওয়েটার কে ডেকে একটা কোল্ড কফি আর একটা হট কফি অর্ডার করলো। আজব ব্যাপার উনি কি কোল্ড কফি টা আমার জন্য অর্ডার করলেন? আমি তো কোল্ড কফিই খাই আর কোথাও গেলে তাড়াতাড়ি করে গরম চা কফি খেতে পারিনা। খেতে দিলেও সেটাকে ঠান্ডা শরবত করে এক চুমুক দিয়ে গিলে খায়। ওয়েটার কফি নিয়ে আসলো। আমি দেখতে চাচ্ছিলাম উনি আমাকে কোন কফিটা দেই। আরে উনি তো আমাকে কোল্ড কফিটাই দিলেন। অদ্ভুত তো উনি কিভাবে জানলো? আমি প্রশ্ন করলাম ওনাকে,
-আপনি কি করে জানলেন আমি কোল্ড কফি খায়
আশফিঃ কিভাবে আবার, সবসময় দেখি তুমি অফিসে এটাই আনতে বলো। বাচ্চা মানুষ তো তাই তাড়াতাড়ি গরম কিছু খেতে পারোনা।
আমিঃ কি? বাচ্চা মানে?
আশফিঃ কিছুনা খাও।
আমিঃ তারমানে অফিসে বসে উনি আমাকে সবসময় খেয়াল করে। কিন্তু কেনো? শুধু আমার সাথেই কেনো উনি এরকম করেন।ওনার ভাব গতি, উদ্দেশ্য আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা। কিছুক্ষণ পর দুজন জাপানিজ আসলো বুঝতে পারলাম ওরাই আমাদের ক্লাইন্ট। আমরা কথা বলছি ওদের সাথে(ইংরেজিতে)। আজকে আমাদের অনেক বড় একটা অর্ডার এসেছে ওদের থেকে। তাই ওরা আমাদের সাথে হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়ালো। আমার দিকে যখন একজন ব্যক্তি হাত বাড়ালো আমি হাত মেলানোর আগেই উনি তার হাতটা ধরে হ্যান্ডশেক করলো। তারপর আমার দিকে চোখ বড় করে রাগী চোখে তাকালো।আমি জাস্ট অবাক হলাম। ওনারা চলে যাওয়ার পর আমার দিকে উনি এগিয়ে এসে দাতে দাত চেপে বললো,
-আমি ছাড়া তুমি অন্য কোনো ছেলেদের হাত ধরবেনা। না হলে খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।।
আমি বুঝলামনা উনি কেনো আমার সাথে এমন করছে। কেনো আমাকে নিয়ে উনি এত possessive হচ্ছেন। আর নিজে যেটা করলো আজ তার জন্য একটাবার sorry পর্যন্ত বললোনা উল্টে আমাকেই এসে শাসাচ্ছে। How strange!!.
তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি চালিয়ে উনি একটা পার্কের সামনে গিয়ে থামলো। গাড়ি থেকে নেমে সোজা পার্কের ভেতর ঢুকে গেলো। আমি আর না দাড়িয়ে থেকে ওনার পেছন পেছন চলে আসলাম। তারপর উনি একটা ফাঁকা জায়গা দেখে একটা বেঞ্চে গিয়ে বসে পরলো। আমাকে একবার বসতেও বললোনা। উনি বসে স্যুটটা খুলে আমাকে ধরিয়ে দিলেন।(অন্যদিকে তাকিয়ে) আমিও চাকরানির মত সেটা ধরলাম। খেয়াল করলাম উনি একটা family এর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সেখানে বাবা মা বাচ্চা ছেলেটাকে নিয়ে খেলছে। আর আমি আমার মত চারপাশ টা ঘুরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করছিলাম। মন টা এখন একটু হালকা লাগছে।কিছুক্ষণ পর পেছনে তাকিয়ে দেখলাম উনি নেই।
-আরে কোথাই গেলো? চারপাশ তাকিয়ে খুঁজলাম কোথাও দেখমানা। আবার আমাকে রেখে চলে গেলো না তো। আমি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেলাম। বাইরে গিয়ে যেটা দেখলাম সেটা দেখে আমার রাগ হচ্ছে নাকি হাসি পাচ্ছে বুঝতে পারছিনা। উনি গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে ললিপপ খাচ্ছে। আমি ওনার সামনে গেলাম। উনি আমাকে দেখে ললিপপ যে হাতে সেই হাত আমার দিকে বারিয়ে দিল।
ছিঃ ইয়াক উনি ললিপপটা চেটে এখন আমাকে দিচ্ছে? কি জঘন্য একটা মানুষ।
-আপনি ভাবলেন কি করে আপনার খাওয়া ললিপপ আমি খাবো?
আশফিঃ what?? আমি আমার স্যুটটা চাচ্ছি ললিপপ দিচ্ছিনা। আমার স্যুটটা তোমার কাছে।
আমিঃ opps… তাই তো। আর আমি কি ভাবলাম।ছিঃ কি একটা লজ্জার বিষয়।
-এই নিন। যাক তাও ভালো রাস্তার মাঝে আর পরিয়ে দিতে বলেনি। এইটুকু কমনসেন্স আছে।তারপর আমরা গাড়িতে উঠলাম। উনি আমার দিকে একটা kitkat এগিয়ে দিলেন। বাহ্ এটা যে আমার ফেভারিট সেটাও জেনে গেছেন? ভালো। আমি kitkat টা আর না নিয়ে পারলামনা। সেটা দেখে উনি মুচকি হাসলেন….হুহ্।
আশফিঃ এতক্ষন পর মহারাণীর মুড ঠিক হলো।
-অলরেডি অফিস টাইম শেষ।
আমিঃ হুম। আমাকে সামনে নামিয়ে দিন আমি চলে যাবো।
আশফিঃ আমি কি তোমাকে একবারও নেমে যেতে বলেছি?
আমিঃ আমি একাই যেতে পারবো। গাড়ি থামান। কি হলো গাড়ি থামাননা কেনো(চিৎকার করে)। উনি হঠাৎ করে এমন ভাবে গাড়ি থামালো আমরা সিটে বসেই অনেক জোড়ে ঝাঁকি খেলাম। বুঝতে পারলাম সেইরকম ভাবে রেগে গেছেন। আমার দিকে কিরকম রাক্ষশের মতো করে তাকিয়ে আছে। আমি তো ভয়ে পুরো ঠান্ডা। আবারো কি জোর করে করে বসবে নাকি। আমি তাড়াতাড়ি মুখ চেপে ধরলাম। উনি আমার দিকে সত্যিই এগিয়ে আসছেন। এবার আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করলাম। না উনি তো কিছুই করছেনা। আমি চোখ খুললাম। উনি আমার দিকে সেই রাক্ষসের মত করেই তাকিয়ে আছে। আর গাড়ির দরজাটা খোলা।তারপর উনি বললেন,
-নামো,(চিৎকার করে)।
আমাকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো। আর এমন জায়গায় নামিয়ে দিয়ে গেলো যে রাস্তাই একটা কোনো রিক্সাও পাওয়া যায়না। এখন আমাকে এতখানি রাস্তা হেঁটে যেতে হবে? অসভ্য লোক একটা। আমি হাটছিলাম তখন ২/৩ টা বখাটে ছেলে আমাকে একা দেখে আমার পিছু নিলো। আমি ওদের দেখে এক দৌড়ে আমার বাড়ির সামনে এসে পড়লাম এত জোরে দৌড় দিয়েছি মনে এখানেই শুয়ে পরি। অবশ্য একটা উপকার তো হয়েছে তাড়াতাড়ি পৌছাতে পারলাম না হলে কচ্ছপের মত হাঁটতে হাঁটতে আসতাম কত দেরি হতো কে জানে। হাপাতে হাপাতে ঘরে ঢুকলাম। মা আমার এইরকম অবস্থা দেখে দৌড়ে আসলো।
#রোমান্টিক_অত্যাচার_৬
লেখিকাঃ #Israt_Jahan
ধারনাঃ #Kashnir_Mahi
মাঃ কিরে তোর এই অবস্থা কেনো? কি হয়েছে তোর?এভাবে হাপাচ্ছিস কেনো??
আমিঃ উফফ মা তোমার প্রশ্নের কারনে তো আমি আরও হাপিয়ে যাচ্ছি। আগে একটু দম নিতে দাও। তারপর বলছি।
মাঃ হ্যা তুই বস আমি পানি নিয়াসি।……….. নে ধর।
আমিঃ হুম দাও। তারপর পানিটুকু খেয়ে একটু স্থির হয়ে বসলাম। এদিকে মা প্রশ্ন করেই যাচ্ছে। মা কে আমি থামিয়ে বললাম।
-বলছি মা বলছি।আগে ফ্রেশ হয়ে আসি। তারপর খেতে বসে বলবো।
মাঃ আচ্ছা যা।
আমিঃ ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষন পর মা খেতে ডাক দিল। তারপর খেতে বসে রাস্তার বখাটে ছেলেগুলোর কথা বললাম। মা তো শুনে বললো,
-এখন থেকে আমি ফেরার পথে এগিয়ে নিয়ে আসবো।
মা আজকে তো কোনো গাড়ি পাইনি তাই…………
তারপর মাকে অনেক কষ্টে বুঝিয়ে শুনিয়ে রুমে চলে আসলাম। এরপর ঘুমানোর জন্য যত চেষ্টা করছি তত আজ সকালের কথা মনে পরছে। ভুলতে পারছিনা। রাত ১০:৪৫ এ আমার ফোনে মেসেজ টোন বাজলো। মেসেজেটা সেই আগের নাম্বার টা থেকে এসেছে। Are you ready for #রোমান্টিক_অত্যাচার
??? আমি Reply korlam ke apni? No sms.
আমি ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলাম। তারপর সকালে অফিসে গিয়ে দেখলাম সবাই মিষ্টি খাচ্ছে। কারন জনতে চাইলাম সবাই বললো আজকে স্যারের Birthday. তাই সবাইকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। আমি ওনার চেম্বারে যাবো কালকের ফাইল টা দেওয়ার জন্য। তখন ম্যানেজার বললো, – মাহি, স্যার আজ অফিসে আসবেননা আপনাকে ফাইলটা নিয়ে ওনার বাসায় যেতে বলেছে।
ওহ আচ্ছা। এখন ওনার বাসায় যেতে হবে আবার কিন্তু আমি তো ওনার……..( কথা থামিয়ে দিয়ে)
ম্যানেজারঃ চিন্তা করোনা মাহি স্যার অলরেডি তোমার জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে।
আমিঃ ও মা তাই নাকি। ঠিক আছে। কিন্তু আমার তো এখানেও বেশ কিছু কাজ আছে। আপনি স্যারকে বলে দিন আমি অফিস hours শেষ করে তারপর দিতে যাব।
ম্যানেজারঃ ওকে।
আমিঃ চেম্বারে এসে কাজ শুরু করলাম। হঠাৎ করে মনে হলো স্যার ওনার চেম্বারে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তাকালাম। কিন্তু কৈ স্যার তো নেই। তাহলে আমার এরকম মনে হলো কেনো। আমি কি স্যারকে miss করছি? কি সব ভাবছি আমি। নিজের কাজে মন দিলাম। কাজ শেষ করে ওনার বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠলাম। ওখানে পৌছাতে পৌছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো। এই প্রথম আমি এত বড় বাড়ি দেখলাম। বিশাল জায়গা নিয়ে ওনার বাড়ি আর বাড়ির সামনে অনেক বড় বাগান। আর তার উল্টো পাশে অনেক বড় পুল। কিন্তু পুল সাইডে এত লোকজন কেনো? তারমানে উনি বাসায় Birth day party arrange করেছেন? হায় হায় আর আমাকে আজকেই আসতে হলো? হঠাৎ একটা লোক এসে বললো ম্যাডাম আপনি কি মিস মাহি?
-জি
– স্যার ঐদিকে আছে আমার সাথে আসুন।
আমাকে পুল সাইডে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে উনি ওনার বন্ধুদের সাথে Drinks হাতে নিয়ে বসে গল্প করছেন। দেখলাম ওনার বন্ধুরা ওনাকে বলছে,
– আশফি তোমাকে কিন্তু এখন আমাদের সাথে এই শ্যাম্পেন পার্টিতে পার্টিসিপেট করতেই হবে।
আশফিঃ আরে এগুলো তো তোমাদের জন্যই, তোমরা আজকে যত পারো খাও।
-নানা সেটা কি করে হয়। তোমার birthday তে তোমাকে রেখেই enjoy করবো? Not possible. তোমাকে তো থাকতেই হবে। নাও নাও শুরু করো।
আমিঃ এগুলো বলেই ওরা ওনাকে কিছুটা জোর করেই ২/৩ গ্লাস খাইয়ে দিল। তারপর হঠাৎ ওনার আমার দিকে চোখ পরলো কিন্তু no reaction. উনি স্বাভাবিক ভাবে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে নিজে থেকেই ওদের সাথে Drinks করা শুরু করলো। এভাবে অনেক গুলো Drinks নেওয়া শুরু করলো। আমি আর কি করবো চারপাশ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম ভালোই লাগছিল। তারপর পেছনে তাকালাম উনি নেই। অসহ্য এভাবে কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকবো। আর উনি হুট করে কোথায় চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর একটা ছেলে এসে বললো,
-ম্যাম স্যার আপনাকে ডাকছেন উনি বাগানের ঐ সাইডে আছেন আপনি যান
আমিঃ হুম।তারপর আমি গেলাম গিয়ে দেখলাম বাগানের ভেতরটাও মরিচ বাতি দিয়ে সাজিয়েছে সুন্দর করে কিন্তু এখানে কেউ নেই। ওনাকে দেখলাম উনি এক সাইডে Drinks হাতে নিয়ে বসে আছে চেয়ারের মত একটা সিটে আর সিটটা এতোটাই উঁচু ছিল যে উনি বসেই আমার সমান Height লাগছে। কিন্তু আমি ভাবছি সিট টাই উঁচু নাকি উনিই বেশি লম্বা? যাইহোক ভাবনা বাদ দিয়ে ওনার কাছে গিয়ে দেখলাম উনিই বেশি লম্বা ।
-স্যার?
উনি আমার দিকে তাকালেন। আমি বললাম এইযে ফাইলটা। কিন্তু উনি শুধু আমারদিকে তাকিয়েই আছে। কিছু বলছেনা। আজ প্রথম আমি ওনার চোখের দিকে তাকালাম। সত্যিই মনে হচ্ছে ওনার চোখে অনেক প্রেম। আমি ওনার চোখের অনেক গভীরে হারিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ এক ঝটকায় আমাকে ওনার কাছে টেনে আমার কোমোর জরিয়ে ধরলেন বসে থাকা অবস্থাতেই।তখন আমার ঘোর ভাঙ্গলো।
– কি করছেন কি আপনি? ছাড়ুন আমাকে। স্যার প্লিজ আমাকে ছাড়ুন।
আশফিঃ উহুমম.. স্যার নয় আশফি। আশফি বলে ডাকো।
আমিঃ ওনার মুখ দিয়ে মদের গন্ধ আসছে আমার আর সহ্য হচ্ছেনা। প্লিজ আমাকে ছাড়ুন। না হলে আমি চিল্লাবো কিন্তু। কথাটি বলার সাথে উনি আমাকে আরও শক্ত করে ধরলেন।
আশফিঃ কিহ্ চিল্লাবে। চিৎকার করলে এখানে কে আসবে শুনি। আমাকে তো তোমার মানুষ মনে হয়না তাইনা। আমি তোমার কাছে আসলে তোমার অসহ্য লাগে। আর আসিফ? ওকে তোমার খুব ভালো লাগে, ও যখন তোমার হাত ধরে তোমার গাল টেনে দেয় তখন খুব শান্তি লাগে তোমার??? আমার সাথে কথা বলার সময় তোমার মুখে কথা থাকেনা, হাসি বন্ধ হয়ে যায়। খুব ভালো লাগে ওকে??
আমিঃ আমি ওনার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম এসব কি বলছে উনি?
– আপনি এসব কি বলছেন? আসিফ শুধুমাত্র আমার বন্ধু। এর বেশি কিছুনা।
আশফিঃ তাহলে আমার সাথে তুমি কেনো এমন করো। তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই। তুমি সেটা কেনো বোঝোনা মাহি। তোমাকে ছাড়া আমার যে থাকা অসম্ভব।তোমার জন্যই যে আমার দেশে আসা।আমি সহ্য করতে পারিনা যখন তুমি অন্য পুরুষের সাথে কথা বল, অন্য কারো হাত ধরো। শুধুমাত্র আমার চোখের সামনে তোমাকে রাখার জন্য নানা রকম বাহানায় তোমাকে আমার কাছে ডাকি। আর সেই তুমি সবমসময় আমার থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেরাউ। কেনো বলতো? তুমি কি আমার চোখ দেখে একটাবারের জন্যও বোঝোনি এই চোখে তোমার ভালোবাসা পাওয়ার আকুলতা? নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করো কোনটা? (কথাগুলো কান্না করে বলছিল)।
আমিঃ আমি কি বলবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তবে এটা বুঝতে পারছি ওনার নেশা হয়ে গেছে।
চলবে……..
সবগুলো পর্ব একসাথে