রোমান্টিক অত্যাচার পর্ব ১৮
_অন্তিম_পর্ব
লেখিকাঃ Israt Jahan Sobrin
ধারণাঃ Kashnir Mahi
..
আশফিঃ মাহি?মাহি? কোথায় তুমি? আশ্চর্য এই সন্ধ্যার সময় মেয়েটা কোথায় গেলো?ডাকছি কোনো সাড়া শব্দ নেই। মাহি? এই মাহি?
মাহিঃ কি হয়েছে? এত খোঁজ কেনো?
আশফিঃ খোঁজ নেবো না মানে? তার আগে বলো তুমি কোথায় ছিলে এতক্ষণ? আমি তোমাকে কখন থেকে ডাকছি। তুমি শুনতে পাওনি?
মাহিঃ না শুনতে পাইনি। বাগানের ঐ দিক টা তে ছিলাম।
আশফিঃ এই সময়ে তুমি বাগানের ঐ দিক টাতে কি করছিলে?
মাহিঃ (নিশ্চুপ)
আশফিঃ মাহি?? কি হয়েছে? বলো আমাকে? এদিকে এসো, আমার কাছে এসো। এখন বলো কি হয়েছে? মন খারাপ কেনো?
মাহিঃ তুমি ভুলে গেছো।
আশফিঃ না আমি ভুলিনি। কাল তোমার জন্মদিন। তো এতে মন খারাপের কি আছে?
মাহিঃ আশফি মা এখানে নেই। মাকে খুব মনে পড়ছে দেখতে ইচ্ছে করছে মাকে। এটাই কি স্বাভাবিক না?
আশফিঃ ও এই ব্যাপার? তাই বলো। তো ফোনে কথা বললেই তো হয়, ভিডিও কল করো।
মাহিঃ আশফি?? আমি মাঝে মাঝে সত্যি তোমাকে চিনতে পারিনা।
আশফিঃ রাগ করে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো। এই মাহি উঠো না। তোমার সাথে কত গল্প করতে চাইলাম আমি। কি হলো উঠবেনা? ঠিক আছে। তাহলে আমি ও একটু রেস্ট নিই। ১১:৪৮ বাজে। না খেয়েই ঘুমিয়ে পরলো মেয়েটা। একটু বেশিই আবেগি।
মাহিঃ উফফ এভাবে মাঝরাতে এলার্ম বাজার কোনো মানে হয়? এই শুনতে পাচ্ছো এলার্ম টা অফ করো? কি হলো? ধুর বাবা আর ভালো লাগেনা। আশফি? আরে ও কোথায়? এ কি সারা ঘরে মোমবাতি জ্বালানো কেনো? ওহ্ মনে পড়েছে সারপ্রাইজ!! আমি সত্যিই সারপ্রাইজড। এভাবে মাঝরাতে ঘুম ভাঙ্গিয়ে কে বলেছিল ওকে সারপ্রাইজ দিতে? আমি বিছানা থেকে উঠে ওকে খুঁজতে গেলাম। হঠাৎ কেউ আমার সামনে এসে দাড়ালো। আমি জানি এটা আশফি ছাড়া কেউ হতে পারেনা। আমি ঘরের লাইট টা জ্বালিয়ে দিলাম। হুম উনিই আমার সামনে দাড়িয়ে আছেন। মুখ চিপে হাসছেন। কি হয়েছে? এভাবে অন্ধকারে চুরেলের মত দাড়িয়ে হাসছো কেনো? আরে…..আজব হেসেই যাচ্ছে তো হেসেই যাচ্ছে। এই?হাসি বন্ধ কর(ধমকের সুরে)। কি হয়েছে?
মাঃ মাহি??
মাহিঃ মা?? তুমি? মাকে জড়িয়ে ধরলাম। মা তুমিও ওর মত শিখে গেছো তাইনা?
মাঃ হ্যা। খানিকটা। সব ওর ই প্ল্যান ছিল।
আশফিঃ হুহকত রাগ ই না দেখালো আমাকে? না খেয়েই শুয়ে পড়লো। আবার বলে কিনা আমি চুরেল।
মাঃ আচ্ছা এখন থাম। আমি খাবার রেডি করছি। আজকে তোদের দুজনকেই আমি খাইয়ে দিব।
মাহিঃ অনেক খুশি লাগছে আমার। তাহলে এই সারপ্রাইজ ছিল আমার জন্য! কি হয়েছে ওভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
আশফিঃ হুহ তাকাচ্ছিনা আর। আমি মুখটা ঘুরিয়ে বেরিয়ে আসতে গেলাম ও তখন আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
মাহিঃ এই তুমি এতো কিউট কেনো?
আশফিঃ না তো। আমি তো চুরেল।
মাহিঃ উহুম। তুমি তো আমার Little heart.
আশফিঃ তাই? তাহলে লিটিল করে একটা পাপ্পি দাও।
মাহিঃ হুম???
আশফিঃ হুম। ও একটু উঁচু হয়ে আমার ঠোঁটে চুমু দেওয়ার জন্য এগিয়ে এলো তখন মামনি পেছন থেকে ডাক দিল খেতে আসার জন্য। তাই আর পাপ্পিটা নেওয়া হলোনা। রাতে খেয়ে দেয়ে আমরা সবাই একসাথে বেডরুমে বসে গল্প করছি। মাহি মামনির কাঁধের ওপর মাথা রেখে গল্প শুনছে আর আমি মামনির কোলের ওপর মাথা রেখে শুয়ে আছি। মামনি তুমি কিন্তু আজকে ওর কাছে থাকবেনা আমার কাছে থাকবে।
মাঃ আচ্ছা সে দেখা যাবে তোরা ঘুমোবি কখন?
মাহিঃ মা আর একটু গল্প করিনা। আজকের এই রাতটা আমার জীবনের সব থেকে শ্রেষ্ঠ্য রাত।
মাঃ কথা বলতে বলতে অনেক সময় পার হয়ে গেছে। দুটোই ঘুমিয়ে পরেছে। মাহি কে শুইয়ে দিলাম আর আশফির মাথার নিচে বালিশ দিয়ে আমি রুম থেকে বেরিয়ে এলাম।
★সকালবেলা★
আশফিঃ রাতে এভাবেই ঘুমিয়ে পরেছিলাম? ওটা কোথায় গেলো? বাহ্ কি সুন্দরভাবে ঘুমিয়ে আছে। আর একটু ওপাশ ঘুরলেই তো নিচে ঠাস। সকাল সকাল একটু মজা নেওয়াই যায় ওর সাথে। ওর কাছে গিয়ে ওর কানে জিহ্বা দিয়ে হালকা ভাবে শুরশুরি দিলাম। আর তখনই ওপাশ ঘুরেই নিচে পরে গেলো।
মাহিঃ আহ্। আশফি? তুমি আসলেই একটা গন্ডার। না হলে এরকম কেউ করে?
আশফিঃ গন্ডার আমি না তুমি। যেভাবে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছিলে। এখন উঠো। উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও। আজকে আমরা সারাদিন বাইরে সময় কাটাবো।
মাহিঃ সত্যি??ঠিক আছে আমি এক্ষনি যাচ্ছি। তারপর আমি আশফি আর মা সবাই একসাথে বাইরে ঘুরতে এলাম। অনেক এনজয় করছি। এতো খুশি হয়তো আমি কোনোদিনও হয়নি। আশফি মায়ের ছবি তুলছে আর আমি ওর পাশে দাড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছি। ওর সাথে একটু দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে হলো। তাই ঠোঁটে একটু আইসক্রিম জড়িয়ে ঠোঁট টা কিসের স্টাইল করে নাক শিটকোচ্ছি ওর দিকে তাকিয়ে। ও তখন আমার দিকে ঘুরে আমার ঠোঁট থেকে আইসক্রিম টুকু চেটে খেলো। আমি তখন ছোট্ট করে একটা স্মাইল দিলাম। আর আশফি তাকিয়ে হেসে দিল।
আশফিঃ মাহি আমাদের এখন আর একটা জায়গায় যাওয়ার আছে।
মাহিঃ কোথায়?
আশফিঃ তোমার বাবার কবর জিয়ারত করতে। তারপর ওদের নিয়ে বাবার কবর জিয়ারত করছি আমরা। মামনি খুব কাঁদছে ওনার কবরের সামনে দাড়িয়ে। আমি আর মাহি ওনার জন্য দোয়া করে এক পাশে এসে দাড়িয়ে আছি। মামনি ওনার কবরের সামনে দাড়িয়ে ওনার জন্য দোয়া করছেন। হঠাৎ দুজন লোক মামনির পেছনে এসে দাড়ালো। ওরা কিছু করার আগেই আমার গার্ড ওদের শুট করে দিল। আমি তখন মামনি কে ওখান থেকে তাড়াতাড়ি সরিয়ে আনার জন্য এগিয়ে গেলাম তখন মাহি পেছন থেকে চিৎকার দিয়ে উঠলো। ওরা শুধু দুজন ছিলনা। চারপাশ ঘিরে ফেলেছে আমাদের। আর দুটো ছেলে মাহির মাথায় গান ধরে রেখেছে। আমি কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলামনা। আমার গার্ডের সংখ্যা বেশি ছিলনা। আমি কোনো কিছু না ভেবেই মামনির কাছে না গিয়ে মাহির কাছে যে দুজন ছিল তাদের শুট করে দিলাম। কিন্তু আমার গার্ডের সংখ্যা মাত্র চারজন থাকায় ওরা ওদের সাথে পারছিলনা। আমি মাহির কাছে দৌড়ে যাওয়ার আগেই মাহি মা বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো। আমি একবার পেছনে তাকালাম। কিন্তু ঐ দৃশ্য আমি আর সহ্য করতে পারলামনা। ওরা যখন মাহিকে টার্গেট করে শুট করতে যাবে আমি তখন সেখান থেকে ওকে সরিয়ে নিয়ে তাড়াতাড়ি দৌড়ে এসে সোজা গাড়িতে উঠে বাসায় চলে এলাম। ওরা অনেক্ষন আমাদের গাড়ির পিছু নিয়েছিল।মাহিকে বাঁচানোর জন্য সেখান থেকে পালিয়ে আসা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিলনা । মাহি সেন্স হারিয়েছে। ওকে গাড়ি থেকে কোলে তুলে নামিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম। বেশকিছুক্ষণ পর ওর সেন্স ফিরলো। সেন্স ফেরার পর ও শুধু একবার মা বলে চিৎকার করে ডেকে স্তব্ধ হয়ে গেলো। অনেক বার মাহিকে ডাকছি ও কোনো সাড়া দিচ্ছেনা। ওর এ অবস্থা দেখে ডঃ ওকে ঘুমের মেডিসিন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিল। আমি ওর এই অবস্থা তাকিয়ে দেখতে পাচ্ছিনা। আর তার ওপর আজকে চোখের সামনে যা ঘটে গেলো আমি নিজেই নিজেকে সামলাতে পারছিনা আর ও কিভাবে সেটা সহ্য করবে। চোখের সামনে ওরা মামনির গলা ছুরি দিয়ে কেটে দিল। আর আমি মামনিকে বাঁচাতে পারলামনা।কাল সকালে মামনির দাফন। আরও একজন আপন মানুষ আমার চোখের সামনে মারা গেলো আমি কিচ্ছু করতে পারলামনা। আমি কিভাবে মামনির দাফন কার্য সম্পূর্ণ করবো?( কেঁদে বলছিল)। সারা রাত মাহির পাশে বসে আছি আর চোখের পানি ফেলছি। ঠিক সেই দিনটার মত আজকে আবারও নিজেকে অসহায় লাগছে। আর পারছিনা এসব সহ্য করতে। আমি এবার সত্যি মরে যাবো। না আমি এসব কি ভাবছি আমাকে তো মাহির জন্য বাঁচতে হবে। ওকে সামলাতে হবে। আমি এভাবে ভেঙ্গে পরলে ওর কি হবে। নিজেকে বহু কষ্টে সামলে নিলাম। ভোর হয়ে গেছে মাহি কে কড়া ডোজের ঘুমের মেডিসিন দিয়েছে তাই এখনো ঘুমাচ্ছে। আমি মামনির জানাযার ব্যবস্থা করছি। মাহি ঘুম থেকে উঠেছে কখন আমি খেয়াল করিনি। মামনির লাশের পাশে বসে মামনির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে নিরবে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে শুধু কাঁদছি। এর মাঝে পুলিশ এসে আমাকে বললো এবার ও কোনো এভিডেন্স কালেক্ট করতে পারেনি। আমি শুনে শুধু চুপ করে দাড়িয়ে আছি আর চোখের পানি ফেলছি। কিছুক্ষণ পর মামনির দাফনের ব্যবস্থা করে বাসায় ফিরলাম। মাহি ঠিক আগের স্থানেই পাথরের মত হয়ে বসে আছে যেখানে বসে ছিল মামনির কাছে। ওর এরকম অবস্থা দেখে আমার মাথা কাজ করছেনা। এত বড় ধাক্কা পেয়েছে ও। এতে ওর আবার বড় কোনো ক্ষতি হয়ে যাবেনা তো। আমি তাড়াতাড়ি ওর কাছে গেলাম। মাহি? এই মাহি? তুমি কোনো কথা বলছোনা কেনো? তুমি কি খুব অসুস্থ বোধ করছো? দাড়াও আমি এক্ষনি ডঃ কে ফোন করছি।
মাহিঃ আশফি, আমি একদম ঠিক আছি। (স্বাভাবিক কন্ঠে)
আশফিঃ কথাটা বলে ও উঠে রুমে চলে চলে গেলো। ও কি আমার ওপর অভিমান করেছে? আমি মামনি কে বাঁচাতে পারিনি বলে? হ্যাঁ এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু ও আমার থেকে এভাবে দূরে চলে গেলে আমি কিভাবে বাঁচবো? আমি রুমে গেলাম। দেখলাম ও বসে মামনির ছবির দিকে তাকিয়ে কি যেনো ভাবছে। কিন্তু ওর চোখে কোনো পানি নেই। ওর এই স্বাভাবিক থাকাটাই আমার কেমন যেনো অস্বাভাবিক লাগছে। আমার চোখ থেকে এখনো অঝরে পানি পরেই যাচ্ছে কিন্তু ও কিভাবে এতো স্বাভাবিক আছে? আমাকে ওর সাথে কথা বলতে হবে। আমি ওর কাছে গিয়ে বসলাম। আমি ওকে কিছু বলার আগেই ও কথা বললো।
মাহিঃ আশফি? মায়ের বডি কি পোস্টমর্টেম করা হয়েছে??
আশফিঃ আমি ওর এই কথা শুনে অবাক না হয়ে পারলামনা। না, আমি করতে দেইনি। আমি চাইনি মামনির শরীর ক্ষত বিক্ষত করুক ওরা।
মাহিঃ হুম। অনেক ধন্যবাদ।
আশফিঃ দিন পেরিয়ে রাত হয়ে গেলো। মাহি সবকিছু কেমন স্বাভাবিক ভাবে যেনো মেনে নিচ্ছে।সব কজ করছে স্বাভাবিকভাবে। কিন্তু মুখে কোনো হাসি নেই। রাতে ডিনার করে ও এসে শুয়ে পরলো। ওকে দেখে আমার খুব টেনশন হচ্ছে। আমি পাশে গিয়ে শুয়ে পরলাম। ও কোনো কথা বলছেনা। ঘুমিয়ে পরেছে হয়তো। রাত ২:৩০ টা বাজে আমার চোখে এখনো ঘুম নেই। আমি উঠে বেলকোনি তে গিয়ে দাড়ালাম।মামনির সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা ভাবছি আর চোখের পানি ফেলছি। নাহ্ এভাবে আর চোখের পানি ফেলে সময় নষ্ট করবোনা। এক এক করে সবাইকে ওরা কেড়ে নিচ্ছে। মাহির কোনো ক্ষতি হওয়ার আগে আমাকে ওদের মোকাবেলা করতে হবে তাতে যা হওয়ার হবে। পুলিশের ওপর আর ডিপেন্ড করা যাবেনা। মাহির কথা মনে পড়ে ঘরে এলাম। এ কি মাহি কোথায়? নিচ থেকে(ড্রয়িংরুম)গুলির শব্দ এলো আমি দৌড়ে নিচে নেমে গেলাম। দেখলাম ও একটা শ্যাম্পেইনের বোতলের মিড পয়েন্টে গুলি করার চেষ্টা করছে কিন্তু বার বার মিস হচ্ছে। আমি পেছন থেকে ওর দুহাত বোতলের মিড পয়েন্টে তাক করে ধরে শুট করলাম। এবার গুলিটা বোতলের মাঝে লেগে ভেঙ্গে গেলো। তারপর ও হাত দুটো নিচে নামালো। নিঃশব্দে দাড়িয়ে কাঁদছে আমি ওকে বাঁধা দিচ্ছিনা। ও সামনে ঘুরে আমাকে জড়িয়ে ধরে একবার মা বলে ডেকে কেঁদে উঠলো। আমিও নিজেকে সামলাতে পারলামনা। ওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছি। তারপর ওকে ঘরে নিয়েলাম।
মাহিঃ আশফি আমি নিজেকে বদলাতে চাই।
আশফিঃ আমি বুঝতে পেরেছি ও কি বলতে চাচ্ছে। ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে ওকে ঘুমাতে বললাম। খুব ভোরে মাহি আমাকে ডেকে তুললো। আজ থেকে মাহি নিজেকে নতুন করে প্রস্তুত করবে। মাহির এই উদ্যম তেজ ই আমাকে নতুন করে শক্তি দিচ্ছে।
মাহিঃ আশফি? শুরু করা যাক।
আশফিঃ হুম। এসো। আমি মাহিকে শুট করা থেকে শুরু করে কুংফুর প্রতিটা স্টেপ শেখালাম। বেশি সময় লাগেনি। ৩ মাসের ভেতর মাহি নিজেকে যথেষ্ট পারফেক্ট ভাবে গড়ে তুলেছে।
মাহিঃ আশফি, আমি ভেবে নিয়েছি আমার সব প্রপাটি বেসরকারি যে প্রতিবন্ধী দের হেল্প ফান্ড রয়েছে সেখানে দিয়ে দিব। আর তুমি এটা আজই নিউজপেপারে হেডলাইন করে দাও।
আশফিঃ ওকে ডিয়ার।(মুচকি হেসে)
মাহিঃ আজকে সন্ধ্যাই আমি আর আশফি গাড়িতে করে কোর্টের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম কোনো বডিগার্ড ছাড়াই। তারপর যেটা হলো আমাদের দুপাশে দুটো গাড়ি এসে আমাদের গাড়িটা আটকে ধরলো। আমরা সারেন্ডার করলাম ওদের সামনে। ওরা কিছুটা অবাক হয়ে আমাদের কিছু না করে ওদের বসের কাছে নিয়ে গেলো। আমাকে একটা রুমে আটকানো হলো। আর আশফিকে আমার কাছ থেকে নিয়ে গেলো। আমি তো চুপচাপ বসে আছি আমি জানি আমার আশফি এখন কি করছে। এখন শুধু চারপাশ থেকে গুলির আওয়াজ আসছে। শুধুমাত্র ওদের কাছে পৌঁছানোর জন্য এতো প্ল্যান। এখন সব গার্ড এখানে পৌঁছে গেছে। চাইলে পুলিশ কে ইনফর্ম করতে পারতাম। কিন্তু আমি নিজে চোখে ওদের মৃত্যু দেখতে চাই। হঠাৎ ২ টা রোবট ভেতরে ঢুকে আমাকে বের করে নিয়ে ঐ শয়তান টার সামনে নিয়ে গেলো। তার মানে কি? আশফি কিছুই করতে পারেনি। গিয়ে দেখলাম ওরা সত্যি আশফি কে ধরে রেখেছে। তবে এরা কেউ মানুষ নয়। সবাই রোবট। এই শয়তানটার এতো ক্ষমতা তবুও এই প্রপাটির জন্য এত কিছু করেছে শুধুমাত্র সমাজের সামনে ছদ্মবেশে থাকার জন্য। আমাকে আশফির পাশে নিয়ে দাড় করালো। আশফি? এখন কি হবে? মানুষ গুলোকে shoot করা গেলেও এদের কি করবে?
আশফিঃ ডিয়ার এতো টেনশন নিওনা। একটু পরেই এই রোবট গুলো একাই থেমে যাবে।
মাহিঃ কিভাবে??
আশফিঃ হুম। আমি জানতাম ওর অনেক পাওয়ার তাই সে ব্যবস্থা আমি এখানে ঢুকেই করেছি। আমার গার্ড দের ইনফর্ম করে দিয়েছি। ওরা সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে গিয়েছে। এই রোবট গুলোর প্রত্যেকটা র মেইন সফটওয়্যারে একই কোড দেওয়া। আমার একটা গার্ড অলরেডি ঐ সফটওয়্যার এর কোড হ্যাক করে রেড বাটনে ক্লিক করে দিয়েছে। প্রসেসিং চলছে। আস্তে আস্তে সবগুলোই মাটিতে পরে যাবে।
মাহিঃ ওয়াও ইউ আর সো ব্রিলিয়ান্ট। অলরেডি রোবট গুলোর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে জ্যাক কং(মাফিয়ার leader) চিল্লা চিল্লি করছে আর আমাদের জাপানিজ language এ গালাগাল দিচ্ছে। তারপর ওর ছেলে কে ইশারায় আমাদের মেরে দেওয়ার কথা বললো। তখন পেছন থেকে জ্যাক কং এর ছেলে আশফির মাথায় গানের পেছন দিয়ে আঘাত করলো। ও মাথা ধরে নিচে বসে পরলো। আশফির মাথার রক্ত দেখে নিজেকে আর কনট্রোল করতে পারিনি। সোজা ওর তল পেটে গায়ের সমস্ত জোড় দিয়ে লাথি মেরে দিয়েছি। আমাকে শুট করার আগে ওর হাত থেকে গান টা কেড়ে নিয়ে সোজা ওর কপালে শুট করে দিয়েছি। এবার জ্যাক কং আমাকে মারার জন্য এগিয়ে এলো। আশফি উঠেই ওকে মেরে নিচে ফেলে দিল। কিন্তু তারপরেও নিজেকে সারেন্ডার করছেনা। একবার মনে হলো আমি নিজেই ওর গলা কেটে নামিয়ে দিব। কিন্তু আমার হাত কাঁপছিল। সাহস পাচ্ছিলামরা। আমি আশফিকেই এই কাজ টা করতে বললাম। আমি পেছন ঘুরে আছি। আশফি ছুরি দিয়ে ওর গলা কেটে নামিয়ে দিল। আমি চোখ বন্ধ করে আছি। আর ঐ শয়তানটার আতর্নাদ শুনতে পাচ্ছি।
আশফিঃ Dear.Let’s go.
মাহিঃ আমি আশফির ডাক শুনে ওর দিকে তাকালাম। বিজয়ের হাসি দেখতে পাচ্ছি ওর ঠোঁটের কোণে।
আশফিঃ ও আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বুঝতে পারছি ও কতোটা খুশি। আমি ওর কাছে গিয়ে ওর ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে ওকে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।
★★Marriage anniversary ★★
এক বছর পূর্ণ হলো ওদের বিয়ের।
আশফিঃ মাহি জলদি উঠো। আজকের দিনেও এভাবে ঘুমোবে? আমাদের তো বেরোতে হবে? কি ঘুম!! আমি ডেকেই যাচ্ছি আর ও শুধু হুম হুম করছে। আমি ওর কাছে গিয়ে ওর নাকের মাথায় ছোট্ট করে কামড় দিলাম।
মাহিঃ উহহহ। আশফি? কি করছো বলো তো? এভাবে কেউ ঘুম ভাঙ্গাই?
আশফিঃ আমি তোমাকে ডাকছি কখন থেকে? তুমি কি ভুলে গেছো আজকে কি?
মাহিঃ একদম না।
আশফিঃ তাহলে তাড়াতাড়ি উঠো। যাও ফ্রেশ হয়ে নাও। ও ফ্রেশ হয়ে বাইরে এলো। ওকে নিয়ে আমাদের দুজনের বাবা মায়ের কবর জিয়ারত করে বাসায় ফিরলাম। ও এসে আবার শুয়ে পরলো।
মাহি এসব কি?
মাহিঃ কি?
আশফিঃ আজকে আমাদের বিবাহ বার্ষিকী। বাসায় পার্টির arrangement করতে হবে। কত guests আসবে জানো তুমি??
মাহিঃ খবরদার। বাসায় একদম পার্টির কোনো arrangement করবেনা। আজকের দিন আর রাত টা শুধু আমি আর তুমি একা উপভোগ করবো।
আশফিঃ Really??
মাহিঃ ওর হাতটা ধরে এক টানে আমার কাছে নিয়ে এলাম। হুম… Really. তারপর আমি ওর গালে চুমু দিতে শুরু করলাম।
আশফিঃ মাহি কি করছো? সবাই তাকিয়ে দেখছে তো।
মাহিঃ উফফ সবাই এখানে কোথা থেকে এলো?
আশফিঃ আরে সামনে তাকিয়ে দেখো পাবলিকেরা তাকিয়ে আছে।
মাহিঃ তাই নাকি?? ওহহো তাই তো। প্লিজ প্লিজ আপনারা অনেক দেখেছেন এবার থামুন। আর দেখতে হবেনা।
আশফিঃআমরাও আর দেখতে দেবোনা।
তারপর মাহি আশফি কে নিয়ে কম্বলের নিচে ঢুকে পরলো। এরপর বাকিটা ওদের মাঝেই থাক।
সবগুলো পর্ব একসাথে