এক সমুদ্র প্রেম পর্ব ৩১
লেখনীতে: নুসরাত সুলতানা সেঁজুতি
(৩১)
পিউয়ের ওষ্ঠযূগল ঠকঠক করে কাঁ*পছে। ভ*য়ার্ত দুটি আঁখি ধূসরের র*ক্তাভ চেহারায়। ফর্সা মানুষ কাঁ*দলে, হাসলে,লাল হতে দেখেছে সে। কিন্তু শ্যামলা বর্নেও ধূসর লালিত হয়, অতিরিক্ত ক্ষো*ভে। নিঃশ্বাসে পায় হিঁসহিঁস শব্দ। দুপাশের চিবুক সহ কপালের শিরা ফোটে। চোখা নাক ওঠানামা করে। এই লক্ষন গুলো তাকে নিশ্চিত করে’ ধূসর ভাইয়ের ভয়া*বহ ক্রো*ধ নিয়ে’
। পিউয়ের মাথা তখনও ঘুরছে। টলছে পা দুটো। বলিষ্ঠ হাতের চ*ড় খেয়ে টাল-মাটাল অবস্থাপ্রায়। শক্ত করে চে*পে রাখা ধূসরের হাত আরও সুদৃঢ় হলো। পিউ বিমুঢ় নেত্রে তাকিয়ে। অবিশ্বাস চোখেমুখে। সে কি আসলেই দুটো থা*প্পড় খেয়েছে? তাও ধূসর ভাইয়ের হাতে? পিউয়ের বুক ভে*ঙে পরে দুঃ*খে। ধূসর ভাই এত জোরে কী করে মা*রতে পারলেন? সে কাঁদো*কাঁদো কণ্ঠে বলতে গেল ‘আপনি আমায় মার*লেন?’
অথচ দুই ঠোঁট নেড়ে’ আপনি’ টুকু উচ্চারণ করার সাথে সাথে আরেকটা চ*ড় পরল গালে। পিউ বিস্ময়াহত, স্তব্ধ। ধূসর ভাই হ্যাট্রিক করে ফেললেন থা*প্পড়ে। তিন তিনটে চ*ড় খেয়ে পিউয়ের স্বচ্ছ নেত্র ঝাপ্সা তখন। শ্বাসনালী শুকিয়ে কাঠ। মনে হচ্ছে মাথার ওপর,পায়ের তলা সব ফাঁকা। মধ্যিখানে ভাসমান সে।
‘ কোন সাহসে ম*রতে যাচ্ছিলি?’
রুষ্ট কণ্ঠে পিউয়ের হুশ ফিরল। কান,মাথা ঝিমঝিম করছে। পর্দাটা ফে*টে গেছে নির্ঘাত। এত ঝুট ঝামেলার মধ্যে, নিজেই ভুলে বসেছিল কথাখানা। দুপুরে বি*ধ্বস্তপ্রায়, সে এগিয়েছিল আত্ম*হননের পথে। মারিয়া সময় মতো না এলে সে যে এতক্ষণে ওপরে থাকত।
নিজে ভুলে গেলেও কী,একজনের কানে কথাটা ঠিকই পৌঁছে গিয়েছে। পিউ ভীত ঢোক গি*লল। মনে মনে বলল,
‘ আপনি আমায় বাঁচিয়েও সিংহের গুহায় ঠেলে দিলেন মারিয়া আপু? কী দরকার ছিল ধূসর ভাইকে জানানোর! আজ যে আমি শেষ!’
ধূসরের মুঠোয় থাকা তার কনুইয়ে চাপ পরে। বাঁধন শক্ত করেছে সে। এই ব্য*থার চেয়েও বাম গালের যন্ত্র*না অধিক। এখানেই যে টসটসে দুটো থা*প্পড় পরেছে।
পিউ অসহায় চোখে তাকাল। যদি ধূসর ভাইয়ের একটু মায়া হয়! কিন্তু লাভ হলোনা।
ধূসর দন্ত চিবিয়ে বলল,
‘ গাড়ির তলায় পরতে যাচ্ছিলি তাইনা? এতই ম*রার ইচ্ছে যখন বাইরে কেন, বাড়িতে বসে ম*র।’
পিউ বলতে চাইল কিছু। চাইল সাফাই গাইবে নিজের। ধূসরের লাল চোখ দেখে সাহসে কূলায়না।
তবে চুপ থাকাটাও কাল হলো। ধূসরের হাত, তার কনুই থেকে উঠে এলো গালে। সদ্য খাওয়া মারের জায়গায় এভাবে চে*পে ধরায় পিউয়ের অবস্থা করুণ হলো।
সে আর্ত কণ্ঠে বলল
‘ আর করব না ধূসর ভাই,আর করবনা।’
কিছু কথা ফুটল, কিছু ফোটেনি। ধূসর একইরকম প্রতাপ সমেত আওড়াল,
‘ তোর দুঃসাহসের জবাব নেই পিউ। ম*রতে চাইছিলি, বাসের নীচে পরতে চাইছিলি। ব্য*থা লাগতো না? তাহলে আজ আমিও দেখি, তুই কত ব্য*থা সহ্য করতে পারিস।’
পিউয়ের চোয়াল ঝুলে পরে। বক্ষস্পন্দন থমকায়। বুঝতে বাকী নেই,আজ রক্ষে নেই তার। ধূসর ভাই মা*রতে মা*রতে বেহুশ না বানিয়ে থামবেন না। গালে চাপ পরতেই সে চোখ খিচে ফেলল। ধূসর হাত সরাতেও পারেনি,আচমকা ঢলে পরতে নেয় পিউ। ধড়ফড়িয়ে ধরে ফেলল ধূসর। পিউয়ের কোমড় গিয়ে ঠেকল তার হাতে। নিমিষেই অজ্ঞান হয় মেয়েটা।
ধূসর আঁ*তকে ওঠে,হতভম্ব হয়।
‘ এই পিউ,কী হলো? পিউ!’
সাড়া শব্দ নেই। ধূসরের বুক ধ্বক করে উঠল। অন্তঃস্থলে তুফান। তাড়াহুড়ো করে পিউকে কোলে তুলল। নরম বিছানায় জায়গা পেলো ওর শুকনো শরীর। ধূসর ঝুঁকে, গাল চাপড়ে,উদগ্রীব হয়ে ডাকল,
‘ পিউ! এই পিউ! পিউ! ‘
শেষ দিকে গলা অস্পষ্ট তার। বক্ষগহ্বর হা হুতাশ করছে। ভেতর থেকে কেউ প্রতিবাদ জানাল,
‘ এতটা উচিত হয়নি ধূসর। তুমি একটু বেশিই স্বৈরাচার করছো।’
সে বোঝাতে চাইল,’ আমার অপরাধ? কেন ও ম*রতে যাবে? কোন সাহসে? ও ছাড়া একটা মানুষের পৃথিবী কতটা শূন্য ও জানে?’
স্বত্তাটা বলল,
‘ তুমি জানিয়েছো? ‘
ধূসর চুপ করে যায়। উত্তর নেই কাছে। অস্থির,অশান্ত হয়ে আবার পিউকে ডাকে। মেয়েটা কথা বলছেনা। চোখ মেলছেনা। ধূসর করুণ নেত্রে তার মুখের দিক তাকিয়ে থাকল। গালে বসে যাওয়া আঙুলের ছাপে হাত বোলাল। চোখ জ্ব*লে ওঠে,চিকচিকে দেখায়। কোনা উত্থলে পরার আগেই,ধূসর আঙুল দিয়ে ছিটকে ফেলল অশ্রু। চকিতে উঠে গেল টি-টেবিলের কাছে। উৎকণ্ঠায় পানি ছেটানোর কথাটাই ভুলে বসেছিল।
পিউ আস্তে করে এক চোখ খুলল। অন্য চোখটা পিটপিট করছে। খুলে যাবে যে কোনও সময়। ধূসরের দিক চক্ষু রেখেই সন্তর্পনে উঠে বসল। নিঃশব্দে বিছানা থেকে নেমেই হুড়মুড়িয়ে ভো দৌড় লাগাল। রীতিমতো ঝড়ের গতিতে ছুটে বেরিয়ে গেল বাইরে।
শব্দ পেয়ে ধূসর চটজলদি ফিরে তাকায়। ভ্যাবাচেকা খায় পিউয়ের ছোটা দেখে। ভ্রুঁ গুছিয়ে ফাঁকা বিছানা দেখল পরপর। এর মানে এই পুঁচকে মেয়ে জ্ঞান হারানোর নাটক করেছে? ধূসরের শান্ত, উদ্বিগ্ন চেহারা থমথমে হলো। ক্ষি*প্ত হলো মুহুর্তে । আওয়াজ করে পানি ভর্তি গ্লাসটা রেখে দিলো টেবিলের ওপর। আশেপাশে জল উপচে পরল রাখার তোপে।
পিউ দরজার দুটো ছিটকিনিই তুলে দিলো। পড়ার টেবিলের সামনে থেকে কাঠের চেয়ারটা টেনে হিচ*ড়ে এনে ঠেস দিলো৷ যাতে কিছুতেই ধূসর ভাই ঢুকতে না পারেন।
বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিলো। পরপর গালে হাত বোলাল। অবশ সব। মারাত্মক জ্ব*লছে! এত জোরে কেউ মা*রে? পাষণ্ড লোকের,হাতুড়ে হাত!
ধূসরের রা*গ সপ্তম আকাশে চড়ে বসে দোর আটকানো দেখে। সেদিন এই দরজা খোলা নিয়ে বাড়ির লোক জড় হওয়ায় আজ ধা*ক্কা দিতে গিয়েও থেমে গেল। তবে কটমট করে ঘোষণা করল,
‘ আমিও দেখি, তুই কতক্ষণ লুকিয়ে থাকতে পারিস!’
হুমকিতে পিউ ঢোক গি*লল। স্পষ্ট পাচ্ছে ধূসরের পায়ের শব্দ। আস্তে আস্তে শিথিল হচ্ছে তা। এর মানে উনি চলে গেছেন। পিউ হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। গাল ব্য*থায় চোয়াল নাড়ানোর জো নেই। সে হতাশ হয়ে চেয়ারটার ওপরেই বসে পরে।
‘ এর থেকে বাসের তলাতে পরাই ভালো ছিল। এখন যে জান হাতে নিয়ে পালাতে হবে!’
*****
ধূসর অফিসে যায়নি আজ। পার্লামেন্টে দরকারি কাজ পরেছে। আগামীকাল থেকে রাস্তায় ওদের দলীয় স্লোগান নামবে। নির্বাচনের কিছুদিন বাকী মাত্র। দৈনন্দিন হিসেব অনুযায়ী, আজ ছয়টার স্থানে নয়টায় খাবার টেবিলে এলো। এসেই হো*চট খেল। টেবিল ভর্তি খাবার আর চেয়ার ভর্তি মানুষের মাঝে পিউ নেই। ধূসর এসে বসল। সেদিনের মত অপেক্ষা করতে করতে সময় যাচ্ছে। পিউ আসছেনা। শেষে ধৈর্য হারিয়ে প্রশ্ন করল,
‘ পিউ ওঠেনি পুষ্প?’
পুষ্প খাওয়া থামিয়ে জবাব দেয়,
‘ আমি জানিনা ভাইয়া। তোমার একটু আগেই এসে বসেছি।’
সুমনা বললেন,
‘ কে পিউ? ওতো সেই কখন বেরিয়েছে!’
ধূসর অবাক হয়ে বলল,
‘ বেরিয়েছে মানে? কোথায় গেছে?’
শেষের দিকে কণ্ঠ মোটা হয় তার। সুমনা বললেন,
‘ কোথায় আবার, পরীক্ষা দিতে। আজকের পরীক্ষা না কি তাড়াতাড়ি শুরু হবে? ওইজন্যেইত নাস্তা না খেয়ে হুটোপুটি করে ছুটল।’
ধূসর জিজ্ঞাসু চোখমুখ শিথিল করল। দৃষ্টি ফিরিয়ে এনে থালায় রাখল। হিসেব মত রা*গ হওয়ার কথা,অথচ ফোস করে শ্বাস ফেলল। আচমকা ঠোঁটের কোনে ফুটল তীর্যক হাসি। মেয়েটা ওর হাত থেকে পালাতে আগেভাগে বেরিয়েছে। ধূসর ঠোঁট কা*মড়ে হাসল,ভাবল,
‘ ঘুরেফিরে তো আমার কাছেই আসবি পিউ। তোর লুকোনোর জায়গা আছে?’
যেমন হঠাৎ করে হেসেছে,ওমন অচিরেই হাসি গায়েব হয়।সে নিজেও বিশেষ কিছু খেলোনা। কোনও মতে একটা পরোটা খেয়ে উঠে গেল। কেউ একজন পাশে না থাকলে গলা দিয়ে খাবার নামেনা যে!
আজকে থেকে নিদারুণ ব্যস্ততা শুরু হবে। ইকবাল তো ইকবাল। সভাপতি হয়েও কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়ায়! একটু চিন্তাও নেই তার। কারণ, ধূসর আছেতো!
আজকে আর সময় হবেনা। নাহলে এই পুচকির না খেয়ে আগে আগে বেরিয়ে যাওয়া কলেজে গিয়ে ছোটাত। ধূসর ব্যস্ত পায়ে বাইক ছুটিয়ে বেরিয়ে যায়। বাড়িতে কখন ফিরবে তারও ঠিক নেই।
****
পিউ অনেকক্ষন বসে আছে,তানহার দেখা নেই। সবে বাজে নটা বিশ। পরীক্ষা দশটায়। ধূসরের সামনে পরবেনা বলে একপ্রকার পালিয়ে এলো। হাতের বাটার নানে দুটো কা*মড় বসিয়ে এদিক ওদিক তাকাল। হাতঘড়িতে চোখ বোলাল। ‘ চ’ বর্গীয় শব্দ করে বিড়বিড় করল,
‘ আয় রে মেয়ে,আয়। আর কত পড়বি?’
তানহা এলো আরো পনের মিনিট পার করে। পিউ তখন প্যারেন্টস ছাউনীতে বসে। ওকে দেখেই ছুটে গেল সে। অবাক হয়ে বলল,
‘ তুই এত তাড়াতাড়ি এলি যে? ‘
পিউ তাকাল। তানহাকে দেখতেই ঠোঁট সরে গেল দুদিকে। চঞ্চল কণ্ঠে বলল,
‘ তুই এসছিস?আমি এতক্ষণ বসে বসে এত্ত বোর হচ্ছিলাম!
তারপর হাতের রুটি এগিয়ে দিয়ে শুধাল ‘ খাবি?’
তানহা বিস্ময়াবহ।
তার ভ্রুঁ দুটো বেঁকে গেছে। চিন্তিত কণ্ঠে ভাবল
‘ ও হাসছে কেন? ধূসর ভাইয়ার বিয়ের শোকে পাগল হয়ে যায়নি তো?’
সে জ্বিভে ঠোঁট ভেজায়। কাল অবধি কেঁ*দে ভাসানো মেয়ের দাঁত ক্যালানো হাসি দেখে ভাবনা-চিন্তা অগোছালো ছোটে।
রয়ে সয়ে প্রশ্ন করে,
‘ তুই ঠিক আছিস পিউ?’
‘ হ্যাঁ। কেন, আমাকে দেখে তোর মনে হচ্ছে আমি বেঠিক?’
তানহা ধপ করে পাশে বসল। ঠোঁট কাম*ড়ে ভাবল। ইতস্তত করে বলল,
‘ ধূসর ভাইয়ের বিয়ে…’
‘ আমার সাথে।’
সে চমকে তাকায়। থেমে থেমে বলে,
‘ হ্যাঁ? সত্যি? কবে?’
পিউ হাসল। ঝুলন্ত পা দুটো দুলিয়ে দুলিয়ে বলল,
‘ খুব তাড়াতাড়ি হবে। তারপর একটা ছোট্ট সংসার হবে আমাদের। আমি ধূসর ভাইয়ের বউ হব। ওনাকে ভাই না ডেকে ডাকব ধূসর জামাই। দারুণ লাগবেনা?’
তানহা মুখ কোঁচকায়। কথাটা সে কত সিরিয়াসলি নিলো, আর ফাজিল মেয়ে মজা করছে?
বলল ‘ ধূসর জামাই ডাকবি কেন? লাল -নীল- সবুজ -হলুদ, আরো কত রং আছে, সব বলে ডাকিস!’
পিউ খিলখিল করে হেসে ওঠে। রা*গ, দুঃ*খহীন ঝরঝরে হাসি। তানহার বিস্ময় আরো ছাড়িয়ে যায়। পেটে রাখা প্রশ্ন চেপে রাখতে নিরর্থক হলো। জিজ্ঞেস করেই বসল,
‘ ঝামেলা মিটেছে?’
পিউ পুনরায় রুটিতে কা*মড় বসায়। ভ্রুঁ নাচিয়ে তুষ্ট কণ্ঠে বলে,
‘ মিটে একবারে পানি পানি হয়ে গেছে।
তানহা আগ্রহভরে তাকাল। পিউ গলগল করে বিস্তারিত বলল।
সব শুনে সে আর্ত*নাদ করে বলল,
‘ ধূসর ভাই মা*র খেয়েছেন? ওউ মাই গুডনেস! ‘
পিউ মুখ বে*কিয়ে বলল,
‘ ওটাকে মা*র বলে? মেজো চাচ্চুর মত ঠান্ডা মানুষ মা*রতে পারেন? ওটা পিপড়ার কা*মড় ছিল। মা*রতো খেয়েছি আমি। তিন তিনটে থা*প্পড়, তাও একদিনে! ভাবতে পারিস? ‘
তার কণ্ঠ কাঁদো*কাঁদো। তানহা আহ্লাদ দেখায়,
‘ আহারে! থাক সোনা, কাঁ*দিস না! ‘
পরমুহূর্তে বলল,
‘অবশ্য তুই যা করতে যাচ্ছিলি চ*ড় আমিও দিতাম। ভাইয়া মে*রেছেন বলে কিছু বললামনা। কোন আক্কেলে সুই*সাইড খেতে যাচ্ছিলে বেইবি?’
পিউ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল ‘ মাথা ঠিক ছিল না। পরীক্ষাও ভালো হয়নি। সব মিলিয়ে এতটা পাগল পাগল লাগছিল, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম।’
তানহা বলল ‘ কাল যদি মারিয়া মেয়েটা বা আসত? কী হতো? ধূসর ভাইয়ার বউ হওয়া থেকে বঞ্চিত হোতিনা?’
‘ হোতাম। বড় আক্ষেপ থেকে যেত। আর ভাবছি মারিয়াপুর কাছেও ক্ষমা চাইব। না বুঝে হাবিজাবি বলে ফেলার অপ*রাধে। ‘
‘ তাই করিস। আজকের প্রিপারেশন কেমন?’
পিউ ভ্রুঁ নাঁচায় ‘ জবরদস্ত!’
‘ সেত হাবভাব দেখেই বুঝতে পারছি। আমি কিন্তু গ্রামার পড়িনি তেমন,দেখাস।’
‘ দেখাব।’
তানহা লম্বা করে নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
‘ কী দিন কাল এলো,কাল যে মেয়ের মুখের দিক তাকানো যাচ্ছিল না,আজ দ্যাখো হাসিই ধরছেনা! ‘
পিউ মুচকি হাসে। অন্যরকম গলায় বলে,
‘ এক সুতনু পুরুষ আমার অন্ত:পাড়ে ঘর বানিয়ে, আমার হাসি- কান্নায় সদর্পে প্রতাপ চালাচ্ছে। তার একটু সঙ্গ-স্রোত আমার গ্লানি,ব্য*থা ভাসিয়ে নেয়। তার একটু দুরুত্ব আমার হৃদয়পটে বইয়ে দেয় ঘূর্নিঝড়। আমি নিজের স্বত্তা হারিয়েছি সেই কবেই। এখন শুধু নিরুদ্দেশ হওয়া বাকী!’
তানহা টেনে টেনে বলল,
‘ বাবাহ! কবি কবি ভাব,
কবিতার অভাব।
তা আর কোনও সন্দেহ আছে,ধূসর ভাইয়ের ভালোবাসা নিয়ে?’
পিউ ভাবুক হয়, উত্তর দেয়
‘ মস্তিস্ক বলছে নেই। যুক্তি ও বলছে নেই। কিন্তু মন বলছে একবার সে সামনে আসুক,বলুক ‘পিউ ভালোবাসি তোকে।’
‘ যদি আসেন, কী করবি?’
পিউ বিলম্ব-ব্যাতীত জবাব দেয় ‘ ম*রে যাব খুশিতে।’
তানহা নিস্পৃহ কণ্ঠে বলল
‘ এই জন্যেই ভাইয়া বলছেন না। উনি চান তুই বেচে থাক। আমিও এখন চাই উনি না বলুক,অকালে বেস্টফ্রেন্ড হারাতে কে চায়?’
পিউ ভ্রুঁ কুঁচকে তাকায়। তানহা চোখ টিপে বলে,
‘ একটা ছেলে প্রপোজ করেছে কাল। এক্সাম শেষে এক্সেপ্ট করব। আমারত তোর মত হ্যান্ডসাম ফিক্সড কাজিন নেই,যা আছে সব কোলে নিয়ে ঘুরতে হয়। তাই বাইরেই দেখি অন্যের কাজিন কে পটিয়ে বিয়ে করা যায় কী না!’
শেষ দিকে তার দুঃ*খিত স্বর। পিউ শুনে শব্দ করে হেসে ফেলল। সে প্রথম দফায় ভেঙচি কা*টলেও পরপর হেসে ওঠে নিজেও।
নরম সকালে,কলেজের আঙিনা ভরে যায় দুটি কিশোরী কন্যার ঝলমলে প্রানবন্ত হাস্যে,উল্লাসে!
তানহা কী মনে করে হঠাৎ সচকিত হলো। লাফ দিয়ে নামল বসা থেকে। উজ্জ্বল চিত্তে বলল,
‘ আজ তোর মন ভালো! কাল এক্সাম নেই,চল না কোথাও থেকে ঘুরে আসি?’
‘ কোথায় যাব?’
‘ উম,বোটানিক্যালে? ‘
পিউ চোখ বড় করে বলল
‘ না না ধূসর ভাই জানলে জিন্দা ক*বর দেবেন। ওটা ভালো জায়গা নয়ত।’
তানহা মাছি তাড়ানোর ভঙি করে বলল,
‘ আরে জানবেইনা। চুপিচুপি যাব। আর শুধু আমরা না,প্রিয়াঙ্কা ওদেরও নিয়ে যাব।’
‘ কিন্তু…. ‘
‘ চল না পাখি,যাব, কটা ছবি তুলব, চলে আসব। আর তাছাড়া তোর যে কানের পাশ দিয়ে একটা গু*লি গেল,এর জন্য একটা ট্রিট কী আমার পাওনা নয়?’
পিউ একটু ভেবে বলল ‘ আচ্ছা ঠিক আছে। আগে এক্সাম তো দেই,তারপর যাব। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকব না। ‘
‘ ওকে ওকে ডান। চল হলে গিয়ে বসি।’
পিউ নেমে দাঁড়ায়, ফাইল হাতে তুলে বলে
‘ চল।’
***
পরীক্ষা শেষ হলো। পাক্কা তিন ঘন্টা বসে লিখে লিখে পিউয়ের আঙুল,হাত ব্য*থা। তাও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে হেলেদুলে বের হয়। বাইরে আসতেই তানহা পাকড়াও করে বলল,
‘ কী লিখেছিস এত? কতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি! ‘
‘ আরে ওই…’
তানহা কথা সম্পূর্ন করতে দিল না। ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,
‘ আচ্ছা বাদ দে। চল ফুচকা খাব।’
বলতে বলতে হাত ধরে টানল সে। পিউ হোচট খেতে খেতেও সামলে নেয়, পা মেলায়। ওরা দুজন ছাড়াও প্রিয়াঙ্কা,সোনিয়া এসে দলে ভেড়ে।
চারজন মিলে চারপ্লেট ফুচকা অর্ডার
করলো। নম্র কণ্ঠে আবদার করল,
বোম্বাই মরিচ সাথে মিষ্টি টক দেয়ার। সোনিয়া একাই নিলো ঝাল টক। দোকানি চোখের পলকে চারপ্লেট ফুচকা বানিয়ে ফেললেন। কথামতো একেকজনের হাতে দিলেন। পিউ একটা মুখে পুড়তে যাবে, সেই ক্ষনে এসে পাশে দাঁড়াল পল্লব। টেনে টেনে ডাকল,
‘ ভাবিইই!’
পিউ তাকাল। ওকে দেখতেই ভ্রুঁ কুঁচকে বলল,
‘ আপনি আবার?’
‘ জি।’
‘ কী চাই আজ?’
‘ ওই আগের বিষয়টাই। খাবার দিতে এসেছি। আমি পৌঁছাতে পৌঁছাতে আপনি হলে ঢুকে গেছিলেন বলে দিতে পারিনি। তাই এখন দিতে এলাম।’
তানহা জিজ্ঞেস করল
‘ কে রে পিউ?’
পিউয়ের অনীহ জবাব,
‘ আমার আচমকা আকাশ থেকে টপকে পরা জামাইয়ের ভাই।’
পল্লব বিনীত কণ্ঠে প্রতিবাদ করল,
‘ না ভাবি,আমার ভাই আচমকা টপকে পরা নয়। থাক গভীরে না যাই। নিন, খাবার নিন।’
সে বাড়িয়ে দিল প্যাকেট। আজও সেই ফুডপান্ডা থেকে আগত। পিউ মহাবি*রক্ত হলো। ধরল না,ছুঁলোও না। মুখের ওপর বলল,
‘ এক্ষুনি খাবার সমেত বিদেয় হন। নাহলে খুব খারা*প হবে।’
পল্লবের হাসি হাসি মুখটা নিভে গেল। অবাক হয়ে বলল
‘ সেকী! কেন? রা*গ করলেন কেন ভাবি?’
পিউ বলল
‘ আশ্চর্য! রা*গ করার কী আছে? ইচ্ছে করছেনা তাই নেব না।’
‘ নিতে যে হবেই। ভাইয়ের কড়া আদেশ। নাহলে রে*গে যাবেন।’
পিউ শব্দ করে বাটিটা ভ্যানের ওপর রাখল। কোমড়ে হাত দিয়ে বলল,
‘ কোন চুলোর ভাই? আজ বলতেই হবে এই ভাই আপনার উদয় হয়েছে কোত্থেকে? কস্মিনকালেও আমি আপনাকে দেখিনি। আপনার চেহারায় মিল আছে এরকম কাউকেও দেখিনি। তো কীভাবে আপনার ভাইকে বিয়ে করেছি? কোন কাজী অফিসে গিয়ে?কাবিন কত ছিল? ‘
পল্লব মিটিমিটি হাসল। পিউ তাজ্জব হয়ে বলল, ‘আরেহ, হাসছেন কেন? ‘
‘ ইয়ে এমনি। বলছিলাম যে আমার দেরী হচ্ছে ভাবি,খাবারটা যদি নিতেন….’
তানহা খেকিয়ে বলল
‘ আরে ভাই, রাখুন আপনার খাবার। আমি বেশ বুঝতে পারছি,আসলে এই ভাবি- টাবি ডাকা একটা চাল। উনি ইনিয়ে-বিনিয়ে ফ্লার্ট করছেন তোকে,বুঝলি পিউ।’
পিউ অক্ষিযূগল বিকট করতেই, পল্লব জ্বিভ কে*টে দুগালে চ*ড় মেরে বলল
‘ আসতাগফিরুল্লাহ! আমি ভাইয়ের ভক্ত,ওনার স্ত্রী আমার বোন।’
পিউ দাঁত চে*পে, কটমট করে তাকাল। প্রিয়াঙ্কা, সোনিয়া হাবলার মত তাকিয়ে আছে।
পল্লব হাসার চেষ্টা করে বলল ‘ ভাবি রা*গ করলেন?’
পিউ ‘চ’ বর্গীয় শব্দ করে। কপালের ওপর টাস করে চড় দিয়ে প্রকাশ করে বির*ক্তি। বেশ বুঝল,যতক্ষন না খাবার নিচ্ছে,নিস্তার নেই। এই ছেলে যাবে না। বাধ্য হয়ে হাত পাতল ‘ দিন।’
পল্লবের চোয়াল ভরল হাসিতে,
‘ নিন।’
তারপর হেসে হেসে সাইকেল চালিয়ে বিদেয় হলো সে। পিউ দীর্ঘশ্বাস ফেলল। তানহার দিক ফিরতেই দেখল সে ভাবুক হয়ে তাকিয়ে। পিউ ভ্রু উঁচায়,
‘ তোর আবার কী হলো?’
‘ ভাবছি।’
‘ কী?’
‘ এসব ধূসর ভাইয়ার কাজ নয়ত?’
পিউ সচকিত হয়। সজাগ হয় মস্তিষ্কের নিউরন। আসলেইত,কাজটা ওনার নয়ত?
****
রাজধানীর ভেতর সবুজের রাজ্য হলো বোটানিক্যাল গার্ডেন। জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান হিসেবে,৮০০ প্রজাতির বৃক্ষের জন্যে এর পরিচিতি। অথচ বর্তমানে প্রেমিক- প্রেমিকাদের ভীড়ে এখানে পা রাখার জো নেই। পরিবার নিয়ে আসার তো প্রশ্নই ওঠেনা। ঝোপঝাড়ে ব্যাঙের বদলে ঘাটি গাড়ছে শত শত কপোত-কপোতী। পারলে সাপের গর্তে গড়ে ফেলত স্থান। এখানে সেখানে শুধু জোড়া পেতে বসে। তানহা আশপাশ দেখে নাক-মুখ কোঁচকাচ্ছে বারবার। শেষ বার একজোড়া কাপল দেখে, পিউয়ের কানের কাছে মুখ এনে বলল,
‘ দেখেছিস কী বেহায়া! পাব্লিক প্লেসে বয়ফ্রেন্ডের মাথা কোলে নিয়ে বসে আছে।’
চাপাকণ্ঠ, অথচ শুনে নিল বাকীরা।
প্রিয়াঙ্কা ভ্রুঁ গোটায়,
‘ তাতে তোর কোনও সমস্যা? ‘
পিউ বলল
‘ আলবাত সমস্যা, এরা এরকম খুল্লাম খুল্লাম প্রেম করছে কেন? লজ্জ্বা শরম নেই না কী?’
‘ তুই আর মুখ খুলিস না বোন,এতদিনে ধূসর ভাইয়ের সাথে প্রেমটা হয়ে গেলে নিজেই এই জায়গায় থাকতি।’
পিউ চোখ কপালে তুলে বলল,
‘ আমি? কী যা তা বলছিস! ধূসর ভাই সামনে এলেই আমার নিঃশ্বাস আটকে আসে। ভেতর ভেতর দাপা*দাপি করি গলাকা*টা মুরগীর মত। আর তো এইসব। যখন প্রথম বার….’
বলতে বলতে থেমে গেল পিউ। ধূসর ভাই চুমু খেয়েছেন সে কী আর সবাইকে বলা যায়? এসব তো নিজেদের একান্ত মুহুর্ত। ওইদিন তার কী অবস্থা হয়েছিল সেই জানে। অক্কা পেত আরেকটু হলে। নেত্রপটে সেই চিত্র জেগে উঠতেই ভেতরটা লতিয়ে আসে কুন্ঠায়। যে মানুষটার চোখ তুলে তাকানো মানেই তার বিরস পৃথিবী অনিন্দ্য। সেই মানুষের ঠোঁটের ছোঁয়া ঠিক কী নামে সঙ্গায়িত করলে যুতসইই হবে?
তানহা শুধাল,
‘ কী, আটকে গেলি কেন? নেটওয়ার্ক স্লো?’
পিউ প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলল
‘ চুপ কর। আয় ছবি তুলি সবাই। ‘
সোনিয়া বলল ‘ তোর ফোন থেকে তুলব। আমার ক্যামেরা ভালো না। তোরটা সুন্দর। ‘
‘ আচ্ছা আয়।’
চারজন গলা ধরে দাঁড়াল। তানহা দলের মধ্যে লম্বা। সে সামনে গিয়ে ফোন উঁচু করে ধরল। পরপর কতগুলো ক্লিক করে নামিয়ে আনতেই সবাই ঝাপিয়ে পরল,কাকে কেমন লাগছে দেখতে!
প্রিয়াঙ্কা বলল
‘ এই আমার সিঙ্গেল কয়েকটা ছবি তুলে দিবি কেউ?’
পিউ বলল, ‘ কলেজ ইউনিফর্ম পরেও তোর এত ছবি তুলতে মন চায়?’
‘ দে না দুটো তুলে,ভালোনা তুই?’
‘ আচ্ছা,কোথায় দাঁড়িয়ে তুলবি? ‘
তানহা হাত ইশারা করে দেখাল,
‘ ওই গাছটার নীচে যা। রোদ পরবে মুখে, দারুণ আসবে।’
প্রিয়াঙ্কা হৈহৈ করে ছুটে গেল। পিউ চলল পেছনে। সে গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়ায়। তাকায় আরেকদিকে। এটাই ছবির পোজ। পিউ ক্যামেরায় ক্লিক করতে করতে বলে
‘ হাস।’
অনেকগুলো ছবি তলার পর ক্ষান্ত হয় মেয়েটা। এগিয়ে এসে বলে ‘ দেখি কেমন হয়েছে?’
পিউ গ্যালারি বের করে দেয়। স্কিপ করে করে একেকটা ছবি টেনে টেনে দেখল প্রিয়াঙ্কা। পিউয়ের চোখও তখন স্ক্রীনেই। আচমকা একটা ছবিতে অক্ষিপট আটকে গেল। প্রিয়াঙ্কা ঠেলে সরাতে গেলেই, ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,
‘ দাঁড়া দাঁড়া।’
তারপর নিজেই টেনে আগের ছবিটা আনল। যতটুকু সাধ্য জুম করল। ছবির পেছনে বেঞ্চে বসা এক এক জোড়া কপোত -কপোতি বন্দী হয়েছে ক্যামেরায়। দুজনেরই গালের একাংশ দৃশ্যমান। অথচ পিউয়ের চিনতে অসুবিধে হয়না,এরা কারা! বিষয়টি তারা মস্তক ভেদ করে চলে যায়। থিতিয়ে আসে সব। শুকিয়ে আসা ওষ্ঠযূগল বারবার জ্বিভে ভিজিয়ে ছবিটা দেখতে থাকে। প্রিয়াঙ্কা কৌতুহলে শুধায়,
‘ কিছু হয়েছে? ‘
পিউ কম্পিত চোখ তুলল। তার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বলল,
‘ এখানে দাঁড়া,আমি আসছি।’
উত্তরের আশায় না থেকে ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে গেল সে। তানহারা কাছে এসে শুধাল
‘ কই গেল ও?’
‘ জানিনা। ‘
**
একটা শান বাঁধানো বেঞ্চে বসা দুটি ছেলেমেয়ে। মাঝখানে কিঞ্চিৎ দুরুত্বও নেই তাদের। ছেলেটার লম্বা হাত ছড়িয়ে রাখা। যা ছুঁয়েছে মেয়েটির কাঁধ।
বাদামের খোসা ছিলে এগিয়ে দেয় সে,মেয়েটি আনন্দ আর তৃপ্তি সমেত মুখে পোড়ে। তার ঠোঁটের আশেপাশে লেগে থাকা অবশিষ্টাংশ ছেলেটি মাঝে মধ্যে মুছিয়ে দেয় স্বযত্নে। দুজনেই ব্যস্ত নিজেদের আলাপে। চারপাশের কোনও দিকেই কান নেই,মন নেই,দৃষ্টি তো বহুদূর!
মেয়েটির অধর জুড়ে বিস্তৃত হাসি,আর তাদের কিছু কথা কানে আসে পিউয়ের। জড়ীভূত সে দাঁড়িয়ে থাকে আড়ালে। এই দৃশ্য,এই কথোপকথন তার স্নায়ু কু*পিয়ে আহ*ত করে। বুঝতে আর এক ফোটাও বাকী নেই কিছু। ইকবাল আর পুষ্পর দুইবছরের সম্পর্ক আজ প্রথমবার প্রকাশ্যে এলো। পিউ এক এক করে সমস্ত কথা মিলিয়ে ফেলল। জানলা দিয়ে পুষ্পর উঁকিঝুঁকি মারার সেই ঘটনা,গভীর রাতে পাচিল টপকানো ছেলেটি,পুষ্পর ইউনিভার্সিটি যাওয়ার দিন ইকবালের হঠাৎ আগমন,তার অগ্যাত ফোন,তারপর গ্রামে পদার্পণ, পিউ আস্তেধীরে সব হিসেব গেঁথে নেয় মাথায়। ওরা দুজন -দুজনকে ভালোবাসে? তাহলে সাদিফ ভাইয়া? সেজো মা যে ওদের বিয়ে ঠিক করলেন,তার কী হবে?
ততক্ষনে তানহারা ওর পাশে এসে দাঁড়ায়। তানহা কাঁধে হাত রাখে,ধ্যান ভাঙায় তার। মেয়েটা কিছু বলতে চাইলে পিউ ঠোঁটে তর্জনী চেপে থামতে বোঝায়। আরেকবার তাকায় পুষ্প আর ইকবালের দিকে। তারপর নিঃশব্দে প্রস্থান নেয়।
……………….
সম্পূর্ণ গল্পের লিংক
https://kobitor.com/somudro/
(শেষ টুকু সাপোর্ট করছেনা বিধায় আমি দুই পার্টে দিব।)