#লেখিকাঃ_আরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্ব_24
আহানের কথা শুনে ভয়ে মেঘের কলিজার পানি শুকিয়ে গেলো। ও একপা একপা করে পিছিয়ে যেতে লাগলো। আহানকে মেঘ ওর অনেকটা কাছে দেখৈ আরও পিছিয়ে যৈতে লাগলো,, যেতে যেতে মেঘ বেডের উপরে ধপাৎ করে পড়ে গেলো। আহান’ও মেঘের উপর ঝুকে নিজের শরিরের সব ভর মেঘের উপর ছেড়ে দিয়ে ওর ঠোটের সাথে নিজের ঠোট মিলিয়ে দিলো।মেঘ আহানের থেকে ছোটার জন্য ছটফছ করেই যাচ্ছে। ও যতো হাত পা ছোড়াছুড়ি করছে,, আহান ততো ওকে শক্ত করে নিজের সাথে মিশিয়ে জড়িয়ে ধরছে। মেঘ ছটফট করতে করতে একসময় ক্লান্ত হয়ে স্থির হয়ে গেলো। মেঘকে এভাবে স্থির হতে দেখে, আহান মেঘের ঠোট ছেড়ে দিয়ে কপালে অনেকক্ষন সময় নিয়ে গভির ভাবে একটা চুমু খেলো ।তারপর মেঘের উপর থেকে সরে গেলো। আহান সরে যেতেই মেঘ এক দৌরে ওয়াশরুমে ঢুকে ধরাম করে দরজা বন্ধ করে দিলো। তারপর দরজার সাথে পিঠ ঠেকিয়ে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে লাগলো। এতোক্ষন ওর মনে হচ্ছিলো ও দম বন্ধ হয়েই মারা যাবে। ওর এখন ইচ্ছে করছে লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে । কি ভাবে আবার এই লোকটা ওকে কিস করতে পারলো,, চার বছর আগেও এই একই কাজ করেছিলো। সেটা মনে মেঘের রাগে দুঃখে কান্না চলে আসলো। ও বিরবির করে বললো
“বেয়াদপ একটা।”
মেঘকে এভাবে দৌড়ে যেতে দেখে আহান মুচকি হাসলো । বললো
“আমার লজ্জাবতী লাজুক লতা,, তোমার সামনে আসলেই আমার সব কিছু কেমন গুলিয়ে যায়। যা করতে চাই সেটা না করে অন্য কিছু করে ফেলি। দেখো কি করতে এসে ছিলাম আর কি করেছি। এসে ছিলাম কাটা জায়গায় ড্রেসিন করানোর জন্য কিন্তু এসে কিস করে ফেললাম। ধ্যাত আমার এতো সুন্দর মিষ্টি একটা পরি থাকতে এখন কিনা ওই সার্ভেন্টদের দিয়ে আমায় ড্রেসিন করাতে হবে। এই মেয়ে যা লজ্জা পেয়েছে তাতে মনে হয়না আজকে ওয়াশ রুম থেকে বের হবে। আল্লাহ জানে পিচ্চিটা এতো লজ্জা রাখে কোথায়।”
_________________________
বিয়ে বাড়ির সাজানো গোছানো জমজমাট পরিবেশ এখন নিস্তব্ধ পূরীতে রূপ নিয়েছে। চারপাশে শুধু ভাংগা কাচের গ্লাস প্লেট এর টুকরোর ছড়াছড়ি । ডেকরেশনের সব জিনিস পএ এদিক সেদিক ছড়িয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কেউ এখানে ধ্বংসযোগ্য করেছে। অবশ্য এটা একপ্রকার ধ্বংসযোগ্যই বলা চলে ।
কিছুক্ষন আগের ঘটনা
আহান মেঘকে নিয়ে চলে যাওয়ার পর। অভিও রেগে আলিশাকে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। ওরা জিনিসপএ নিয়ে বাসার বাইরে বের হতেই দেখে আহির আর মিহির সফট ড্রিংস খেতেখেতে বাসার দিকেই আসছে।
আহির তখন আহানের সাথে রেগে একদম বাড়ির এড়িয়া থৈকে বের হয়ে মেইন রোডে চলে গিয়েছিলো। সেখান থেকে মিহির কোনো রকম রাগ ভাঙিয়ে এইমাএ বাড়ির ভিতরে নিয়ে আসলো ।
অভি আলিশাকে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে,, আহির মিহির কাছে গিয়ে এতোক্ষন বাড়ির ভিতরে যা যা ঘটেছে সেই সব কিছু ওদের বলে,, তারপর আলিশাকে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।অভির মুখে সব শুনে আহির আর মিহির রেগে বোম হয়ে বাড়ির ভিতরে গিয়ে কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হাতের কাছে যা পেয়েছে তাই ছুরে ফ্লোরে মারছে আর ভাঙছে । কেউ চেয়েও ওদের থামাতে পারছে না। ভাগ্যিস জেড়িন নিজের রুমে ছিলো নাহলে আজকে ওকে হয়তো আহির আর মিহির মেরেই ফেলতো। মিরা রহমান আর মোনা খান দাড়িয়ে দাড়িয়ে ছেলেদের কান্ড দেখছে ভয়ে কিছু বলতেও পারছেন না,, আর থামাতেও পারছেন না। আহাদ খান আজম রহমান শান্ত হয়ে বসে আছে,,, কারন ওনারা আগেই জানতেন আহির মিহির জানতে পারলে এমন কিছুই হবে। তবে আপাততো আহির মিহিরকে নিয়ে চিন্তা বাদ দিয়ে ওনারা আহানকে নিয়ে বেশি চিন্তা করছে। আজকে এতো কিছু হওয়ার পরেও ওই ছেলের এতোটা চুপচাপ রিয়্যাকশন ওনারা মেনে নিতে পারছেন না। এতোটা শান্ত ব্যাবহার ভয়ংকর কোনো ঝড়ের ঈঙ্গিত দিচ্ছে। দিশা আর হিয়ান বাড়ির ভিতর থেকে আহির মিহিরকে কোনোরকম টানতে টানতে বাইরে নিয়ে গেছে । কিন্তু সেখানে গিয়ে ওরা থামার বদলে বাড়ির বাইরে যা ছিলো সব কিছু ভেঙেছে । সব কিছু একদম গুড়ো গুড়ো করে তারপর ওরা ওই বাড়ি থেকে চলে গেছে।ওদের সাথে দিশা আর হিয়ানও চলে গেছে। বাকিরা সবাই বরের সাথে বরযাএী হিসেবে যাবে কনের বাড়িতে তারপর সন্ধ্যায় ফিরবে। মোনা খান এবং মীরা রহমান একটা শস্তির নিশ্বাস ফেললেন ।ভাগ্যিস ওরা শুধু জিনিস পএ গুলোই ভেঙেছে । কারো গায়ে যদি আঘাত করতো তাহলে কি হতো।
_________________________
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা
মেঘ ওর রুমে একটা টেডিবিয়ার জড়িয়ে রেখে ঘুমাচ্ছিলো। মাগরিবের আযানের ধ্বনি কানে আসতেই ওর ঘুম হালকা হয়ে যায় । ও কিছুক্ষন এপাশ ওপাশ করে চোখ ডলে ঘুম থেকে উঠে বসে। মিটমিট করে চোখ খুলতেই হঠাৎ ওর অন্ধকার রুমটা আলোকিত হয়ে যায় । সাথে সাথে উপর থেকে অনেক গুলো গোলাপের পাপড়ি পড়ে মেঘের শরীরের অর্ধেক পুড়ো ঢেকে দেয়। অচমকা এমন হওয়ায় মেঘ ধরফড়িয়ে উঠে। চোখ বড় বড় করে আশে পাশে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে ওর সাথে কি হচ্ছে। মেঘ ভালো করে রুমটার চারপাশে তাকাতেই ও আরো অবাক হয়ে যায়। সারা রুমে লাভ সেপের লাল বোর্ড ঝুলানো তার উপরে সাদা রঙ দিয়ে ‘সরি বনু’ লেখা। বিছানায় ওর গায়ের উপরে যে গোলাপের পাপরি গুলো পড়েছিলো তার মধ্যে অনেক গুলো ডেইরি মিল্ক সিল্ক চকলেট। মেঘের বুঝতে বাকি রইলো না এইটা কার কাজ। কিন্তু কথা হচ্ছে এগুলো ওরা করলো কখন? ও কি কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমায় যে ওর রুমে এসে কেউ এতো কিছু করে গেলো আর ও কিনা কিছু টেরই পেলো না। হাউ ষ্ট্রেইঞ্জ? মেঘের ভাবনার মধ্যেই ওর রুমের দরজা খুলে আহির প্রবেশ করলো । মেঘ কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আহির এসে মেঘের চোখ চেপে ধরে ওর রুমের ব্যালকনিতে নিয়ে গেলো। মেঘ বিরক্ত কন্ঠে বললো
“কি করছিস এসব? বলা নেই কওয়া নেই সোজা এসে এভাবে চোখ চেপে ধরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস আজব?”
“চুপচাপ আমার সাথে চল। কোথায় নিয়ে যাচ্ছি গেলেই দেখতে পাবি।”
আহির মেঘকে ব্যালকনিতে দাড় করিয়ে ওর চোখ ছেড়ে দিলো। মেঘ চোখ খুলে সামনে তাকাতেই হা হয়ে গেলো ,, ও হাসবে না কাদবে বুঝতে পারছে না। নিচে বাস্কেট বল গ্রাউন্ডে দাড়িয়ে মিহির জোকারের পোশাক পড়ে একদম জোকার দের মতো সেজে কান ধরে উঠ বস করছে। পাসেই আহান হাতে ফোন নিয়ে সেটা ভিডিও করছে। মেঘ মিহিরকে এভাবে দেখে ফিক করে হেসে দিলো। নিচ থেকে মিহির চেচিয়ে বললো
“মেঘ বুড়ি, আমার সোনা বুড়ি,, কলিজাটা আমার , প্লিজ আমাকে মাফ করে দে। বিলিভ মি আর কখনো তোকে বকবো না । তুই যা বলবি তাই শুনবো। যে শাস্তি দিবি মাথা পেতে নিবো। তাও তুই আমার উপর এভাবে রেগে থাকিস না প্লিজ। তুই এভাবে আমার উপর রেগে থাকলে আমি দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো। বিশ্বাস কর আমি ইচ্ছে করে ওইগুলো তোকে বলতে চাইনি। আমি কি তোকে জেনে বুঝে এখনো হার্ট করতে পারি বল? তখন ভিষন রেগে ছিলাম তাই মুখ থেকে ওইগুলো বেরিয়ে গেছে। আই প্রমিশ আর কখনো ওইসব হাবিজাবি কথা গুলো বলবো না।প্লিজ শেষ বারের মতো মাফ করে দে।।”
মেঘ পারছে না শুধু হেসে গড়াগড়ি খেতে। ও কোনো রকম নিজের হাসি টাকে আটকে রেখে,,মুখে সিরিয়াস ভাব ফুটিয়ে মিহিরকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“সরি ভাই আপাততো তোকে আমি মাফ করতে পারছি না। তুই যে অন্যায় করেছিস তার কোনো ক্ষমা হয় না।”
মেঘের কথা শুনে মিহির অসহায় ফেইস করে আহানের দিকে তাকালো। আহান ঘাড়টা একটু বাকা করে মিহিরকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“সরি মিহির আমিও তাহলে তোর সম্মান টা বাচাতে পারছি না। নিজের মান সম্মান কে টাটা বল । আজকে ওর বিষর্জন হবে। ফোনের বাটনে একটা ক্লিক করব সাথে সাথে তুই ভাইরাল হয়ে যাবি।”
মিহির চেচিয়ে বললো
“নো, নো ,নো, ব্রো! এটা করো না প্লিজ তাহলে আমার মান-সম্মান সব যাবে।”
ওদের কথা শুনে মেঘের ব্রু কুচকে এলো। ও ওদের দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে ওরা কি বলছে।আহান বললো
“আগে তোর বোনকে তোকে মাফ করে দিতে বল। নাহলে আমার কিছু করার নেই। বাধ্য হয়ে এই ভিডিওটা আমাকে আপলোড দিতেই হবে। তাহলেই তোর উচিৎ শিক্ষা হবে। ভবিষ্যতে ওকে কিছু বলার আগে অন্তত একশৌ বার ভেবে বলবি।”
মিহির মেঘের দিকে তাকিয়ে বললো
“বনু প্লিজ আমাকে মাফ করে দে ।নাহলে তোর ভাই এতোদিন যে মেয়েগুলোর ক্রাশ ছিলো,, কালকে থেকে সেই মেয়ে গুলোই তোর ভাইকে টয়লেটের ব্রাশ ডাকবে।”
মেঘ হা করে আহান আর মিহিরের দিকে তাকিয়ে আছে। পাশ থেকে আহির বললো
“বনু ওকে মাফ করার কোনো দরকার নেই বুঝলি। ও যা করেছে তাতে ওর একটা শাস্তি পাওয়া দরকার । তুই মিহিরের কথায় কান দিস না ।”
আহীরের কথা শুনে মেঘের চারশো চল্লিশ বোল্টের ঝটকা লাগলো। ও আহীরের দিকে ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে রইলো। আর মনে মনে বললো,, যারা দুজন একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারে না,, চলতে পারে না,,খেতে পারে না,, তাদের একজন নাকি আরেক জনকে শাস্তি দেওয়ার কথা বলছে। এটাও কি সম্ভব? নাকি আমি এখনো ঘুম থেকেই উঠিনি। আচ্ছা এমনো তো হতে পারে আমি এখনো ঘুমিয়ে আছি। মেঘের ভাবনার মধ্যেই আহির চেচিয়ে আহানকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“ব্রো মেঘ ওকে ক্ষমা করবে না। তুমি ভিডিওটা আপলোড করে দাও।ওর মান সম্মান সব চুলোয় যাক।”
আহিরের কথা শেষ হতেই মিহির অনেকটা ন্যাক্যামোর স্বরে বলে
“মেঘ তুই আমাকে মাফ করবি না? ওকে করিস না। ব্রো ভিডিওটা পোস্ট করে দাও। আমার বোন যদি আমাকে নাই মাফ করে তাহলে এই মান সম্মান দিয়ে আমি কি করবো! তবে সবাই একটা কথা মনে রেখো আমাকে যারা এতোদিন নিজের ক্রাশ মেনে এসেছে তারা যদি কাল থেকে আমাকে টয়লেটের ব্রাশ বলে ডাকে তাহলে এই জিবন আমি রাখবো না। সোজা গিয়ে ভার্সিটির ছাদ থেকে লাফ দিয়ে সুইসাইড করবো।”
আহির কোনো রকম নিজের হাসি চেপে রেখেছে। ও বিরবির করে বললো
“ওরে গাধা নিজের ওভার এ্যাক্টিন টা বন্ধ কর । নাহলে এক্ষুনি ধরা খাবি। ইডিয়েট কোথাকার ভার্ষিটির দুই তলার ছাদ থেকে পড়ে নাকি ও সুইসাইড করবে।”
আহীর এসব বিরবির করে পাশে তাকাতেই দেখলো মেঘ দৌড়ে রুম থেকে বরিয়ে যাচ্ছে। আহির একটা বিশ্ব জয় করা হাসি দিয়ে বললো
“ইয়েস কাজ হয়েছে।”
মেঘ সোজা দৌড়ে গিয়ে বাসার দরজা খুলে সিড়ি বেয়ে নিচে চলে গেলো। তাড়াহুড়োয় লিফটে চড়তেও ভুলে গেছে। ও গিয়ে এক দৌড়ে মিহিরকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর কান্না ভেজা কন্ঠে নাক টানতে টানতে বললো
“কুকুর, বিড়াল, হনুমান , গাধা, কশ্চপ কোথাকার। যেটা পারিশ না সেটা করিস কেনো। তোর দ্বারা এক্টিন টা একদম হয় না। আর আমাকে কি তোর বোকা মনে হয়? যে আমি তোর এইসব ম্যালোড্রামা বিশ্বাস করে নিবো বুদ্ধু একটা। তোকে ভার্ষিটির ছাদ থেকে লাফ দিয়ে সুইসাইড করতে হবে না,, পরের বার যদি আমাকে কখনো বকেছিস তাহলে আমি নিজে তোকে আমাদের বাসার ছাদ থেকে ফেলে দিবো।”
মেঘের কথায় আহান , আহির, মিহির তিনজনই হেসে দিলো। আহান বিরবির করে বললো
“ইন্টেলিজেন্ট গার্ল।”
_________________________
সিনিয়র দের সামনে মাথা মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে সাড়িকা,,সাঈফা সহ ফাষ্ট ইয়ারের আরও কিছু মেয়েরা। ওরা নবিন বরনের জন্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাম দিতে এসেছিলো সিনিয়রদের কাছে। কিন্তু এখানে আসতেই অর্নাস ফাইনাল ইয়ারের ছেলে মেয়েরা ওদের নিয়ে মজা করতে শুরু করে দিয়েছে। এটাকে মজা বললেও ভুল হবে রীতিমতো র্যাগিং শুরু করে দিয়েছে। ওরা এসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাম দেওয়ার কথা বলতেই সিনিয়াররা ওদের কাছে শর্ত দেয়। সেটা হচ্ছে ওরা যদি হিজাব আর গায়ের ওরনা খুলে বেলি ডান্স করে তাহলেই ওদের অনুষ্ঠানে পার্টিসিপেট করতে দিবে। সিনিয়ররা এই কথা বলতেই সাঈফা বলেছিলো অনুষ্ঠানে পার্টিসিপেট তো দূরের কথা,, দরকার হলে ওরা ভার্ষিটি থেকে চলে যাবে তবুও এই শর্তে জিবনেও রাজি হবে না।বলেই ওরা বাইরে আসতে নিলেই সিনিয়র একটা ছেলে গিয়ে রুমের দরজাটা আটকে দেয়। তারপর সবাই মিলে নিজেদের ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে ওদের মাথায় ঢেলে দেয়। সাড়িকা সাঈফা সহ ওরা সাত জন এখানে এসেছিলো । ওদের সবার মাথায়ই পানি ঢালা হয়েছে । জামাগুলো একদম শরীরের সাথে লেপ্টে আছে। সাঈফারা লজ্জায় একজনও মাথা তুলে তাকাতে পারছে না। সিনিয়র ছেলেগুলো বাজে দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েগুলো বার বার হাবিজাবি কথা বলে সিটি বাজাচ্ছে। এদের এতো বাজে কথা শুনে সাড়িকার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে। সাঈফা ঠোট চেপে কান্না আটকে রাখার চেষ্টা করছে। সিনিয়রদের মধ্যের একটা মেয়ে বললো
“ওই একটা হিন্দি সং ছাড় তো। দেখি এই বেবি গুলো কেমন বেলি ডান্স করতে পারে।”
মেয়েটার কথা শুনে সবাই হাহা করে হেসে দিলো। একটা মেয়ে নিজের ফোন বের করে একটা আইটেম সং প্লে করলো। সাথে সাথে ক্লাস রুমের দরজায় কেউ নক করলো। মেয়েটা ফোনের গানটা অফ করে করে ফিসফিসিয়ে বললো
“এখন কে এলোরে? আজকে তো আমাদের কোনো ক্লাস নেই যে স্যার ম্যামরা আসবে। আমাদের তো কয়েকদিন ছুটি দেওয়া হয়েছে এই অনুষ্ঠানের কাজ দেখা শোনা করার জন্য। তাহলে এই টাইমে আবার কে আসতে পারে।”
একটা ছেলে বেঞ্চ থেকে নেমে বললো
“আরে ধুর তুই সব কিছুতে একটু বেশিই ভয় পাস ।দেখ আবার হয়তো আরো কয়েকটা মূরগি এসেছে আমাদের হাতে শিকার হওয়ার জন্য।”
বলতে বলতে ছেলেটা দরজা খুললো। সাথে সাথে কেউ ওর বুকের উপর একটা লাওি মারলো ছেলেটা গিয়ে পাশের দেয়ালে ছিটকে পড়লো। সব সিনিয়র ছেলেমেয়ে গুলো দরজার দিকে তাকালো । তাকিয়েই ওদের চেহারা ফ্যাক্যাশে হয়ে গেলো । ভয়ে ওদের সবার হাত পা কাপাকাপি করছে । ওরা একেএকে সবাই বসা থেক্র দাড়িয়ে গেলো।
#চলবে,,,