ভয়ঙ্কর সেই মেয়েটি ৩য় পর্ব
একই বিল্ডিং থেকে পর পর দুটো এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করলো সবখানে। প্রথমে তানিয়া আর রাকিব মিলে ধাক্কা দিয়ে ৮ তলার বেলকনি থেকে বৃষ্টির পিতা ফরহাদকে ফেলে দিয়ে হত্যা করলো। তার মাস খানেক পরেই বৃষ্টিকে আশ্রয় দেয়া একি বিল্ডিং এর একি ফ্লোরের রেহানার তার সন্তানকে নিয়ে বেলকনি থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করলো। দুটো ঘটনার সাক্ষীই একজন ৭ বছরের বাচ্চা মেয়ে। এটা কাকতলীয় কিছু বলেই বিশ্বাস করলো অধিকাংশ মানুষ। বৃষ্টি নামের ফুটফুটে মিষ্টি মেয়েটার প্রতি সহানুভূতি অনুভব করলো।
তবুও কেউ কেউ এটাও চুপিসারে বলতে লাগলো এই ছোট মেয়েটাই অপয়া। তাকে তার নানা বা দাদার বাসাতেই পাঠিয়ে দেয়া উচিত। সপ্তাহ খানেক কেটে গেল। স্ত্রী এবং পুত্রের শোক ভালোমতো কাটেনি ইঞ্জিনিয়ার খোরশেদ আলমের। বৃষ্টিকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটেই থাকেন তিনি। বৃষ্টি একদিন বলল, ‘কাকা আমার এই বিল্ডিং এ থাকতে ভালো লাগে না, শুধু ভয় ভয় করে! আমি আমির দাদুর বাড়িতে গিয়ে থাকবো।’ খোরশেদ কিছুটা অবাক হলো। সে যতটুকু জানে বৃষ্টির দাদুর নাম নুরুল ইসলাম। সে জিজ্ঞেস করলো, ‘তোমার এই দাদু কোথায় থাকেন?’
এরপর বৃষ্টি বলতে লাগলো প্রফেসর আমির সম্পর্কে যতটুকু সে জানে। বৃষ্টি মেয়েটাকে আজকাল অসহ্য লাগছিল তার। কিন্তু হঠাৎ করে তাড়িয়েও দিতে পারছিলেন না। ভালো করে একটু খোঁজ করতেই প্রফেসর আমির হোসেনের বাড়ির সন্ধান পেলেন। এও জানতে পারলেন রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও বেশ ভালো বন্ধুত্ব ছিল লোকটার সাথে বৃষ্টির বাবার। পুলিশের সাহায্য নিল খোরশেদ। পুলিশ বৃষ্টিকে অনুরোধ করলো, আপন রক্তের কারো কাছে থাকাটাই তোমার জন্য এখন ভালো হবে, দূর সম্পর্কের মানুষের কাছে না থেকে।
ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো বৃষ্টি। জেদ করলো আমির দাদুর বাড়িতেই সে যাবে। দাদু তাকে অনেক ভালোবাসে। অগত্যা বৃষ্টিকে আর বাধা দিল না পুলিশ। খোরশেদকে অনুরোধ করলেন পৌঁছে দিতে। তার বেশ কিছু পোশাক একটা ব্যাগে ভরে একটা গাড়ি রিজার্ভ করে খোরশেদ আলম প্রফেসর আমির হোসেনের বাড়ির দিকে রওনা হলেন।
প্রফেসর আমির হোসেনের বাড়ির পেছনের অংশ: কুয়োটার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা ছোট হাত আর ভেসে আসা হাসি যে ফরহাদের মেয়ে বৃষ্টির তাতে প্রফেসরের কোনো সন্দেহ নেই। তাকে খুব করে টানছে একটা মায়া। এগিয়ে গেলেন তিনি কুয়োটার আরেকটু সামনে। জানেন মেয়েটার হাত শুধু স্পর্শ করতে হবে তাকে এরপর ওই হাতটাই তাকে টেনে নিয়ে যাবে কুয়োর তলে। চোখের সামনে ভেসে উঠবে এক অনন্য নতুন জগৎ! তিনি ডান হাতটা উঁচু করলেন, ধীরে ধীরে এগিয়ে দিতে লাগলেন সামনের দিকে।
‘হচ্ছেটা কী এখানে?’
চমকে পেছনে তাকালেন আমির হোসেন। তার স্ত্রী আশা দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমির হোসেনকে চুপ করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, ‘রোজ রাতে এই কুয়োটার কাছে আসার কী দরকার পড়ে তোমার বুঝি না! বুড়ো হয়ে যাচ্ছ! কোনো দুর্ঘটনা যদি ঘটে!’
হুস ফিরে এলো প্রফেসরের। এক মুহূর্তে অনুধাবন করতে পারলেন কী করতে চলেছিলেন তিনি। তার স্ত্রী এসময় না এলে মহা ভয়ানক এক পরিস্থিতির শিকার হতেন তিনি। কুয়োটার ভেতরে এমন কিছু একটা আছে যা মানুষের চিন্তা শক্তিকে লোপ করিয়ে প্রভাবিত করে যা খুশি তাই করাতে পারে। এটাই তাকে এখানে টেনে এনেছিল। স্বপ্নেও ঢুকে যাওয়ার ক্ষমতা আছে ওটার। বিব্রত হয়ে দ্রুত ঢেকে দিলেন কুয়োটা। এরপর স্ত্রীর পিছু পিছু ঘরে ফিরে গেলেন।
পরদিন টিভিতে যে খবর দেখলেন তাতে তার শরীরের সব রক্ত যেন জমে গেল। বৃষ্টিকে দেখাচ্ছে টিভিতে। বৃষ্টিকে যে পরিবার আশ্রয় দিয়েছিল সে পরিবারের কর্ত্রী তার একমাত্র পুত্রকে নিয়ে বেলকনি থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছে। স্বামীকে ধোকা দেয়ার পাপবোধ থেকে নাকি আত্মহত্যাটা করেছেন। তার মন আবার বলে উঠল ঘটনাটি কাকতলীয় নয়। সেরাত, বৃষ্টি আর এই প্রাচীন কুয়োটার সাথে এর কোনো না কোনো সম্পর্ক রয়েছেই। এরপর সপ্তাহ খানেক কেটে গিয়েছে।
খোরশেদ আলম ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বললেন। চিৎকার করে বৃষ্টিই দেখিয়ে দিল প্রফেসরের বাড়িটা। তার চোখ-মুখ থেকে আনন্দ যেন ঝরে ঝরে পড়ছে। এত খুশি হতে মেয়েটাকে অনেক দিন দেখেনি খোরশেদ। কেমন একটা মায়া মায়া অনুভব করলো সে মেয়েটার প্রতি। বড় গেট দিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলো দুজনেই।
কলিং বেলের আওয়াজ শুনে দরজা খুলে রীতিমতো দম বন্ধ হয়ে এলো প্রফেসর আমির হোসেনের। বৃষ্টি দাঁড়িয়ে রয়েছে তার সামনে! স্বপ্ন দেখছে নাকি সে!বৃষ্টির মুখ আনন্দে বিস্তিত হয়ে আছে। সে ‘দাদু!’ বলে চিৎকার করে জড়িয়ে ধরলো তাকে। হতভম্ব ভাব কেটে গেল প্রফেসরের। মেয়েটার নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ের এক মুহূর্ত নিজেকে তিরস্কার করলেন, এই মিষ্টি মেয়েটাকে নিয়ে কিনা কী সন্দেহ করেছিলেন তিনি! এর মধ্যে বিন্দুমাত্র দোষ থাকতে পারে না! চুমু খেলেন বাচ্চা মেয়েটির কপালে, তুলে নিলেন কোলে।
পরিচিত হলেন ইঞ্জিনিয়ার লোকটার সাথে। লোকটাকে দেখেই চিনেছিলেন তিনি। ইনিই আশ্রয় দিয়ে এসেছে এতদিন বৃষ্টিকে। মর্মান্তিক ট্রাজিডি বয়ে গেছে লোকটার উপর দিয়ের। লোকটা সমস্ত কথাই খুলে বললেন প্রফেসরকে। প্রফেসর আর তার স্ত্রী ছাড়া এত বড় বাড়িতে আর কেউ থাকে না। বৃষ্টির দায়িত্ব নিতে এক মুহূর্ত ভাবলেন না প্রফেসরের স্ত্রী নাজমা খাতুন। কোলে নিয়ে আদর করতে করতে নিজের ঘরে নিয়ে গেলেন তিনি।
খোরশেদ সাহেব বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে। এক মুহূর্ত মেয়েটার জন্য হুহু করে উঠল তার হৃদয়টা। এখন তার আপন বলতে তার কেউ রইলো না। রেহানার শেষ ইচ্ছা ছিল এই মেয়েটাকে দত্তক নেয়া। সিদ্ধান্ত নিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চেষ্টা করবে মেয়েটাকে দত্তক নিতে।
বৃষ্টির সাথে গল্প করে খেলে-ধুলেই সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় পার করে দিলেন প্রফেসর। সন্ধ্যার বেশ খানিকটা পর প্রফেসর রিডিং রুমে বসে ছিলেন। হঠাৎ তার স্ত্রী ব্যগ্র হয়ে ছুটে এলেন, ‘বৃষ্টিকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি, দেখেছ ওকে?’
বুকটা খচ করে উঠলো প্রফেসরের। মুখ তবুও শান্ত করে বললেন, ‘দেখছি দাড়াও!’ ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা চলে গেলেন তিনি বাড়ির পেছনে। আজ হয়তো পূর্ণিমা রাত! চারদিকে জ্যোৎস্নায় ফকফকে হয়ে আছে। তিনি দূর থেকেই দেখতে পেলেন একটা বাচ্চা মেয়ে বসে আছে কুয়োর একেবারে কিনার ঘেষে। তিনি ছুটে গেলেন সেখানে, ‘বৃষ্টি, তুমি এখানে কী করছ! চলে এসো বলছি ! পড়ে যাবে!’
খিলখিল করে হেসে উঠলো মেয়েটা। শরীর কেঁপে উঠলো প্রফেসরের। হাসিটা অদ্ভুত আর বাচ্চা সুলভ নয়। আহ্বান করলো বৃষ্টি তাকে , ‘এদিকে আসো দাদু, বসো আমার পাশে!’
এগিয়ে গেলেন তিনি বৃষ্টির কাছে। অসতর্ক ভঙ্গিতে ঝুকে পড়লো বৃষ্টি কুয়োর দিকে। হেসে বলল, ‘ওখানে তাকালে শুধু আঁধার দেখা যায়, দেখেছ তুমি? আসলে কী ওখানে শুধুই আঁধার আছে! সেখানে যে কত রহস্য লুকিয়ে আছে তা তোমার জানতে ইচ্ছা করে না দাদু!’
বাচ্চাসুলভ কথা এগুলো নয়। কৌতূহলী দৃষ্টিতে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি। মেয়েটার চোখ দুটো এত লাল লাগছে কেন!
‘তুমি এই কুয়োর রহস্য জানতে চাও না দাদু! চলো আজ তোমাকে এর রহস্য দেখিয়ে নিয়ে আসি! একটি হাত বাড়িয়ে দিল মেয়েটা। কপাল ভিজে উঠছে বৃদ্ধ লোকটার। সে আতঙ্কিত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কে তুমি?’
খিলখিল করে আবার হেসে উঠলো মেয়েটা হাত-পা ছুড়ে। ‘তুমি আমায় চেন না বুড়ো!’
কিছুক্ষণ দম বন্ধ করে রাখলেন আমির হোসেন। তারপর উচ্চারণ করলেন, ‘সেরাতে কুয়োয় পড়ে গিয়েছিল বৃষ্টি! আমি ছুটে এলাম। এরপরই কুয়ো থেকে উঠে এলে তুমি। আমি এতদিন ভাবতাম এসব ভুল! মনের বিকৃত ভুল চিন্তা। কিন্তু সব সত্যি! তুমি বৃষ্টি নও! তার রূপ ধরে উঠে আসা অন্য কেউ! কী চাও তুমি! এখানে কেন আবার ফিরে এলে!’
‘কী বলছ এসব তুমি পাগলের মতো দাদু! মনে যা আসছে তাই! আমিই বৃষ্টি! আমি এখানে আসবো না তো কোথায় যাব। নিজের ঘর ছেড়ে বুঝি দূরে থাকতে ভালো লাগে! দেখ না তোমার কাছে ফিরে আসার জন্য আমি কী কাণ্ড ঘটালাম! যারাই আমাকে বাঁধনে আটকাতে চেয়েছে কী পরিণতি হয়েছে তাদের!’
বিস্ফোরিত হয়ে উঠল আমির হোসেনের চোখ জোড়া। নিজের মনের ভেতর লুকিয়ে থাকা কী একটা জটিল সমস্যা যেন সমাধান হয়ে গেল কয়েক মুহূর্তে। মন বলে উঠলো, তুমি যা সন্দেহ করেছিলে তাই। মেয়েটাই সমস্ত কিছুর মুলে। সে শিশুর পবিত্র চেহারার পেছনে লুকিয়ে থাকা এক পিশাচি। আর মেয়েটার মূলে রয়েছে প্রাচীন কুয়ো। মূলের সন্ধানে যাও! কুয়োর ভেতর নামো। ভেদ করো সমস্ত রহস্য!
মেয়েটার চোখ ঠিকরে বের হচ্ছে লালচে আভা। ‘এসো দাদু! ভয় কিসের!’ মাথার পেছনে ঠাণ্ডা শীতল একটা স্পর্শ অনুভব করলেন বৃদ্ধ প্রফেসর। হাসিতে উদ্ভাসিত হয়ে আছে বৃষ্টির মুখ। শক্ত করে চেপে ধরলো সে বৃদ্ধের হাত।
জেল খানার গরাদের পেছনের একটা ঘরে শুয়ে আছে তানিয়া। জগতের সমস্ত বিষণ্ণতা এসে ভর করে আছে তার চোখে মুখে। এক রাতেই যে এভাবে তার সুন্দর সোনার সংসার তছনছ করে কেউ তাকে ধাক্কা মেরে নরকে ফেলে দিতে পারে কয়েক মাস আগে কোনো জ্যোতিষী এই ভবিষ্যৎবাণী দিলেও সে হেসে উড়িয়ে দিত। কিন্তু এখন তা বাস্তব! নিজের স্বামী ফরহাদের মৃত্যু এখনো মেনে নিতে পারছে না সে। তার উপরে ফরহাদকে খুনের অভিযোগে তাকেই ধরে আনা হয়েছে! ভাতৃসম রাকিব আর তাকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে অবৈধ সম্পর্কের গুঞ্জন। এর কোনো মানে হয়!
বৃষ্টির সেরাতে কী হয়েছিল! নিজের আপন মেয়ে কেন মিথ্যা বলে তাদের এত বড় সর্বনাশ করবে! এইসবই ভাবছিল শুয়ে শুয়ে সে। এমন সময় একটা ঠাণ্ডা বাতাসের স্রোত বয়ে গেল তার শরীরের উপর দিয়ে। চমকে উঠে বসলো সে। হালকা ডিম লাইটের আলোতে গরাদের ওপাশে একটা মানুষের অবয়ব দেখতে পেল সে। কে? নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না সে। গরাদ ভেদ করে লোকটার শরীর ঢুকে এলো ঘরের ভেতরে।
পুরো শরীর জমে গেল তার লোকটা আরেকটু তার কাছে এগিয়ে আসতে। ফরহাদ দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে। ওর সারা শরীর রক্তে চুবচুব করছে। একটা হাত মচকে উল্টো দিকে ঘুরে আছে, মাথা থেকে সরে ঝুলে আছে তার ঘিলু! ফরহাদের যে লাশ সেদিন রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছিল ওটাই যেন কবর খুঁড়ে উঠে এসেছে! থরথর করে কাঁপছে সে। চিৎকার করতে পারছে না। ফেসফ্যাসে শব্দ বেরিয়ে এলো ফরহাদের কণ্ঠ ফুঁড়ে, ‘কেমন আছ তুমি তানিয়া! আমাকে খুন করে বেশ আরামে ঘুমাচ্ছ দেখি, তোমার খুনি বন্ধুকে সাথে নিয়ে ঘুমালে না কেন? কী দোষ করেছিলাম আমি! কেন তুমি ধোকা দিলে আমায়! কেন তোমরা দুজনে মিলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বেলকনি থেকে ফেলে খুন করলে!’
‘বিশ্বাস করো ফরহাদ, এসব কিছুই সত্যি না!’ সামান্য জোর এসেছে তানিয়ার কণ্ঠে।
‘চুপ! তুই বিশ্বাসঘাতিনী। এখন তুই আমার সঙ্গী হবি মৃত্যুর পরের এই নিঃসঙ্গ জীবনে!’
আর কোনো কথা বলতে পারলো না তানিয়া। ফরহাদ মচকানো হাতটা একটানে সোজা করে শক্ত করে চেপে ধরলো তার গলা। ছটফট করতে লাগলো সে। হাত-পা ছুড়তে লাগলো, পিপাসা গলা শুকিয়ে এলো, ফুসফুস ভরে এলো শূন্যতায়। একসময় নিস্তেজ হয়ে গেল তার শরীর।
ধপাধপ শব্দ শুনে ছুটে এলো এক কনস্টেবল। দ্রুত গেট খুলে ভেতরে ঢুকলো। বিস্মিত হয়ে দেখলো আতঙ্কে বড় বড় হয়ে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে আছে মেয়েটার খোলা দুই চোখ, মুখ হা হয়ে খোলা। বেশ কিছুক্ষণ লাগলো তার এটা বুঝতে যে মেয়েটা মারা গেছে।
সেরাতে পুরুষদের কয়েদখানা থেকে খবর এলো আরেক কয়েদির দম বন্ধ হয়ে মরার খবর। ছেলেটার নাম রাকিব। ফরহাদের খালাতো ভাই এবং তার হত্যা মামলার ২য় আসামী।
চুপচাপ নিজের ঘরের বিছানায় বসে আছে ইঞ্জিনিয়ার খোরশেদ আলম। বৃষ্টিকে আজ প্রফেসর আমির হোসেনের ওখানে রেখে আসার পর থেকে বাড়িটা একদম ফাঁকা হয়ে গেছে। জানেন ঘুম আসবে না। তবুও একটু চেষ্টা করবেন ঘুমানোর। এমন সময় তার মনে হলো একটা বাচ্চা ছেলে যেন দৌড়ে গেল দরজার সামনে দিয়ে। কম্পিত বুক নিয়েই বিছানা থেকে নেমে বেরিয়ে এলেন ঘর থেকে। আৎকে উঠলেন তিনি! চোখে ভুল দেখছেন নাকি! ঝাপসা আলোতে দেখা যাচ্ছে একটা নারী মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে বেলকনিতে। ভয়ে ভয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি সেদিকে।……………………………………………….
.
.
. . . . চলবে . . . . .
.
.
লেখা: #Masud_Rana