বজ্জাত বউ পর্ব ৩৭
লেখিকা #বিলকিস
পর্ব ৩৭
অথৈ: আরে কি করছেন আপনি। জামাকাপুড় গুলো নিচে ফেলছেন কেনো। এই জামাকাপুড় গুলো গোছাতে বুঝি আমার কষ্ট হয়নি। নিচে ফেলার করনে ময়লা হয়ে যাচ্ছে।
পরশ: তুমি আলমারি তে হাত দিয়েছিলে।
অথৈ: হ্যা দিয়েছি তো
( বলতে পরশ অথৈকে এক থাপ্পার মরলো। থাপ্পার খেয়ে অথৈ মেজেতে পড়ে গেলো)
পরশ: তোমার সাহস হয় কি আমার আলমারিতে হাত দেওয়ার আর আমার জিনিস গুলো এলোমেলো করা। ( বলে পরশ আবার আলমারিতে খুজতে লাগল)
অথৈ: এটা খুজছেন তো ( মেজে থেকে ওঠে পরশের সামনে হাত বারিয়ে দিয়ে বললো)
পরশ: এই তো ওড়না টা। এটাই আমি খুজছি( বলে অথৈর দিকে তাকাতেই দেখে অথৈর চোখ দিয়ে পানি পরছে)
অথৈ: এটা মিষ্টি আপু ওড়না না। মিষ্টি আপু থেকে ওড়ে এসে আপনার কাছে পড়েছিলো। আমি হয়তো হয়তো আর পাঁচটা মেয়ের মতো না কিন্তু আমি কখনো কাউকে ভালোবাসিনি তাই বলে কি অন্যর ভালোবাসা টা বুঝি।( কাঁদো গলায় ফুপিয়ে ফুপিয়ে বললো)
পরশ: তুমি জানলে কি করে এটা মিষ্টির কাছে ওড়ে আসা ওড়না।
অথৈ: আপনার জেনে লাভ কি ( বলে অথৈ রুম থেকে বের হয়ে দৌড় দিয়ে ছাদের চিলি কোঠার রুমে গিয়ে বসলো)
পরশ: কি করে জানলো অথৈ।
অথৈ: এতো জোড়ে কেউ কাউকে থাপ্পর দেই। হাত তো নয় একটা তক্কা। কি শক্ত। মুখটা খুলে গেছে। লাল হয়ে গেছে। কথা বলতে পারছিনা ব্যাথা করছে মনে হচ্ছে মাড়ির দাঁত গুলো নড়ে গেছে। আমি কেস করবো আমার মরলো কেনো আমার কষ্ট হয়না। জীবনে কথা বলবো না আর আমি তোকে দেখে নিবো শয়তান, আজাগড় সাপ, এনাকোন্ডা, ( একাই একাই বলতে লাগলো আর কাঁদতে লাগলো)
পরশ: কি এখনে তো অথৈ নেই কোথায় গেলো।
পরশের আম্মু: পরশ অথৈকে দেখেছিস। অনেক ক্ষন হলো নিচে আসেনি। আর এখন খাওয়ার সময় তাওতো কোথায় গেলো মেয়েটা।
পরশ: আম্মু তুমি আমাকে খেতে দাও।
আম্মু: হ্যারে তুই ওকে কিছু বলিস নি তো ( খেতে দিতে দিতে বললো) মেয়েটা বেশ অভিমানী। অল্পতেই রাগ হয়ে যাই।
পরশ: আম্মু তুমি খেয়ে নাও আর আমাকে খেতে দাও। ওর যখন ক্ষিদে পাবে তখন খেয়ে নেবো।
আম্মু: কিন্তু মেয়েটা
পরশ: আম্মু তোমার ওষুধটা কিন্তু সময় মতো না নিলে ব্যাথা টা বেড়ে যাবে। খেয়ে নাও।
অথৈ: যাক বাবা রুমে নেই। রক্ষাস কোথা কর। আমার খাতা আর পেনন্সিল এই তো পেয়েছি ( বলে ছবি আকতো বসলো। ছবি আঁকতে আঁকতে সোফার উপর ঘুমিয়ে পড়লো।)
পরশ: কোথায় গিয়েছে অথৈ। আমার থাপ্পার দেওয়াটা ঠিক হয়নি। কিন্তু আমি কি করবো আলমারিতে মিষ্টির ওড়নাটা না দেখতে পেয়ে মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো রাগ কন্ট্রোল না করতে পেয়ে। মেয়েটা হাত পায়ে বড় হয়েছে মাথা বুন্ধি তো ছোটো বাচ্চা দের মতো। ( বলতে বলতে রুমে ঢুকে দেখে অথৈ সোফার ঘুমিয়ে রয়েছে) এই মেয়ে তো এখনে ঘুমিয়ে রয়েছে আর আমি সারা বাড়ি খুজছি। কিন্তু না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে ( বলে রুম থেকে বের হয়ে ড্রেসিং টেবিল থেকে একপ্রেল্ট খাবার এনে রুমে টেবিলে উপর রেখে দিয়ে বিছানা থেকে কম্বলটা এনে অথৈর গায়ে উপর দিয়ে দিতেই হঠ্যাৎ চোখ পড়লো খাতাটা উপর খাতাটা খুলতে পরশ হেসে দিলো)
পরশ: এই মেয়ে দেখছি পুরো টা পাগল। এগুলো আমাকে একেছে। এনাকোন্ডার, ডায়নাছোর, পঁচা কুমড়ো পরশ তোকে আর কতো কিছু দেখতে হবে ( বলে খাতাটা রেখে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো)
রাত ২:৩০ মিনিট
অথৈ : আহ্ কি ক্ষিদে পেয়েছি। পেটের ইদুর দৌড়াছে। এরজন্য সবাই বলে খাবার উপর রাগ করতে নেই। কেনো যে তখন খেলাম না। এখন ক্ষিদে জ্বালা থাকতে পারছিনা ( বলতে টেবিলে দিবে চোখ পড়তেই) ওটা কি খাবার। দেখিতো ( বলে টেবিল কাছে গিয়ে) এই তো খাবার। thank কে আনলো খাবার পঁচা কুমড়ো না না ওনি জীবনে খাবার আনবে না নিশ্চয় মামনি এনেছে ( বলে খেতে লাগলো) আয় কি মজার খাবার ( বলতে অথৈ খাবার খেতে খেতে খাবার ঠেকে গিয়ে পচন্ড কাশি হতে লাগলো)
পরশ: এই মাঝরাতে কাশি ( বলে তাকাইতে দেখে অথৈর কাশছে)
অথৈ: পা পানি। ওই তো পানি ( বলে গ্লাসটা হাতে নিয়ে ঢক ঢক করে পানি খেয়ে নিলো) আয় বাঁচলাম।
পরশ: এতো তাড়াতাড়ি খেলে তো ঠেকবেই। ধিরে সুস্থ্য খেতে পারো
না ( বলে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো)
অথৈ: দেখো জ্ঞান দিচ্ছে ( মনে মনে বললো)
সকাল
অথৈ ফ্রেস হয়ে নিচে এসে ড্রেসিং টেবিলে বসতেই
দিশা: অথৈ তোমার বা গালটা এতো লাল আর ফুলা লাগছে কেনো।
অথৈ: চুপ
দিশা: ভাইয়া তুই এসেছিস ( পরশকে দেখে বললো) দেখ অথৈ বা গালটা লাল হয়েছে।
মামনি: কি হয়েছে অথৈ
অথৈ: আসলে মামানি দিশা আপু রাতে একটা ন্যাড়া বিচ্ছু কামুড় দিয়েছিলো। ( বলে পরশের দিকো তাকালো) জানো বিচ্ছুটার দু হাত, দু পা, আর মাথা আর মুখ ভরা চুল আছে।
দিশা: বুঝলাম তা ন্যাড়া বিচ্ছু যে কামুড় দিলো তা কিসের জন্য ওই সুন্দরী ন্যাড়া বিচ্ছুনী কি করেছিলো।
পরশ : আর কতো কিছু শুনতে হবে আমাকে এনাকুন্ডা, ডাইনাছোর, পঁচা কুমড়ো আর এখন ন্যাড়া বিচ্ছু আর কতো নাম শুনতে হবে। ( মনে মনে বললো) আম্মু আমি আসছি ( বলে আফিসে চলে গেলো)
অথৈ: দিশা আপু জানো ওনাকে না পাগলে ডাক্তারে কাছে নিয়ে যেতে হবে। মাথাটা বোধহয় গেছে।
দিশা: তাই তা তুই পাগলে ডাক্তার হলে তো পারিস। আম্মু আসি।
সারাদিন কেটে যাই। রাতেই কোনো কথা না বলে শুয়ে পরে।
পরেদিন সকালে পরশ ঘুম থেকে ফ্রেস হয়ে ড্রেসিং সামনে দাড়াতে দেখে কাজল দিয়ে বড় বড় করে লেখা যে আজ আমার ভার্সিটিতে ভর্তি হতে হবে এর টাকা দরকার। দয়া করিয়া টাকা গুলো দেবেন ধার হিসাবে।
পরশ: ধার ( বলে পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে টেবিলে উপর রেখে রুম থেকে চলে গেলো। ড্রাইনিং টেবিলে খাবার খেয়ে আফিসে চলে গেলো। এদিকে অথৈ রেডি হয়ে ভর্তি জন্য ভার্সিটিতে চলে গেলো। ভর্তি হয়ে বাড়িতে ফিরে কাজ, গল্প করলো কিন্তু পরশের জ্বালানো তো দুরে থাক একাটা কথাও বলেনি। এভাবে ১০ দিন কেটে গেলো।
সকালে
অথৈ: মামনি আজ থেকে আমার ক্লাস শুধু আমি আসছি ( বলে চলে গেলো)
ভার্সিটিতে
কি রে দোস্ত এখানে বসে আজ আছিস। ও বুঝতে পেরেছি রাফান চোধুরী ( রাফান ভার্সিটিতে v.c এর ছেলে) আজ পরীদের দেখার জন্য বসে আছে। আজ তো আবার first year এর নতুন ক্লাস। নতুন মেয়ে।
আকাশ( রাফানে বন্ধু): কি রে রাফান কথা বলছিস না কেনো।
রাফান: সামনে তাকিয়ে দেখ একটা লাল পরী আসছে। লাল ড্রেস, চুল গুলো খোলা, হালকা লাল লিপিস্টি, কপালে লাল টিপ
আকাশ: ওয়াও সত্যি পরি।
রাফান: এই লাল পরিকে আমার চাই।
রিয়া: এই অথৈ ( পেছন থেকে বললো) কখন থেকে ডাকছি। ওয়াও অথৈ তোকে আজ লাল ড্রেসে দারুন লাগছে। তোর বর তোকো দেকেছে।
অথৈ: না তুই ওসব বাদ চল আগে ক্লাসের দিকে যাই( বলে ক্লাসে চলে গেলো)………. ( চলবে)