বন্ধু
পর্ব ৩
বাবু, শাহিনের পাশে গিয়ে বসলো, বাবু বসাতে শাহিন পা নামিয়ে নিলো, এটা দেখে বাবু বলল,
-তুই পা তুলে আরাম করে বস, আমি উঠে যাচ্ছি।
– না,রে তুই বস উঠতে হবে না।
হঠাৎ করে সবাই কেমন জানি চুপচাপ হয়ে গেছে। আসলে শাহিনকে কেউ কোন প্রশ্ন করতে সাহস পাচ্ছে না। সবার মনে ভয় ঢুকে আছে, এভাবে শাহিন এত বছর পরে কেন ওদের কাছে এসেছে? অজানা কোন দুর্ঘটনার আশংকায় ওদের মন ছেয়ে আছে। শাহিন যদি নিজে থেকে কথা শুরু করে তবে ঠিক আছে।
এবার রিফাত কথা বলে উঠলো,
-বাবু তুই একটু এদিকে এসে বস, আমি রিফাতের নাকের ব্যথাটার কি অবস্থা দেখি।
বাবু উঠে গেলে রিফাত শাহিনের কাছে এসে বলল,
– নাকে কি ভাবে ব্যথা পেয়েছিস? ঠিক কোন জায়গায় ব্যথা বলতো?
শাহিন কোন কথা বলছে না দেখে, রিফাত শাহিনের মুখটা লাইটের দিকে ঘুরিয়ে দিলো আর মোবাইলের আলোটা নাকের উপরে ধরলো,
রিফাত অবাক হয়ে বলল,
– শাহিন তোর নাকের ভেতরে তো রক্ত জমাট বেধে আছে কি হয়েছে বল? কি ভাবে নাকে আঘাত পেয়েছিস?
শাহিন রিফাতের হাতটা সরিয়ে দিলো, আর অন্য দিকে ফিরে চোখ মুছতে লাগলো। শাহিন তার প্রতি বন্ধুদের এত ভালোবাসা দেখে নিজেকে কিছুতেই ধরে রাখতে পারছে না।ওর ইচ্ছে হচ্ছে চিৎকার করে কাঁদতে।
রিফাত শাহিনকে বলল,
আমার দিকে তাকা তোর নাকের ব্লাড ক্লিন করতে হবে তার পর আমি দেখবো কি হয়েছে,এখনও ব্যথা আছে ? ব্যথার ঔষধ খেয়েছিস?
এবার অরুণ কথা বলল,
– না, মনে হয়।
– কেন? তোর বাসায় কি একটা নাপাও থাকে না? নাকি?
রিফাতের কথা শুনে অরুনের ক্ষেপে যাওয়ার কথা কিন্তু ও আজ কিছু বলল না, কারণ ওদের সবারই মানসিক অবস্থা এখন ভালো না, যতক্ষন পর্যন্ত না শাহিনের কি হয়েছে তা ওরা জানতে পারছে। আর শাহিন এখন আরো বেশি চুপচাপ হয়ে আছে।
পরিবেশটা কেমন গুমোট হয়ে আছে, অথচ এতক্ষন থেকে অরুন শুধু বন্ধুদের অপেক্ষায় ছিলো ভেবেছিলো ওরা আসলে সব কিছু সহজ হয়ে যাবে। এখন তো মনে হচ্ছে তৃষাকে বললেই হতো শাহিনের সাথে কথা বলতে, তা হলে তৃষ্ণা নিশ্চয়ই এতক্ষনে বের করে ফেলতো শাহিনের কি হয়েছে?
অরুণ এবার শাহিনের উদ্দেশ্য বলল,
– শাহিন তোর কি হয়েছে, আমাদের খুলে বল, দেখ আমরা সবাই অনেক টেনশনে আছি, আমার টেনশনে প্রেশার বেড়ে যায়, আর আমাদের বলতে না চাইলে তৃষ্ণাকে বল তোর কি হয়েছে?
এবার জিয়া কথা বলল,
– অরুণ গাধার মতো কথা বলিস কেন? শাহিন আমাদের বন্ধু না তৃষ্ণার? এখানে তৃষ্ণার কথা আসছে কেন? শাহিনের কিছু বলতে ইচ্ছে হলে বলবে আর বলতে না চাইলে বলবে না।আমাদের বন্ধুদের বিষয়ে তৃষ্ণাকে ইনভলভ করা কি ঠিক হবে?
বলেই অন্যদের দিকে চাইলো, সবাই ইশারায় তাদের সম্মতি জানালো।
এবার শাহিন নিজে কথা বলল,
আমার ব্যাগে ঔষধ আছে, তোদের ব্যস্ত হতে হবে না। আপাতত আর ব্লিডিং হবে না।
কেউ খেয়াল না করলে-ও কথাটা রিফাত ঠিকই খেয়াল করেছে, আপাতত মানে কি? তারমানে শাহিনের নাকের ব্লিডিং – কোন আঘাত লেগে হয় নাই?
এতক্ষনে সবাই খেয়াল করলো শাহিনের সাথে একটা মোটামুটি বড় সাইজের হ্যান্ড ব্যাগ আছে।
বাবু এবার কথা বলল,
– অরুন তৃষ্ণা কি ঘুমিয়ে গেছে নাকি?
– জানি না, না, বোধ হয়। কেন?
– না, তোর বাসায় আসলাম এক কাপ চা- কফি কিছু দিলি না অফারও করলি না তাই, আর কি
– চা- কফির জন্য তৃষ্ণাকে লাগবে কেন? আমি তোর মতো নাকি যে পানি’টাও বউ- এর ঢেলে দেওয়ার অপেক্ষায় থাকি। চা- খায়ানো যাবে না, আমি কফি রেডি করে রেখেছি শুধু গরম পানি মেলাবো, বাবু আমার সাথে চল কফি নিয়ে আসবি। আর কিছু খাবি কেউ?
বাবু তখন বলল,
-দোস্ত অনেক আগে ডিনার করেছি, ক্ষুধা লেগে গেছে, রেডি সমুচা থাকলে ভেজে আন।
– আমার সাথে ইয়ার্কি মারছিস? বিস্কুট খেলে বল এনে দিচ্ছি,
এটা বলার সাথে সাথে অরুনের মনে পড়ে গেলো, সমুচা শাহিনের সব চাইতে ফেবারিট ছিলো। ওরা কলেজে সমুচা খেলে সব সময় শাহিনের জন্য একটা বেশি নিতো। অরুন শাহিনের দিকে তাকালো এবং খেয়াল করলো সবাই শাহিনের দিকে তাকিয়ে আছে।
– শাহিন সমুচা খাবি?
– নারে অরুন। পারলে আমাকে এক মগ কালো কফি দে, মাথাটা কেমন জানি লাগছে। তোকে অনেক ঝামেলায় ফেলে দিলাম।
– আসলেই ঝামেলায় ফেলে দিয়েছিস! তোর এই সন্যাসী মার্কা চেহারা দেখতে আর ভালো লাগছে না। একটু স্বাভাবিক হয়। শুধু তোর জন্য এত রাতে সবাই চলে এসেছে, এগুলো এতক্ষনে নাক ডেকে ঘুমাতো। অথচ তুই একদম চুপ হয়ে আছিস।
এখন তো আমরা তোর কেউ না এতক্ষন থেকে একটা কথাও নিজে থেকে আমাদের সাথে বলেছিস?
এবার জিয়া বলল,
– অরুন চুপ কর ওর কিছু বলতে হবে না, ও এসেছে এতেই আমরা খুশি। তুই কফি নিয়ে আয় আর আমার জন্য একটা পারোটা ভেজে আনিস
এটা বলার সাথে সাথে সবাই হেসে ফেলে,
এবার অরুণ বলে,
-দাড়া তোদের আমার সাথে ইয়ার্কি বন্ধ করতেছি, এখনই তৃষ্ণাকে বলবো, ওর আদা,রসুন, পেঁয়াজ যা, যা দরকার সব বের করে দিতে, তারপর জিয়া আর বাবু মিলে ছিলবি।
বাবু আর অরুণ মিলে সবার জন্য কফি বানালো, অরুন ফ্রিজ থেকে ফ্রোজেন চিকেন সমুচা বের করে সমুচা ভাজতে ভাজতে বাবুর সাথে শাহিনকে নিয়ে কথা বলছে,
– বাবু তোর কি মনে হয়? শাহিনের কি হয়েছে?
– দোস্ত বুঝতে পারছি না। শাহিনের বিয়ের পরে তো আমাদের কারো সাথেই ওর যোগাযোগ ছিলো না, আর ও তো মনে হয় দেশেও ছিলো না যতটুকু জানতাম, দেশে থাকলে তো কোথাও না কোথাও ও সাথে দেখা হতোই তাই না। হাসবেন্ডের সাথে সাধারণ ঝগড়া করে আসার কিছু নাই, তারপর ধর ওর ডিভোর্স হয়ে গেছে, তাতেও আমাদের কাছে আসবে না, ধর ওর হাসবেন্ড একটা বদ লোক, লোকটা ওকে অনেক মেরেছে তাই ও আমাদের কাছে চলে এসেছে, তা না হলে হয়তো ওকে যখন লোকটা মারছিলো ও একটা ফুলদানি ছুড়ে মেরেছে লোকটা পটল তুলেছে আর শাহিন ভয় পেয়ে আমাদের সাহায্যের জন্য এসেছে।
– যা,তুই এত ফালতু কথা বলতে পারিস! আমার কাছে একটাও মনে হচ্ছে না।
অরুন আর বাবু কফি,সমুচা আর বিস্কুট নিয়ে বসার ঘরে যেতেই সবাই হইচই করে উঠলো, রিফাত বলল,
– বাহ্, অরুন,তৃষ্ণা তোকে একদম পার্ফেক্ট ট্রনিং দিয়েছে কি ভাবে রাতে বেলা বন্ধুরা আসলে আপায়ন করতে হয়।
জিয়া এবার বলল,
– কি রে সমুচা আনলি, আমার পারাটা কই?
– তুই নিজে গিয়ে বানিয়ে আন, আর একটু বেশি করে বানাবি সকালে আমরাও নাস্তা করতে পারি যেন।
পরিবেশটা হালকা হচ্ছে।
অরুণ সমুচার প্লেট হাতে নিয়ে শাহিনের কাছে দিলো আর বলল,
– নে তোর পছন্দের সমুচা খা।
তাই দেখে বাবু বলল,
-কি রে সমুচা আমি ভাজতে বললাম আর প্লেট সহ শাহিনকে দিয়ে দিলি যে।
শাহিনের কাছাকাছি সবাই কার্পেটের উপরে গিয়ে বসলো, সবাই কফি আর সমুচা খাচ্ছে।
শহিন একটা সমুচা হাতে নিয়ে বলল,
– একসময় তোরা সবাই আমাকে কত ভালোবাসতি, কলেজের ক্যান্টিনে সমুচা অর্ডার দিলে আমার জন্য৷ একটা বেশি নিতি। এখনো তোরা আমার পছন্দ মনে রেখেছিস।
রিফাত তখন বলল,
-আমরা তোর মতো সেলফিশ না, তুই আমাদের ভুলে গেলেও আমরা তোকে একদিনের জন্যও ভুলি নাই।
– আমি তোদের সত্যি ভুলে গিয়েছিলাম রে
– আজকে কি ভাবে মনে পড়লো?
রিফাতের কথায়, অরুণ মজা করে বলল,
– বাবু একটু আগে বলছিলো, শাহিন মনে হয় ওর হাসবেন্ডকে সিনেমা স্টাইলে খুন করে ফেলেছে, তারপর আমাদের কাছে এসেছে।
এবার শাহিন সিরিয়াস মুখে বলল,
– আমি যদি সত্যিই কাউকে খুন করে এসে থাকি তাহলে তোরা কি আমাকে এখন চলে যেতে বলবি বা থানায় খবর দিবি?
অরুনের তাড়াতাড়ি করে বলল,
– শাহিন এগুলো কি বলিস আবোল তাবোল?
এবার শাহিন আবারও বলল,
– কেন তোরা আমার বিয়ের আগের দিন রাতে, একজন একজন করে আমার বাসার ছাদে গিয়ে আমাকে নিয়ে চিটাগং ভেগে যেতে চাস নাই। আর বলিস নাই আমার জন্য তোরা সব কিছু করতে পারবি, এমনকি খুনও করতে পারবি।
– হ্যা, আমরা খুন করতে পারবো বলেছি, তোকে তো খুন করতে বলি নাই,বলেই জিয়া জোরে জোরে হাসতে লাগলো,
এবার শাহিন বলল,
– হাসতেছিস কেন? এটা কি হাসির কথা
জিয়া এবার বলল,
– শোন তোর বিয়ের পরের কথা,আমরা তখন মন খারাপ করে থাকি সারাক্ষণ। একদিন বাবু সাহস করে তোদের বাসায় গিয়েছিল তোর শ্বশুর বাড়ির ঠিকানা জানার জন্য,আমরা চারজন ঠিক করেছিলাম তোর শ্বশুর বাড়ির ঠিকানা নিয়ে আমরা তোর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তোকে দেখে আসবো।
– তারপর কি হলো?
– তোর বাবা,বাবুকে এমন জেরা করেছে যে,বাবু তখন তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে, আর বলেছে আমরা তো শাহিনের শ্বশুর বাড়ির কাছে বেড়াতে যাবো, তাই ভাবছিলাম, আপনাদের যদি শাহিনকে কিছু বলার থাকে তা হলে, শাহিনের সাথে দেখা করে আসতাম।
তখন তোর বাবা বাবুকে বলেছে, শাহিনের শ্বশুর বাড়ি কোথায় বলো?
বাবু তখন বলেছ, এটাই তো জানতে এসেছি, আপনি না বললে জানবো কি ভাবে?বলেই বাবু এক দৌড়!
সবাই হাসতে লাগলো পুরাতন কথা মনে করে,
এবার, রিফাত বলল,
– আচ্ছা আমরা যে তোকে পালাতে বলেছিলাম তুই আসলি না কেন?
এবার শাহিন সেদিনের ঘটনা বলল,
– সেদিন রাতে প্রথমে, রাত একটা’টার সময় আমার জালানায় জিয়া নক করলো, আমি তো জানতামই তোরা কোন না কোন ভাবে আমার সাথে দেখা করতে আসবি, আমি জেগে ছিলাম, জিয়া এত ফিসফিস করে কথা বলছিলো যে আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না, আমি ওকে বললাম লেখে নিয়ে আয়, কি বলছিস বুঝতে পারছি না।
তারপর এলো অরুন, ওর সাথে কথা বলার জন্য আমি বের হয়েছিলাম, বাসা ভর্তি তখন গ্রামের মেহমানে, কোন রকমে বের হলাম, তরুন বলল,ও তোদের সাথে কথা বলে ফাইনাল জানাবে আমি ঠিক কখন বের হবো, তারপর আসলো রিফাত ওর আসার পরে, আসলো বাবু আর বাবু আমার জানালায় টোকা না দিয়ে আব্বার জানালায় টোকা দিয়ে জিয়ার লেখা চিঠি ঠিক না, আমাদের পালানোর সব প্ল্যান লেখা কাগজ আমার জানালা খোলার সাথে সাথে আব্বার হাতে দিয়েই দেয় দৌড় ও হয়তো উত্তেজনায় খেয়ালও করে নাই কাগজটা কাকে দিয়েছে। আব্বা তো সেই প্ল্যান পড়ে আমাকে ওনার রুমে ডেকে নেন,
– তারপর কি হয়েছিল?
– তারপর আব্বা আমার সামনে আম্মার গলা চেপে ধরে, আর আম্মাকে বলতে থাকে, আম্মার আস্কারা পেয়ে আমি এমন খারাপ মেয়ে হয়েছি যে একসাথে চারটা ছেলের সাথে ভেগে যেওয়ার প্ল্যান করেছি।
এইটুকু বলে শাহিন থামলো, এদিকে ওদের সবার চোখের উপরে ভেসে উঠলো শাহিনের প্রচন্ড রাগী বাবা তার মা’কে মারছে ওরা, সবাই লজ্জিত মুখে শাহিনের দিকে চেয়ে আছে, কি বলবে বুঝতে পারছে না তখন তাদের বয়স কত হবে উনিশ বছর এর বেশি তো না। তারা কত ছেলে মানুষ ছিলো।
শাহিন আবার বলতে শুরু করলো,
– আব্বা এত বাজে কথা বলছিলো যে, আমি আব্বার পায়ে ধরে মাফ চাই আর বলি, আব্বা আপনি আমাকে ওদের জড়িয়ে আর কোন খারাপ কথা বলবেন না, আপনি যা বলবেন আমি শুনবো। আমি আর কোন দিন ভুলেও আমার বন্ধুদের সাথে কথা বলবো না।
আব্বা তারপরেও বলে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে আবার বন্ধু কি? বলেই আব্বা আমাকে প্রচন্ড জোরে একটা থাপ্পড় মারে, আর আম্মাকে বলে, আমি এখন এত রাতে ঐ সবকটা বদমায়েশের কীর্তি ওদের বাবাদের দেখাবো প্রমাণ সহ, আমার মেয়েকে নিয়ে ভেগে যাওয়ার প্ল্যান করে এত বড় সাহস?
সেদিন আম্মা আব্বাকে ঠেকায়, আর আমিও এক মিনিটের মধ্যে বড় হয়ে গেলাম, বুঝতে পারলাম আমাদের সমাজে মেয়েদের আসলে কোন মানুষই মনে করে না, আমি এত করে বললাম আমি পড়তে চাই, এখন বিয়ে করবো না কেউ আমার কথার কোন মূল্য দিলো না মেয়েদের ইচ্ছে-অনিচ্ছে, পছন্দ- অপছন্দের কোন মূল্য নাই।
তারপর আমিও আম্মাকে বলি আব্বা যদি এই ঘটনা আমার কোন বন্ধুর বাসায় বলে, তা হলে আমি যে কোন ভাবেই হউক আত্মহত্যা করবো। আর তোদের বসায় না জানালে চুপচাপ বিয়ে করবো। এই ছিলো সেদিনের ঘটনা।
এই ঘটনা শোনে সবার চোখে পানি চলে এসেছে, কোন রকমে জিয়া বলল,
– তোর বিয়ের পরে-ও তো তোরা মানে তোর আব্বা-আম্মারা আমাদের পাড়াতেই ছিলো আরো দুই-তিন বছর, কিন্তু তোর কোন খবর বা তোকে তো বিয়ের পরে এবারের জন্যও আসতে দেখি নাই, আর তোর ভাইকে একদিন তোর কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম উনি শুধু বললেন, তুই ঐ পটকা মাছের সাথে দুবাই চলে গেছিস।
– হু,আমি সেদিনই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম,আমার আব্বা- আম্মা যতদিন ঐ পাড়াতে থাকবে আমি কোনদিন আমার বাবার বাড়িতে আসবো না।
বাবু বলল,
– আচ্ছা, তুই অরুনের এই ফ্ল্যাটের ঠিকানা পেলি কোথায়?
– আমার হাসবেন্ডের এক কাজিনের বিয়ের ছবি দেখছিলাম ফেসবুকে, তখন সেই বিয়েতে তৃষ্ণা আর অরুনের ছবি দেখি তখন আমরা চিটাগং থাকি,সেটা দুই বছর আগের কথা।তারপর ঐ কাজিনের কাছ থেকে ঠিকানা নিলাম।
-এখন তুই চিটাগং থাকিস না? মানে এখন কোথায় থাকিস? আজ রাতে কোথা থেকে এসেছিস?
– আমার হাসবেন্ড, যাকে তোরা পটকা মাছ বলিস তাঁকে খুন করে, তোদের সহ ফাঁসিতে ঝুলতে এসেছি, বলেই শাহিন হাসতে লাগলো,
রিফাত বলল,
– লাভ নাই, তোর এই ইচ্ছে পূরণ হবে না, বাবুর বউ সোহানা সাংঘাতিক উকিল আমরা ওকে তোর পক্ষের আইনজীবী হিসাবে নিয়োগ দিয়ে দিবো, সোহানা এমন চাল দিবে দেখা গেলো সব প্রমান হাতে থাকলে-ও আমরা সবাই বেকসুর খালাস পেয়ে যাবো উল্টা এমন হবে যে, তোর পটকা মাছ’কেই বিচারক দোষী বলে রায় দিবে, ওর কারণেই ওকে খুন করতে বাধ্য হয়েছিস তুই।
সবাই হাসতেছে, এর মধ্যে হঠাৎ করে অরন চিৎকার দিয়ে উঠলো শাহিনের নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত পরছে।
চলবে…….
#লেখাঃসুরাইয়া_শারমিন