20/04/2024

বজ্জাত বউ পর্ব। ৩২

বজ্জাত_বউ

লেখিকা #বিলকিস
পর্ব। ৩২
অথৈ: এভাবে যে আর কতো ক্ষন বসে থাকতে কে জানে। নিজের বাড়ি থেকে শুধু করে এই বাড়ির আসার পর থেকে শুধু বসে বসে আছে। বিয়ে করতে যে এতো কষ্ট হয় আগে যানতাম না তারপরে খুব ক্ষিদে পেয়েছে। কেউ একটু খেতে দিচ্ছে না। নিজের বাড়ি হলে কখন খেয়ে নিতাম। ( মনে মনে বললো)
দিশা: কি অথৈ খুব ক্ষিদে পেয়েছে না। না না অথৈ না ভাবী। আজ থেকে তোমাকে ভাবী বলে ডাকবো
অথৈ: না আসলে আমি তোমার অনেক ছোটো তাই নাম ধরে ডাকলে হবে
দিশা: তুমি ছোটো কিন্তু আমার ভাই তো আমার থেকে বড়। তাই তোমাকে ভাবী বলে ডাকবো।
পরশের আম্মু: দিশা তুই খাবার নিয়ে আয়। আর মা এটা তুমি তোমার নিজের বাড়ি ভাববে। বুঝেছো। আর যা দরকার আমাকে বলবে।
অথৈ: ঠিক আছে আন্টি।
পরশের আম্মু: আন্টি না আজ থেকে তুমি আমাকে মামনি বলে ডাকবে।
অথৈ: ঠিক আছে আন না মামনি।
দিশা: এই যে খাবার
পরশের আম্মু: আমাকে দে আমি খাইয়ে দিচ্ছি ( বলে খাইয়ে দিলো) দিশা তুই ভাইয়া কউরে।
দিশা: ভাইয়া আসি নি। ভাইয়া তো গাড়ির থেকে নেমে গিয়েছিলো আর বলেছিলো আমি একটু পর বাড়ি ফিরবো।
অথৈ: আমি তো ভুলে গিয়েছিলাম। আম্মুর জামাইয়ে কথা। তাকে আমি এখনে দেখতে পেলাম। গাড়িতে এতো বড় গোমটা টেনে দিয়েছিলো আমার। যে আমি দেখতে পারি না। কে যানে কেমন সে তবে না তার কন্ঠটা খুব চেনা একদম ওই পঁচা কুমড়ো আঙ্কেলটার মতো। আরে কি ভাবছি আমি এসব একি রকমের কন্ঠ অনেকেরও হতে পারে ( মনে মনে বললো)
পরশের আম্মু: কি ভাবছিস মা।
অথৈ: কিছু না।
দিশা: তোর ভাইয়া ফোন দে আর বাড়ি আসতে বল
পরশের বাবা: লাভ নেই। তোমার ছেলে ফোন ধরবে না। আমি জানি ও কোথায় গিয়েছে। ঠিক সময় ফিরে আসবে।
দিশা: ভাইয়া কি আজ ও ম
পরশের বাবা: না ও কথা দিয়েছে ও আজ খাবে না।
অথৈ: কি সব বলছে ওনারা কিছু তো বুখতে পারছিনা। আহ্ অসহ্য লাগছে আমার। এতো ভারি শাড়ি পরে তারপর এতো গহনা আর নিতে পারছিনা আমি। আর কতো ক্ষন বসে থাকতে হবে আমার। ইচ্ছে তো করছে এখানে দাড়িয়ে কিছুটা লাফালাফি করি।
পরশের আম্মু: দিশা তুই অথৈকে তোর ভাইয়া রুমে নিয়ে যা।
দিশা: চলো ভাবী ( বলে পরশের রুমে দিকে নিয়ে গেলো)
পরশ: কেমন আছো মিষ্টি( মিষ্টির কবরে পাশে বসে বললো) তুমি খুশিহয়েছো তো। আমি আজ বিয়ে করেছি মিষ্টি। সেই ঘর, সেই খাট, সেই বিছানা, যেখানে তুমি থাকতে সেখানে আজ অন্য একটা মেয়ে বসে আছে। যাকে আমি এখন পযন্ত দেখি নাই। ( মিষ্টির কবরে উপর হাত দিয়ে বললো) বিশ্বাস করো মিষ্টি আমার ওই একটু যেতে ইচ্ছে করছে না। যেখানে তুমি থাকতে সেখানে অন্য কাউকে কি করে পারবো আমি বলো। তুমি এখানে শুয়ে আছে খুব নিরবে আর আমি জ্বলছি তোমার জন্য। ওই মেয়েটা আমার জন্য অপেক্ষা করছে আর আমি অপেক্ষা করছি কবে তোমার কাছে আসবো। কি হলে কথা বলবে আমার সাথে। অভিমান হয়েছে না। তুমি তো চেয়েছিলে আমি নতুন ভাবে শুরু করি কি হলো বলে ( বলতে পরশের কাধের কেউ হাত রাখতে সে বললো)
ইমাম সাহেব: বাবা অনেক রাত হয়েছে। বাড়ি ফিরে যাও। কবর স্থান যে এখন বন্ধ করা হবে।
পরশ: হ্যা ভালো থেকে মিষ্টি আমি আসছি ( বলে পরশ কবরে উপর একটা গোলাপ ফুল রেখে কবর জিয়ারত করে করসস্থান থেকে বের হয়ে আসলো।
দিশা: এসো এটা আজ থেকে তোমার ঘর। তুমি এখানে বসে থাকো আমি দেখি ভাইয়া আসলো কি না ( বলে চলে গেলো)
অথৈ: বাহ্ রুমটা বেশ বড়তো। পুরা রুম আসবারপএ দিয়ে সুন্দর করে সাজানে। আলমারি, ড্রেসিং টেবিল, আরো কতো আসবারপএ। আবির ঠিক বলেছিলো এরা খুব বড়লোক। পুরা রুম দেখছি মোমবাতি আর গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে সাজানো। একি পুরা রুমে একটাও আম্মুর জামাইয়ে ছবি নেই। আহ এই ভারি গহনা গুলো আগে খুলে ফেলি অসহ্য লাগছে। (বলে গায়ের গহনা গুলো খুলে ফেললো) আচ্ছা ওনি যখন রুমে আসবে তখন ওনাকে সরাসরি বলে দেবো আমার দেরমহুরে টাকাগুলো দিয়ে দিতে। আরে ওখানে পরদার ওপারে মনে একটা ছবি (পরদার দিকে চোখ পড়তে বললো)। কার ছবি ওটা। দেখি তো ( বলে পরদা সরাতে লাগলো তখনি পেছন থেকে পরশ বলে উঠলো)
পরশ:খবদার ভুলোও ওই ছবিতে হাত লাগাবে না।
অথৈ: কে বলে পেছন ফিরে তাকাতেই( যেনো অথৈর মাথায় বাজ পড়লো।) কি দেখছি আমি নিশ্চায় আমার চোখের জ্যাতি কমে গেছে। আসলে কয়দিন ধরে ছোটো মাছ খাইনি তো এর জন্য। তাছাড়া ওই পঁচা কুমড়ো আঙ্কেল এখানে কি করে আসবে।
পরশ: তুমি এখানে( রাগী গলায়)
অথৈ: ওমা এতো কথা বলছে। একটু ভালো করে দেখি ( বলে পরশের কাছে গেলো) আমি সত্যি দেখছি না ভুত দেখছি।লা ইলাহা ইল্লাহু মোহাম্মদুর রাসুলল্লাহ (বলে বুকে ফু নিলো) অথৈ তুই নিচেকে একটা চিমটে কেটে দেখ ( বলে চিমটে কাটলো) না আমি তো ঠিক আছে।কিন্তু ওনি কি করে এখানে আসবে। আমার মাথা ঘুরছে কেনো। আমি ঝাপসা দেখছি। তাহলে কি আমি স্বর্গে যাচ্ছি না নরকে যাচ্ছি ( বলতে অথৈ নিচে পড়ে গেলো আর জ্ঞান হারিয়ে ফেরলো)
পরশ: এই মেয়েটা এখানে কি করে আসলে। তারমানে আমি যাকে বিয়ে। হায় খোদা শেষমেষ আমার কপালে জুটলো। ( বলে ওয়াশ রুম থেকে একবালতি পানি এনে অথৈর মুখে ঢেলে দিলো)………………..(চলবে)